
নারায়ণগঞ্জের বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩৭ জনের মধ্যে মুয়াজ্জিন ও এক শিশুসহ মোট ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের পশ্চিম তল্লা এলাকায় বায়তুস সালাত জামে মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকে মসজিদে এসি বিস্ফোরণের ঘটনায় ১ শিশু ও মুয়াজ্জিনসহ ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। শনিবার, শেখ হাসিনা বার্ণ ইউনিটের এক চিকিৎসক এ তথ্য দেন। এছাড়াও দগ্ধ আরও ২৫ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন শেখ হাসিনা বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে।
এ ঘটনায় শোক জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
যে ২৩ জন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তারা হলেন ফরিদ (৫৫), শেখ ফরিদ (২১), মনির (৩০), মো. রাশেদ (৩০), নয়ন (২৭), আবুল বাশার মোল্লা (৫১), বাহার উদ্দিন (৫৫), শামীম হাসান (৪৫), মো. আলী মাস্টার (৫৫), মো. কেনান (২৪), নজরুল ইসলাম (৫০), রিফাত (১৮), আব্দুল আজিজ (৪০), মিজান (৪০), নাদিম (৪৫), হান্নান (৫০), আব্দুস সাত্তার (৪০), জুলহাস উদ্দিন (৩০), আমজাদ (৩৭), আব্দুল মালেক (ইমাম) (৬০), কাঞ্চন হাওলাদার (৫০), মামুন (২৩) এবং ইমরান (৩০)।
আর এ পর্যন্ত যে ১৪ জন মারা গেছেন, তারা হলেন মসজিদের মুয়াজ্জিন দেলোয়ার (৪৮), ইব্রাহিম (৪৩), জুনায়েদ (১৭), জামাল (৪০), কুদ্দুস ব্যাপারে (৭২), সাব্বির (২১), হুমায়ুন (৭০), মোস্তফা কামাল (৩৪), জুবায়ের (১৮), জয়নাল (৫০), মাইনুদ্দিন (১২), জুয়েল (৭) এবং মো. রাসেল (৩৪)। এরমধ্যে জুয়েল, দেলোয়ার ও ইব্রাহিম গতরাতে মারা গেছেন বলে জানিয়েছেন শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ হোসাইন ইমাম।
এ ঘটনায় এখনও যারা চিকিৎসাধীন আছেন তাদের প্রত্যেকের শ্বাসনালী পুড়ে যাওয়ায় প্রায় সবার অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানান ডা. সামন্ত লাল সেন। তিনি বলেন, গুরুতর দগ্ধ আরও ২৬ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দগ্ধদের সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তিনি গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।
এর আগে শুক্রবার রাতে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউট হাসপাতালের সহকারী অধ্যাপক হোসাইন ইমাম বলেন, এখানে আসা ৩৭ জন রোগীর সবার শরীরের ৩০ শতাংশ পুড়ে গেছে। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।
এছাড়া প্রত্যেকের সরকারি খরচে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে জানান তিনি। রাতেই তিনি জুয়েল নামে ৭ বছরের এক শিশুর মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন। শিশুটির শরীরের ৯০ শতাংশ পুড়ে গিয়েছিল।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লা থানার পশ্চিম তল্লার বাইতুছ সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় হঠাৎ বিকট শব্দে মসজিদের কাছের বৈদ্যুতিক ট্রানসফর্মারে বিস্ফোরণ ঘটে। সঙ্গে সঙ্গে মসজিদের ভেতরে এসির বিস্ফোরণও ঘটে। মুহূর্তে মসজিদের ভেতরে আগুন ধরে যায়।
আগুনের ফুলকি ছড়িয়ে পড়লে মুসল্লিরা দগ্ধ হতে থাকেন। দগ্ধ হন মসজিদের ইমাম মালেক আনসারী (৬৫) ও মুয়াজ্জিন দেলোয়ার হোসেন (৪৫), ফটো সাংবাদিক নাদিম হোসেনসহ (৪২) ৩৭ জন। আহতদের প্রথমে নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নেয়া হয়। পরে তাদের ঢাকা মেডিকেলের শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করানো হয়।
আই.এ/

