
ইসমাঈল আযহার: সিনিয়র রিপোর্টার
ইকরামুল মুসলিমীন ফাউন্ডেশ-এর উদ্যোগে সামাজিক সেবায় ওলামায়ে কেরামের অবদান ও শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠি হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩১ অক্টোবর) শনির আখড়া দনিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ মাঠে এ সভার আয়োজন করা হয়।
ব্যাতিক্রমধর্মী এ আলোচনা সভায় বক্তব্য দিতে গিয়ে বিশিষ্ট আলেম ও স্বপ্নচারী লেখক মাওলানা যাইনুল আবিদীন বলেন, বাংলাদেশে বহির্বিশ্ব থেকে যে সাহায্য আসে তার অধিকাংশই সৌদি আরব থেকে আসে। কিন্তু যখন বাংলাদেশেল বন্ধুদেশের নাম আসে তখন সৌদি আরবের নামটা তালিকায় খুঁজে পাওয়া যায় না। আমাদের মিডিয়াগুলো এই সত্যিটা প্রকাশ করার সাহস রাখে না। সৌদি আরব যে, আমার বন্ধুপ্রতিম দেশ এটা তারা শিকার করতে রাজি না।
আক্রান্ত মানুষের সেবায় দাতা দেশগুলোর কে কতটুকু দান করেছে সে বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় একটি দৈনিক জ্যামিতিক আকারে একটি ক্রোড়পত্র প্রকাশ করেছিল। সেখানে দেখা গেছে, সমস্ত দাতা দেশগুলো মিলে বাংলাদেশকে যে অনুদান দিয়েছে একা সৌদি আরব দিয়েছে তার ৬৫ শতাংশ।
যাইনুল আবিদীন বলেন, আলেম-ওলামাদের সামাজিক কাজগুলো সহ মুসলিম বিশ্বের সামাজিক কাজগুলো তাদের চোখেপড়ে না। ঘুমন্ত মানুষকে জাগানো যায় না। এরা অন্ধ। তবে এমন অন্ধ যে, চোখ আছে। আমরা চাইলে তাদের দেখাতে পারি। চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখাতে পারি।
কওমি মাদরাসা পড়ুয়াদের অবদান নিয়ে কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, নেত্রকোণায় বড় রকমের ঝড় হয়েছিল। সেই ঝড়ে প্রায় কয়েক গ্রামের সমস্ত ঘরবাড়ি ভেঙ্গে গুঁড়িয়ে গিয়েছিল। বাঁশঝাড় পর্যন্ত উপড়ে গিয়েছিল। শুধু তাই নয়, বাঁশের কুঞ্চি অনেক পুরোনো গাছের ভেতর ঢুকে গিয়েছিল। এমন কঠিক আর ভয়াবহ ঝড় হয়েছিল। কিন্তু ঝড়ের তিন দিন পর সেই গ্রামে গিয়ে দেখা গেল সমস্ত ঘরবাড়ি ঠিক আগের মতো। বোঝার উপায় নেই যে, এই গ্রামে ঝড় হয়েছে। তাদের জিজ্ঞেস করা হলে তারা জানালো, আশপাশের সমস্ত গ্রামের মাদরাসা তিন দিনের জন্য ছুটি দিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা এসে আমাদের ঘরবাড়ি ঠিক করে দিয়ে গেছে। সেসময়ও মিডিয়াতে এই খবর আসেনি। এটা তাদের মেরুদন্ডের দুর্বলতা, অথবা তাদের সাহস নেই সত্য প্রকাশ করার।
কওমি মাদরাসা পড়ুয়াদের শক্তি এখন সবদিক থেকে আগের তুলনায় বেশি উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগে একটা সময় আমরা কলম ধরতে জানতাম না, লেখালেখির ময়দানে আমাদের সৈনিক ছিল না। কিন্তু বর্তমানে এইদিকে আলেম সমাজ অনেক ধাবিত হয়েছে। তারা অনেক এগিয়েছে। এখন আমরা অনেক শক্তিশালী। আমাদের ব্যাপারে আর মানুষকে বোকা বানানো যাবে না।
এ সভায় প্রধান মেহমান হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, যাত্রাবাড়ি জামিয়া মাদানিয়া মাদরাসার মহাপরিচালক মুহিউসসুন্নাহ আল্লামা মাহমুদুল হাসান। এবং প্রধান অতিথি ছিলেন, দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার সহকারী পরিচালক আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন দেশ বরেণ্য আলেম, লেখক, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক, গবেষক, সমাজকর্মী, সংগঠকগণ।
আইএ/পাবলিক ভয়েস

