দেশজুড়ে হাড় কাঁপুনি ঠাণ্ডা

প্রকাশিত: ১০:০৩ পূর্বাহ্ণ, ডিসেম্বর ২০, ২০১৯
ছবি: সংগৃহিত

দেশের বেশ কিছু অঞ্চলের ওপর শৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। ফলে সারাদেশেই তাপমাত্রা কমেছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশি ‘ঠাণ্ডা’ হচ্ছে রাজধানী ঢাকা। টানা তিনদিন ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে। প্রচণ্ড ঠাণ্ডার পাশাপাশি কুয়াশার কারণে সূর্যের দেখা মেলেনি। ফলে ব্যাহত হচ্ছে স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। ঠাণ্ডায় বিভিন্ন এলাকায় শীতজনিত রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। শিশুদের ঠাণ্ডাজনিত সমস্যায় সবচেয়ে বেশি ভুগতে দেখা যাচ্ছে। আবহাওয়াবিদরা বলছেন, রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য কম হলে শীত বেশি অনুভূত হয়।

আর কয়েকদিন ধরে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম ঢাকাতেই। আবহাওয়াবিদ আরিফ হোসেন বলেন, ১৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসেও হাড় কাঁপুনি ঠাণ্ডা পড়ে। আবার ৯-১০ ডিগ্রিতেও তেমন ঠাণ্ডা অনুভূত হয় না। তাপমাত্রা কমা বা বাড়ার সঙ্গে ঠাণ্ডা বা গরম অনভূতি কমা বা বাড়ার সম্পর্ক নেই। রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য তথা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য যত কমে ঠাণ্ডা অনুভূতি তত বাড়বে।

দু’দিন ধরে ঢাকায় রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম। আরও কয়েকটি স্থানে ঢাকার কাছাকাছি অবস্থা বিরাজ করছে। আবহাওয়া অধিদফতর এক পূর্বাভাসে বলছে, বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা থেকে আগের ২৪ ঘণ্টায় সবচেয়ে কম তাপমাত্রা ছিল চুয়াডাঙ্গায়- ৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ মাঝারি ধরনের শৈত প্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।

এখানে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা অর্থাৎ দিনের তাপমাত্রা ছিল ২০ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য এখানে ১২ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকায় রাতে ছিল ১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস ও দিনে ছিল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৬ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ রাজধানীতে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য নেমে এসেছে ৩ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) ঢাকায় এটা ৫ ডিগ্রির ঘরে নেমে এসেছিল।

তার আগে মঙ্গলবারও দেশের মধ্যে সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য সবচেয়ে কম ছিল ঢাকাতেই। ফলে টানা তিনদিন ধরে ব্যাপক কষ্টের মধ্যে পড়তে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। ঢাকার পরের অবস্থানে রয়েছে ময়মনসিংহ ও নেত্রকোনা। ময়মনসিংহে রাত ও দিনের তাপামাত্রার পার্থক্য কমে নেমে এসেছে ৩ দশমিক ৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। আর নেত্রকোনায় নেমে এসেছে ৪ ডিগ্রিতে।

উত্তরবঙ্গে ও উত্তর পশ্চিমাঞ্চলে শৈত প্রবাহ বয়ে গেলেও ঢাকার চেয়ে ঠাণ্ডা পড়ছে কম। এসব অঞ্চলে সবচেয়ে বেশি ঠাণ্ডা পড়ছে বা শীত অনুভূত হচ্ছে রংপুরে। সেখানে রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য ৪ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আবহাওয়া অধিদফতর বলছে, উত্তরের কনকনে হিম বাতাসে দিনের তাপমাত্রা কমিয়ে দিচ্ছে। এ অবস্থা আগামী রোববার পর্যন্ত বিরাজ করবে। তবে ঢাকা পরিস্থিতি শনিবার (২১ ডিসেম্বর) নাগাদ উন্নতি হতে পারে।

আর তাপমাত্রা বাড়বে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি। শুক্রবার (২০ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত দেওয়া এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, পাবনা, নওগাঁ, কুড়িগ্রাম, নীলফামারী, যশোর ও চুয়াডাঙ্গা অঞ্চল সমূহের উপর দিয়ে মৃদু শৈতপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে; তা অব্যাহত ও বিস্তার লাভ করতে পারে। আর মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত কোথাও কোথাও মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশা পড়তে পারে।

আই.এ/

মন্তব্য করুন