কওমী মাদরাসার প্রশ্নপত্র ফাঁস, মিডিয়ার হাতে অস্ত্র তুলে দেবেন না: লাবিব আবদুল্লাহ

প্রকাশিত: ৯:৪৮ পূর্বাহ্ণ, এপ্রিল ১৪, ২০১৯

 ইসমাঈল আযহার:

পাবলিক ভয়েস কওমী মাদরাসার কেন্দ্রীয় পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস বিষয়ে একটি ভিডিওবার্তায় কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন কওমী মাদরাসা অঙ্গনে বিশেষ পরিচিত ব্যক্তি মাদরাসা ইবনে খালদুনের প্রধান আরবি ভাষাবীদ মাও. লাবিব আবদুল্লাহ।

পহেলা বৈশাখের নির্মল সকালে আপলোড দেয়া ভিডিওতে তিনি এসব নিয়ে দীর্ঘ আলাপ করেছেন। তার ভিডিটির অনুলিখন এখানে দেওয়া হলো। ১৪২৬ বাংলাব্দে সবাইকে শুভেচ্ছা। আমি একজন মুসলমান হিসেবে ফরজ নামাজ জামাতের সঙ্গেই পড়েছি। মুয়াজ্জিন বলেছেন ‘ হাইয়া আলাল ফালাহ’’ কল্যাণের দিকে আসো। আজ আমি কল্যাণ দিয়েই দিনটি শুরু করছি।

আরবি সনের সাথে বাংলা সনের সাথে চমৎকার একটা মিল রয়েছে। বাংলা সনের প্রবর্তক সম্রাট আকবার। আকবারের এবিষয়টা সবাই সমর্থন করে তবে তার দ্বীনে ইলাহি মুসলামানরা কেউ সমর্থন করে না। করা উচিৎও না। আজ সকালে এভাবেই কথা শুরু করেছেন মাওলানা লাবিব আবদুল্লাহ।

একসময় তিনি বেফাকের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত ছিলেন এবং এখনও আছেন। বর্তমানে তিনি ওয়াজের পাশাপাশি একটি মসজিদের দায়িত্বও পালন করছেন। কথা বলছিলেন বেফাক ও হাইয়াতুল উলিয়ার প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে।

লাবিব আব্দুল্লাহ বলেন, মাদরাসা দু’ধরণের- আলিয়া ও কওমিয়া। আলিয়া মাদরাসায় অনেক আগেই প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে এবং হয়ে আসছে। জনগণ এটাকে ভাল ভাবে নেয়নি। এরপর আমরা দেখি একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁস হচ্ছে স্কুল কলেজে। একটা সময় পর এখন এটাকে মানুষ স্বাভাবিক ভাবেই নিচ্ছেন। এই খেয়ানতটাকে কেউ কিছু মনে করছেন না।

লাবিব আবদুল্লাহ হাদিসের উদ্ধৃতি দিয়ে বলেন, রাসুল স. বলেন, ‘মান গাশ্যা ফা‘লাইছা মিন্না’ যে ব্যক্তি আমানতের খেয়ানত করে সে আমার উম্মতই না ।‘ স্কুল কলেজের পাশাপাশি কওমি মাদরাসায়ও ইদানীং প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা প্রকাশ হয়েছে। আসলে একটা গোষ্টি কওমি মাদরাসার হাজার বছরের ইতিহাস কলঙ্ক করার জন্য এমন কাজ করেছে।কওমি মাদরাসার সুনাম নষ্ট করার জন্য একটা দল কাজ করছে। এটা তাদেরই কাজ।

তিনি বেফাকের সিদ্ধান্তকে সাধুবাদ জানিয়ে বলেন, এবিষয়ে বেফাক ও হাইয়াতুল উলয়ার কর্তৃপক্ষরা যথাযথ সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তারা অন্যায়ের সাথে আপোস করেননি। এর আগে বক্তাদের নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আমাদের বক্তাদের নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করা হচ্ছে।

তেমনিভাবে আপনারা যারা দারুল উলুম দেওবন্দের স্বকীয়তা বজায় রাখতে চান, হুজুরদের বিরুদ্ধে, দেওবন্দের বিরুদ্ধে কিছু বললে বা লেখলে আপনাদের যাদের খারাপ লাগে তাদের বলব, আপনারা মিডিয়ার হাতে অস্ত্র তুলে দিবেন না। হ্যা আপনারা এ ব্যপারে আন্দলোন করবেন তবে নীতিগতভাবে। আপনারা প্রেসক্লাবে যান, আন্দোলন করেন, আপনাদের একটা ছবি দরকার, একটি ভিডিও দরকার। এরপর আপনাদের নিয়ে আলোচনা হবে টকশো হবে, কলাম লিখা হবে।তখন এটির ভালো কোনো সিদ্ধান্ত হবে।

তিনি বলেন, আমি সমস্ত পরীক্ষা বাতিল করার পক্ষে না। যেগুলো আগে হয়েছে সেগুলো বাতিল না করলেই ভাল হতো। আমি ছাত্রদের পক্ষে এ কথাও বলেছেন তিনি। কওমী সন্তান লাবিব আব্দুল্লাহ আরও বলেন, এখন অনেকেই কেন জানি কওমি মাদরাসায় পরীক্ষা দিতে চান। হঠাৎ করে একটা পরীক্ষা দিয়ে অনেকেই মাওলানা হতে চান।

মওলানা এটা এক বছর পরীক্ষা দিলে হবে না। এজন্য আপনাকে দীর্ঘ ১২টি বছর মেহনত করতে হবে। কষ্ট করে পড়তে হবে। হঠাত দাওরা পাশ করে মাওলানা হওয়ার কোনো দরাকার নেই। দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করুন।

তিনি বক্তব্যের শেষে সকল মাদরসার ছাত্রদের মাদরাসায় অবস্থায় নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এবং আমাদের বড়দের ফায়সালা মেনে নেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন।

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন