গরিবের হজ্ব

প্রকাশিত: ১১:১৭ পূর্বাহ্ণ, জুলাই ১৯, ২০১৯

মুফতী ইমরান হোসাইন

সম্মানিত পাঠকবৃন্দ, আরবী মাসের জিলক্বদ মাস চলতেছে। এই মাসকে হজ্বের মাস বলা হয়, কারণ রমযান মাস থেকে হজ্বের প্রস্ততি শুরু হয়েছে এবং এই মাসে হজ্বেরর প্রস্ততি শেষ হবে। আর এর পর জিলহজ্ব মাসে হজ্ব শুরু হয়ে যাবে। সারা দুনিয়াতেই এখন হজ্বের প্রস্ততি চলছে কারণ ইবরাহীম আ. যে ডাক দিয়েছিলেন তার আওয়াজ সারা পৃথিবীতে পৌঁছে গিয়েছিল। আল্লাহ তাআলা  হুকুম করেছিলেন, ‘মানুষের মাঝে হজ্বের ঘোষনা করে দাও ওরা তোমার কাছে আসবে পায়ে হেটে আর সবরকম ক্ষীণকায় উঠের পীঠে। ওরা আসবে দূর দূরান্ত পথ অতিক্রম করে। (সূরা ২২ হজ্ব, আয়াতাংশ ২৭)।

আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, ‘আমি তোমাদের যে রিজিক দিয়েছি- তা থেকে ব্যয় করো মৃত্যু আসার পূর্বে। অন্যথায় মৃত্যু আসলে সে বলবে, হে আমার রব আমাকে আরও কিছু কালের জন্যে অবকাশ দিলে আমি ছদকা (বা জাকাত /হজ্ব )করতাম এবং নেকারদের অন্তর্ভূক্ত হতাম’।

রাসুল সা. এরশাদ করেন, ‘যার হজ্ব ফরয হয়েছে অথচ সে হজ্ব না করে মারা গেছে তাহলে তার উচিৎ সে ইহুদী হয়ে মরুক। আর যদি চায় সে খৃষ্টান হয়ে মরুক’ (মুসলিম শরিফ)।

আল্লাহ তায়ালা এরশাদ করেন, মানুষের মধ্যে যার সেখানে যাওয়ার সামর্থ্য আছে,আল্লাহর উদ্দেশ্যে ঐ ঘরের হজ্ব করা তার উচৎি, (সুরা ৩ আলে ইমরান ৯৭ আয়াতাংশ)। আর যাদের হজ্ব করতে যাওয়ার নেসাব পরিমাণ সম্পদ হয়নি তাদের জন্য রয়েছে কিছু আমল। সেই আমল করলে হজ্বের সওয়াব ও বরকত হাসিল করতে পারবে।

১। গরীব মানুষের হজের ব্যবস্তা হলো ফজরের নামায আদায় করার পর কোনো দুনিয়াবী কথা-বার্তা না বলে নামাজের জায়াগায় বসে থাকবে এবং শুধু জিকির আজকার বা কোরআন তেলাওয়াত করতে থাকবে। অতঃপর যখন সূর্য উঠে রোদ ছড়িয়ে পড়বে তখন দুই রাকাত বা চার রাকাত নফল নামায পরবে। হাদীস শরিফে এই নামাযের অনেক ফযিলত বয়ান করা হয়েছে।

বলা হয়েছে যে, এই নামাযে এক হজ্ব ও এক ওমরা করার পরিমান সওয়াব পাওয়া যায়। সুতরাং এই নামাযকে গরীবের হজ্ব বলা হয়। কারণ গরিব মানুষ টাকা পয়সা খরচ করে কাবা ঘরে যেতে পারে না। তাই গরিবদেরকে আল্লাহ পাক এমন সুযোগ দিয়েছেন যে তার বাড়িতে থেকেই হজ্বের সওয়াব ও বরকত হাছেল করতে পারে (বেহেশতী জেওর)।

২। গরিবের হজ্বের আরেকটি ব্যবস্থা হলো, মা বাবার দিকে শ্রদ্ধা ভক্তি ও ভালোবাসা নিয়ে তাকাবে। কারণ মা বাবার প্রতি যে ব্যক্তি মহব্বতের সাথে তাকাবে সে একটি হজ্বের সওয়াব পায়। (হাদীস)

৩। যে গরীব টাকার অভাবে হজ্ব করতে পারে না। কিন্তু মৃত্যু পযন্ত এই কামনা ছিলো যে, যদি হজ্ব ফরয হওয়ার মত টাকা হয় তবে সঙ্গে সঙ্গে হজ্ব করবো। এইরুপ গরীব ব্যক্তি হজ্ব না করে ও হাজ্বিদের মতো হজ্ব আদায়ের সওয়াব পাবে। আল্লাহ যেন আমাদেরকে হজ্ব করার মতো তাওফিক দান করেন। আর যত দিন পর্যন্ত হজ্ব না করতে পারি ততদিন যেন এই আমলগুলি সারা জীবন করতে পারি। আমিন।

/এসএস

মন্তব্য করুন