পবিত্র রমযান হোক কুরআন তেলাওয়াতে আলোকিত

প্রকাশিত: ৩:২০ অপরাহ্ণ, মে ১৬, ২০১৯

চলছে পবিত্র মাহে রমযান। ইতোমধ্যে আমাদের থেকে চলে গেলো ১০টি রোজা। অর্থাৎ- রহমতের দশ দিন শেষ হওয়ে গেল। শুরু হল মাগফিরাত ও নাজাতের দিন। পূণ্যময় এই রমযান মাস মুমিনের জন্যে আল্লাহর পক্ষ থেকে বড় নেয়ামত। এই মাস,কুরআন নাজিলের মাস। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘রমযান মাস এমন মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে।’ (সূরা বাক‍ারা : ১৮৫)

এ জন্যে রমযান মাসের নফল বা ঐচ্ছিক ইবাদতের মধ্যে কুরআনে কারীম তেলাওয়াত অন্যতম। প্রতি বছর রমযান মাসে হজরত জিবরাইল (আ.) হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন এবং রাসূলুল্লাহ (সা.) হজরত জিবরাইল আলাইহিস সালামকে পূর্ণ কোরআন শোনাতেন।

আল্লাহর রাসূলের জীবনের শেষ রমযানে দু’বার পুরো কোরআন শুনিয়েছিলেন। এ কারণে প্রত্যেক মুসলিমের উচিত রমযানে কমপক্ষে একবার পুরো কোরআন তেলাওয়াত করা।
ইসলামের ইতিহাসে সকল যুগের নেককারেরা রমযান মাসে রোজার পর যে আমলটির প্রতি সবচে’ বেশি গুরুত্বারোপ করতেন, সেটা হলো- কুরআনে কারীম তেলাওয়াত।

হাদীস শাস্ত্রের প্রাণপুরুষ ইমাম যুহরি (রহ.) রমযান মাস এলে বলতেন,এটা হলো কুরআন তেলাওয়াত ও খাদ্যদানের মাস। প্রখ্যাত তাবেঈ সুফিয়ান সাওরি (রহ.) রমযান এলে অন্যসব নফল আমল বাদ দিয়ে কুরআন তেলাওয়াতে মশগুল হয়ে যেতেন।
অামাদের মনে রাখতে হবে যে,তাড়াহুড়ো করে কিংবা না বুঝে অধিক পরিমাণে কুরআন তেলাওয়াত করার চেয়ে শুদ্ধ ও সঠিকভাবে অর্থ ও মর্ম অনুধাবন করে অল্প তেলাওয়াত করা বেশি উত্তম।

আল্লামা ইবনুল কাইয়িম (রহ.) বলেন, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসঊদ ও আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.)-এর মতে, ‘তারতিলের সঙ্গে ও বুঝে স্বল্প পরিমাণ কুরআন তেলাওয়াত করা, তাড়াহুড়ো করে অধিক পরিমাণ তেলাওয়াতের চেয়ে উত্তম।’
কুরআন নাজিলের উদ্দেশ্য হলো- মানবজাতির পথনির্দেশ করা। আর না বুঝে কেবল পাঠ করলে (পাঠের সওয়াব প্রতি হরফের বিনিময়ে ১০ নেকি অর্জিত হলেও) মূল উদ্দেশ্য সাধন হবে না।

তাই কুরআন বুঝে পড়ার অভ্যাস করা উচিত। বোখারি ও মুসলিমে বর্ণিত আছে, হজরত হুযাইফা ইবনুল ইয়ামান (রা.) হজরত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের কুরআন তেলাওয়াতের বর্ণনা দিতে গিয়ে বলেন, একবার আমি তার সঙ্গে রাতে সালাত আদায় করেছি। তিনি খুবই ধীরস্থীরতার সঙ্গে কুরআন তেলাওয়াত করলেন এবং তাসবিহের আয়াত এলে তাসবিহ, কোনো নেয়ামতের আলোচনা এলে তা প্রার্থনা এবং কোনো আজাবের আয়াত এলে তা থেকে পানাহ চাইতেন।

মাহে রমযান আল-কুরআন নাজিলের মাস হওয়ায় এ সময় পবিত্র কুরআন তিলাওয়াতের সওয়াব অপরিসীম। এ জন্য মানবজাতির হেদায়েতের উদ্দেশ্যে অবতীর্ণ ঐশীগ্রন্থ আল-কুরআন তিলাওয়াত করা, এর মর্ম হৃদয়ঙ্গম করা এবং তদনুসারে নেক আমল করা প্রত্যেক রোজাদার মুসলমানের অবশ্য কর্তব্য। তাই রমযান মাসকে রোজাদারেরা বিশুদ্ধ তেলাওয়াতের মাস হিসেবে গ্রহণ করতে পারেন। ঐচ্ছিক ইবাদতের মধ্যে পবিত্র কুরআন তিলাওয়াত সর্বোৎকৃষ্ট। আল্লাহ পাক অামাদেরকে
বেশি বেশি কুরআন তেলাওয়াত করার তৌফিক দান করুন।

মন্তব্য করুন