
মানুষের কল্যাণে কাজ করতে এবং নীতি-আদর্শ নিয়ে সৎভাবে জীবনযাপন করতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, টাকা বানানো একটি রোগ, এটা অসুস্থতা। একবার এ রোগে ধরলে শুধু টাকা বানাতেই ইচ্ছা করে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন। রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান চলমান থাকবে। জনগণের অর্থ ভোগ ও বিলাসের জন্য ব্যয় করা হবে না। জনগণের অর্থ তাদের জন্যই ব্যয় করা হবে। কেউ বিলাসবহুল জীবনযাপন করবে, আর সৎ মানুষ সরল জীবনযাপন করে কষ্ট পাবে— এটা হতে দেওয়া যাবে না।
শেখ হাসিনা বলেন, অবৈধ টাকায় চললে ছেলে-মেয়ে বিপথে চলে যাবে। যারা সৎ পথে থাকেন, তারা সমাজে সম্মান পান। অসৎ মানুষকে তার অনুপস্থিতিতে গালি দেওয়া হয়। জনগণের ভাগ্য ও জীবনমান উন্নত করাই জাতির পিতার জীবনের আদর্শ ছিল। জনগণকে কী দিতে পেরেছি, সেটাই আগে চিন্তা করতে হবে।
বিএনপি-জামায়াত সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাচালানের মামলায় খালেদা জিয়ার ছেলে সাজা পেয়েছে। ওরা এতিমের টাকাও চুরি করেছে। বিএনপি-জামায়াত আমলে একযোগে ৬৩টি জেলায় বোমা হামলা হয়েছে। বাংলাদেশকে ওরা সন্ত্রাসী-জঙ্গিদের দেশ ও দুর্নীতির দেশে পরিণত করেছিল।
সরকার প্রধান বলেন, আওয়ামী লীগ নেতারা বিএনপির আমলে ভয়ে ঘরে থাকতে পারেননি। খালেদা জিয়ার নির্দেশে সারা দেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের ওপর অত্যাচার করা হয়। বাংলাদেশ যেন উঠে দাঁড়াতে না পারে, বিএনপি সে চেষ্টা করেছিল। সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকায় ঢাকার চেহারা বদলে গেছে।
এর আগে সকাল ১১টার দিকে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সম্মেলন শান্তির প্রতীক পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে উদ্বোধন করেন শেখ হাসিনা। পরে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে সম্মেলনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু করা হয়।
বিকাল ৩টা থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্মেলনের দ্বিতীয় পর্ব কাউন্সিল অধিবেশন শুরু হয়। দ্বিতীয় অধিবেশনে দলটির সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দুই মহানগরের নতুন নেতৃত্ব অর্থাৎ সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। মহানগরীর সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়ন কমিটি মিলিয়ে প্রায় দুই হাজার কাউন্সিলর এবং প্রায় তিন হাজার ডেলিগেট সম্মেলনে যোগ দিয়েছেন।
সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসনাত। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ।
আই.এ/

