
ব্রিটিশ সরকার ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণ ও মুসলিম বিদ্বেষে সৃষ্ট বৈষম্য মোকাবিলায় একজন স্বাধীন বিশেষজ্ঞ নিয়োগ দিয়েছে। অ্যান্টি মুসলিম হেট্রেড ওয়ার্কি গ্রুপ এর উপ-প্রধান ইমাম কারি আসিম এই প্রক্রিয়ার নেতৃত্ব দেবেন। তার সঙ্গে আরেকজন পরামর্শক নিয়োগ দেওয়া হবে জানিয়েছে দেশটির আবাসন ও স্থানীয় প্রশাসন মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রী জেমস ব্রোকেনশায়ার বলেন, ইমাম আসিমের এই নিয়োগ আমাদের ইসলামোফোবিয়ার কার্যকরী সংজ্ঞা নির্ধারণের উদ্দেশ্যে আমাদের যাত্রার প্রথম পদক্ষেপ। মুসলিমরা যেন বিদ্বেষ, হত্যা বা বৈষম্যের শিকার না হয় সেটা নিশ্চিতে কাজ করে যাচ্ছে সরকার।চলতি বছর প্রথমদিকেই মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছিলো ইসলাম বিদ্বেষ রুখতে এবং ইসলামোফোবিয়ার একটি কার্যকরী সংজ্ঞা নির্ধারণে দুজন পরামর্শক নিয়োগ দেবে সরকার।
পরামর্শকরা মুসলিমবিদ্বেষ মোকাবিলায় কাজ করা অ্যান্টি-মুসলিম হেট্রেড ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে একযোগে কাজ করবেন। ব্রিটিশ রানী এলিজাবেথের কাজ থেকে মেম্বার অব দ্য মোস্ট এক্সিলেন্ট অর্ডার অব দ্য ব্রিটিশ এম্পায়ার’ (এমবিই) খেতাব পেয়েছেন ইমাম আসিম। বর্তমানে লিডস শহরের মক্কাহ মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
একইসঙ্গে তিনি একটি বৈশ্বিক আইনী সংস্থার পরিচালক এবং জাতীয় ইমাম পরিষদের প্রধান। ইমামসঅনলাইনের জেষ্ঠ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। আসিম বলেন, ব্রিটিশ মুসলিমদের রক্ষায় ভূমিকা রাখতে চান তিনি। তিনি বলেন, মুসলিম বিদ্বেষ মনোভাবের আশঙ্কাজনক বৃদ্ধিতে আসলে ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞা নির্ধারণ জরুরি হয়ে পড়েছে। আমি মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি গভীরভাবে এই বিষয়ে কাজ করার জন্য দায়বদ্ধ।
ইতোমধ্যেই এই সংজ্ঞা নির্ধারণের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন লেবার পার্টি ও লিবারের ডেমোক্রেটের মতো বিরোধী দলগুলো। সমর্থন দিয়েছে লন্ডন মেয়রের দফতরও। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসেব অনুযায়ী ৫২ শতাংশ হেট ক্রাইম বা বিদ্বেষমূলক হামলাই হয়েছে মুসলিমদের বিরুদ্ধে। এপিপিজি’র প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞা না থাকায় এটি মোকাবিলায় কঠিন হয়ে পড়ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে মুসলিম সম্প্রদায় এবং পুরো ব্রিটেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞার উদ্দেশ্য কখনোই বাকস্বাধীনতার হরণ কিংবা ইসলামকে ধর্ম হিসেবে সমালোচনা করা ছিলো না। কোনও উন্মুক্ত সমাজেই ধর্ম সমালোচনার ঊর্ধ্বে নয়। আমরাও মনে করি না ইসলামোফোবিয়ার সংজ্ঞার কারণে ইসলামের বিরুদ্ধে গঠনমূলক সমালোচনা বন্ধ হয়ে যাবে।
যুক্তরাজ্য সরকারের এক মুখপাত্র জানান, এপিপিজির সংজ্ঞা সবাই গ্রহণ করেনি। এটাতে আরও কাজ করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ মুসলিম কিংবা অন্য কোনও সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
আইএ/পাবলিক ভয়েস

