জিহাদি কোন দলে যোগ দিলে জার্মানিদের নাগরিকত্ব বাতিল

প্রকাশিত: ১২:২০ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ৪, ২০১৯

দ্বৈত নাগরিকত্ব আছে এমন জার্মানিরা জিহাদি কোন দলে যোগ দিলে তাদের নাগরিকত্ব বাতিল করতে পারবে জার্মান সরকার৷ গতকাল বুধবার নতুন এই আইনের অনুমোদন দিয়েছে জার্মান মন্ত্রিসভা৷

‘যারা বিদেশে গেছে এবং কোনো দল বা গোষ্ঠীর হয়ে সশস্ত্র যুদ্ধে অংশ নিয়েছে তারা জার্মানি এবং তার মূল্যবোধকেও বিসর্জন দিয়েছে বলে এক বিবৃতিতে এমন অভিমত দিয়েছে দেশটির সরকার৷

প্রাপ্তবয়স্ক ও আরো একটি নাগরিকত্ব রয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে আইনটি প্রযোজ্য হবে৷ সংখ্যালঘুদের উপর এর কোনো প্রভাব পড়বে না৷ অতীতের ঘটনার ক্ষেত্রেও এটি অকার্যকর হবে৷

বর্তমানে ইরাকে মার্কিন সমর্থনপ্রাপ্ত সিরীয় কুর্দি বাহিনী ও সরকারের হাতে আইএস-এ যোগ দেয়া অনেক জার্মান নাগরিক আটক রয়েছে৷ তাদের নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই৷

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র সিরীয় কুর্দি বাহিনী আটককৃত কয়েক হাজার আইএস যোদ্ধাদের ফেরত নিতে বিভিন্ন দেশের উপর চাপ প্রয়োগ করে যাচ্ছে৷ এসব বিদেশি যোদ্ধাদের বিষয়ে কী ধরণের পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা নিয়ে ইউরোপের দেশগুলোর মধ্যে বিতর্ক রয়েছে৷

জার্মান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের হিসাবে ২০০৩ সাল থেকে দেশটির প্রায় ১,০০০ নাগরিক সিরিয়া ও ইরাকের জিহাদি গোষ্ঠীগুলোতে যোগ দিয়েছে৷ তাদের এক তৃতীয়াংশ এরইমধ্যে জার্মানিতে ফিরে এসেছে৷ যাদের অনেককে বিচার অথবা পুনর্বাসন প্রক্রিয়ার আওতায় আনা হয়েছে৷ বিলটি শুধু আইএস এর জন্য নয়, এ ধরণের সব গোষ্ঠীর জন্যই প্রযোজ্য হবে।

‘আইন অনুযায়ী একটি জিহাদি সংগঠন আধা সামরিক সশস্ত্র সংগঠন হিসেবে বিবেচিত হবে, যারা আন্তর্জাতিক আইনের বরখেলাপ ও নতুন রাষ্ট্রকাঠামো প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে একটি বিদেশি রাষ্ট্রের বিদ্যমান কাঠামো নির্মূল করার পরিকল্পনা করেছে,’৷

সে অনুযায়ী তুরস্কের সরকারের বিরুদ্ধে ৩ যুগ ধরে লড়াইরত কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টিতে যোগ দেয়া জার্মান দ্বৈত নাগরিকরাও তাদের নাগরিকত্ব হারাবে৷ বিশ্বের প্রবাসী কুর্দি জনগোষ্ঠীর সবচেয়ে বড় অংশটিই জার্মানিতে বসবাস করে আসছে, যাদের অনেকেই কুর্দিস্তান ওয়ার্কার্স পার্টির সাথে যুক্ত৷

গত বছর জার্মানির ক্ষমতাসীন জোট সরকারের রাজনৈতিক দলগুলো নাগরিকত্ব আইন সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দেয়৷ কিন্তু বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দেশটির স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রীর মতদ্বন্দের কারণে এর অনুমোদনের প্রক্রিয়া ধীরগতিতে এগোয়৷ এই দেরি নিয়ে সরকারের সমালোচনাও হয়৷ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আশা নতুন আইন ভবিষ্যতের প্রতিরক্ষামূলক ব্যবস্থা হিসেবে কাজ করবে৷

আইএ

মন্তব্য করুন