
এবছর দেশের সকল ধারার শীর্ষস্থানীয় ৫৮ জন হক্কানী আলেম সরকারী তত্ত্বাবধানে হজ্ব করেছেন। বিষয়টি নিয়ে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহর একটি ভিডিও বার্তা ভাইরাল হয়েছে। বক্তব্যে আলেমদের হেয় করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
এ বিষয়ে আহলে সুন্নাত জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা আল্লামা আবুল কাসেম মোহাম্মদ ফজলুল হক গণমাধ্যমকে বলেন, ধর্মপ্রতিমন্ত্রী গত রাতেই আমাকে ফোন করেছিলেন, এজন্য তিনি দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রতিমন্ত্রী বলেছেন, ভিডিওতে জামাত শিবিরকে উদ্দেশ্য করে এসব কথা বলেছেন তিনি। আগে অবশ্য তিনি এই বক্তব্যের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহকে দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন এই বক্তব্য দ্রুত প্রত্যাহারের জন্য।
ভাইরাল ভিডিওর বিষয়টি মন্ত্রীর নজরে আসলে তিনি দুঃখ প্রকাশ করে একটি বিবৃতি দিয়েছেন। ধর্ম প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট শেখ মো. আব্দুল্লাহর কানে সুন্নী আলেম ওলামাদের বিক্ষোভের খবরও পৌছেছে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র তথ্য কর্মকর্তা আনোয়ার হোসাইন স্বাক্ষরিত ওই বিবৃতি রোববার (১০ নভেম্বর) সকালে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।
বিবৃতিতে ধর্ম প্রতিমন্ত্রী শেখ মো. আব্দুল্লাহ বলেন, ‘এ বছর আমরা ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশের ইতিহাসে সর্বপ্রথম দেশের সকল ধারার শীর্ষস্থানীয় ৫৮ জন হাক্কানী ওলামায়ে কেরামের সমন্বয়ে হজ ওলামা মাশায়েখ টিম গঠন করে পবিত্র হজে প্রেরণ করি। আমরা অত্যন্ত আন্তরিকতা এবং সম্মানের সাথে তাঁদের জন্য পবিত্র মক্কা, মিনা, আরাফা এবং মদিনা শরিফে আবাসন, পরিবহন, খাবারসহ হজের বিধি-বিধান পালনে যাবতীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করি।’
‘ওলামায়ে কেরামগণ পবিত্র হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরুর পূর্বে পবিত্র মক্কা শরীফে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে বাংলাদেশি হাজি সাহেবদের আবাসস্থলে গিয়ে সঠিকভাবে হজপালনে হজের বিধি-বিধানের উপর আলোচনা করেন। একইভাবে মিনা এবং আরফাতে অবস্থানকালে বিভিন্ন তাবুতে গিয়ে তারা বাংলাদেশি হাজি সাহেবদের পবিত্র হজের ইবাদতের বিষয়ে বয়ান করেন। বাংলাদশের সম্মানিত হাজিসাহেবগণ, ওলামায়ে কেরাম ও দেশ-বিদেশের বিভিন্ন শ্রেণি পেশার বাংলাদেশি নাগরিকগণ সরকারের এ উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন।’
‘সম্প্রতি দেশের ওলামা-মাশায়েখদের এক আলোচনা সভায় দেশের হাক্কানী ওলামায়ে কেরামগণের হজে প্রেরণের ব্যবস্থাপনা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়ে আমি স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির চক্রের প্রতি ইঙ্গিত করে বক্তব্য প্রদান করি। আলিয়া মাদ্রাসা কিংবা আহলে সুন্নাত ওয়াল জামাতের কোনো আলেমকে হেয় করে বক্তব্য প্রদান আমার উদ্দেশ্য ছিল না। মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল ধারার হাক্কানী ওলামায়ে কেরামের প্রতি আমার সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা ও সম্মান রয়েছে। তারপরও আমার বক্তব্যে কেউ আঘাত পেয়ে থাকলে অনিচ্ছাকৃত ভুলের জন্য আমি দুঃখ প্রকাশ করছি।’
দুদিন আগে মধ্যরাতে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর ডিভিওটি ভাইরাল হয়। তারপর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর উপর ক্ষুব্ধ হন আলিয়া মাদ্রাসার আলেম ওলামা, বিশেষ করে সুন্নী আলেম ওলামা ও শিক্ষার্থীরা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ক্ষুব্ধ মনোভাব প্রকাশের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কর্মসূচি ঘোষণা করেন তারা। শনিবার (৯ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ধর্ম প্রতিমন্ত্রীর বিরুদ্ধে ইসলামী ছাত্রসেনা মানববন্ধন করে।
ইসমাঈল আযহার/পাবলিক ভয়েস

