
নাজমুল হাসান, চবি: চট্টগ্রাম বিশ্ব বিদ্যালয়ের (চবি) ৩১ তম বার্ষিক সিনেট সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ শনিবার (২৭ জুলাই) বেলা ১১ টায় ড. এ আর মল্লিক ভবনে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার।
সভায় উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক, উন্নয়ন কার্যক্রমসহ বিভিন্ন দিক নিয়ে বক্তব্য উপস্থাপন করেন। পরে চবি. রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) জনাব কে এম নুর আহমদ ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের জন্য ৩৩৯ কোটি ১৮ লাখ টাকার বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। সিনেট সভায় সর্বসম্মতিক্রমে এ বাজেট অনুমোদিত হয়।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. শিরীণ আখতার তার বক্তব্যের শুরুতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি মহান একুশের ভাষা-শহীদ, শহীদ জাতীয় চারনেতা, মহান মুক্তিযুদ্ধে ৩০লাখ শহীদ, ‘৭৫ এ নির্মমভাবে শহীদ বঙ্গবন্ধু পরিবারের সদস্যবর্গের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে নির্যাতিত দু’লক্ষ জায়া-জননী-কন্যার প্রতি বিশেষ সম্মান প্রদর্শন করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন করেন ২১ আগস্ট বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলায় নির্মমভাবে শহীদ আইভি রহমানসহ শহীদদের এবং শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন মহিয়ষী নারী শহীদ জননী জাহানারা ইমামকে।
উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) তার ভাষণে তিনি বলেন, দেশের অন্যতম উচ্চ শিক্ষা-গবেষণা প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ চলমান রেখে বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, সম্পদের সুরক্ষা ও সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা এবং উচ্চ শিক্ষা ও গবেষণার উপযুক্ত পরিবেশ সমুন্নত রাখতে বর্তমান চবি প্রশাসন অঙ্গীকারাবদ্ধ।
ড. শিরীণ আখতার বলেন- চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান উন্নয়ন কর্মকা- পূর্বের ধারাবাহিকতায় চলমান থাকবে এবং এ উন্নয়ন কর্মকা-কে আরও গতিশীল করতে তার আন্তরিক প্রচেষ্ট অব্যহত রাখা, বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পরিচালনায় সর্বক্ষেত্রে সততা, ন্যায়-নিষ্ঠা ও ন্যায্যতার প্রশ্নকে আগ্রাধিকার দেয়া, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে কোন ধরণের নিপীড়নমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ থেকে বিরত থাকা এবং বাংলাদেশের সামগ্রিক উন্নয়নে বর্তমান আ.লীগ সরকারের গৃহীত কেন্দ্রীয় পলিসির সাথে সমন্বয় রেখে চতুর্থ শিল্পবিপ্লব, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ, দুর্নীতিকে জিরো টলারেন্স এবং টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার দর্শনকে সামনে রেখে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করা হবে।
তিনি আরও বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের চাহিদার তুলনায় বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন থেকে প্রাপ্ত বাজেট নিতান্তই অপ্রতুল। আমাদের সীমিত সম্পদ ও নানাবিধ সীমাবদ্ধতার মাঝেই সকল ক্ষেত্রে আমরা বিশেষ উন্নতির স্তরে পৌছাঁনোর পথে অবিরাম সংগ্রাম করে যাচ্ছি। তাই বিশ্ববিদ্যালয়কে আরও উন্নতির অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌছাঁতে দলমত নির্বিশেষে সকল মহলের সার্বিক সহযোগিতা প্রয়োজন। পরিশেষে মাননীয় উপাচার্য (দায়িত্বপ্রাপ্ত) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা-গবেষণার সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ অক্ষুন্ন রাখতে এবং বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালনায় সংশ্লিষ্ট সকলের আন্তরিক সহযোগিতা কামনা করেন।
উপাচার্যের ভাষণ ও বাজেটের ওপর প্রাণবন্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সিনেট সদস্য সাংসদ ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সাংসদ জনাব ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, সাংসদ জনাব ওয়াসিকা আয়েশা খান, সাংসদ জনাব নজরুল ইসলাম চৌধুরী, সাংসদ জনাব মাহফুজুর রহমান মিতা, সিনেট সদস্য চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনার জনাব আবদুল মান্নান, প্রফেসর ড. মুহাম্মদ শামসুদ্দিন, প্রফেসর ড. সুলতান আহমেদ, প্রফেসর ড. এম আবদুল গফুর, প্রফেসর মনসুর উদ্দিন আহমদ, ড. মোহাম্মদ মঞ্জুর-উল-আমিন চৌধুরী, প্রফেসর ড. মুস্তাফিজুর রহমান ছিদ্দিকী, প্রফেসর জমির উদ্দিন আহমদ, প্রফেসর বেনু কুমার দে, প্রফেসর ড. ফরিদ উদ্দিন আহামেদ, এডভোকেট মোহাম্মদ নুরুল আমিন, জনাব আমির হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, প্রফেসর ড. মো. মাহবুবুর রহমান, প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী ও জনাব এস এম ফজলুল হক।

