

আজ রোববার (৩ মে) মহামারী করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতরা ঢাকার বাইরের। একজন রংপুরের এবং একজন নারায়ণগঞ্জের। এরমধ্যে একজন শিশু-কিশোরের মাঝামাঝি বয়সের।
এছাড়া এদিন নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৬৬৫ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হলো ১৭৭ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৯৪৫৫ জন।
রোববার (৩ মে) দুপুরে সংবাদ বুলেটিনের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইইডিসিআর এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা।
তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় ৫৩৬৮টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে ৬৬৫ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৭৭০০৩টি।
করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা এই মূহুর্তে প্রায় আড়াই লাখ ছুইঁ ছুঁই । প্রতিমূহুর্ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ২ লক্ষ ৪৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে আজ রোববার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। এরমধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ৬৭ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা।
বাংলাদেশেও প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সেই সাথে পরীক্ষা যতো বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। বাড়ছে ঝুঁকি।
এদিকে করোনাভাইরাস রোগীদের চিকিৎসায় জরুরি প্রয়োজনে মার্কিন ওষুধ প্রশাসন গিলিয়েডের ওষুধ রেমডেসিভির ব্যবহারের অনুমোদন দিয়েছে। খবর এএফপি’র।
রেমডেসিভির কোভিড-১৯ ভাইরাসে গুরুতর আক্রান্ত রোগীদের দ্রুত সেরে উঠায় সহায়তা করে ট্রায়াল থেকে এমন প্রমাণ পাওয়ার কথা জানিয়েছেন মার্কিন মেডিকেল কর্মকর্তারা ।
মহামারি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রনে আনতে একটি সম্ভাব্য উপায় হিসেবে রেমডেসিভির ওষুধ ব্যবহারের পক্ষে জোরালোভাবে সমর্থন জানিয়ে আসছেন ট্রাম্প।
মহামারী করোনাভাইরাসে যখন বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। ভ্যাকসিন কিংবা রোগ প্রতিরোধমূলক প্রতিশেষধক ঔষধ আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত বিশ্বের ভবিষ্যত অন্ধকার দেখছেন সবাই। সেই মূহুর্তে এই সুখবরটি দিয়েছে মার্কিন ঔষধ বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ‘ইলিয়ড সায়েন্স’।
- ‘ইলিয়ড সায়েন্স’ এর পরীক্ষাগারে ‘রেমডেসিভির’ নামের একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আশার আলো দেখাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।
মার্কিন বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গিলিয়ড সায়েন্সেসের তৈরি এ ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষাতেও সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বুধবার এ খবর দিয়েছে মার্কিন ঔষধ গবেষণা প্রতিষ্ঠান গিলিয়ড সায়েন্স এর মুখপাত্র গিলিয়ড ডটকম।
সংশ্লিষ্ট খবর: আরো একটি সুসংবাদ: মার্কিন বিজ্ঞানীদের করোনা প্রতিষেধকের সফলতা
করোনা চিকিৎসায় রেমডেসিভির ওষুধ ব্যবহারের অনুমোদন দিল যুক্তরাষ্ট্র
বুধবার (২৯ এপ্রিল) গিলিয়ড ডটকম এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে রেমডেসিভির (remdesivir) ওষুধটি প্রয়োগ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের উন্নতি পরলক্ষিত হয়েছে।
গিলিয়ড জানায়, আগামী সপ্তাহে পিয়ার-পর্যালোচিত জার্নালে প্রকাশের জন্য ঔষধটির সম্পূর্ণ ডেটা জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
গিলিয়ড সায়েন্সেস দাবি করছে, তাদের তৈরি ওষুধটি কোভিড-১৯ আক্রান্তদের যতো দ্রুত ঔষধটি প্রয়োগ করা গেছে, ততো তাড়াতাড়ি রোগীর অবস্থার উন্নতি হয়েছে। যাদের শরীরে ওষুধটি দেরিতে প্রয়োগ করা হয়েছে- তাদের চেয়ে দ্রুত উন্নতি হয়েছে যাদেরকে ওষুধটি শুরুতেই প্রয়োগ করা হয়েছিলো।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ঔষধটি প্রয়োগে যেই সময়ে উন্নতি হয়েছে ঠিক সেরমক উন্নতি হয়েছে ৫ দিন ধরে আক্রান্ত রোগীরাও। অর্থাৎ ঔষধটি কোনো কারণে রোগীর শরীরে সমানভাবে অ্যান্ডিবডি তৈরি আগেই নিজের কার্যকরিতা প্রমাণ করতে পেরেছে।
গিলিয়ড জানিয়েছে, রেমডেসিভির ওষুধটি যাদেরকে প্রথমে প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের প্রায় ৬২ শতাংশ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গেছে। সেখানে যাদের একটু দেরিতে ওষুধটি দেয়া হয়েছে, সে ৪৯ শতাংশ রোগীর অবস্থারও উন্নতি হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।
প্রসঙ্গত: গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০৫ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।
করোনাভারাসের নিয়মিত আপডেট প্রকাশ কছেরা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন।
সম্মিলিত সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ আজ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩৪ লাখ ৯৬ হাজার ৭০৭ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে ২ লাখ ৪৪ হাজার ৮৭০ জনের। এছাড়া সুস্থ হয়েছে ফিরেছেন ১১ লাখ ২৬ হাজার ৮৭০ জন।
শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ১১ লাখ ৬০ হাজার ৮৩৮ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৬৭ হাজার ৪৪৮ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৭৩ হাজার ৭২৫ জন।
এছাড়া এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছেন ইতালিতে ২৮ হাজার ৭১০ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৭৯ হাজার ৯১৪ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৯ হাজার ৩২৮ জন।
অন্যদিকে আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা স্পেনে ২ লাখ ৪৫ হাজার ৫৬৭ জন। দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৫ হাজার ১০০ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১ লাখ ৪৬ হাজার ২৩৩ জন।
এদিকে মৃত্যু সংখ্যায় স্পেনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। মৃতের সংখ্যায় এখন তৃতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপের এ শীর্ষ কর্তা দেশটি। বুধবার একটি সংশোধিত তালিকা প্রকাশের পর দেশটির করোনা চিত্রের এ পরিবর্তন ঘটেছে।
দেশটিতে এখন মৃতের সংখ্যা ২৮ হাজার ১৩১ জন। আক্রান্ত সংখ্যা ১ লাখ ৮২ হাজার ২৬০। দেশটিতে আক্রান্তের পর সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৪৪। গত বুধবার (২২ এপ্রিল) সংশোধিত হিসাব প্রকাশের আগেও দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছিলো ২১ হাজার ৬৭৮ জন।
যুক্তরাজ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণকারী করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই প্রকাশ করা হয়। হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন কেয়ার হোম বা অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয় সাপ্তাহিকভাবে। সর্বশেষ গত বুধবার কেয়ার হোমসহ অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া করোনা রোগীদের সংখ্যা যোগ করার পর যুক্তরাজ্যের করোনা চিত্রের রাতারাতি এ পরিবর্তন হয়েছে।
এরপরই পঞ্চম সর্বোচ্চ ২৪ হাজার ৭৬০ জন মারা গেছে ফ্রান্সে। দেশটিতে আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৬৮ হাজার ৩৯৬ জন। সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৫০ হাজার ৫৬২ জন।
শনিবার: টানা পাঁচ দিনের মতো আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচশো ছাড়িয়ে, আজ মৃত বেড়ে ৫
আরো পড়ুন:
আমেরিকা: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সেনার চেয়েও করোনায় বেশি মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে
অক্সফোর্ড: করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষা অংশ নেওয়া ‘গ্রানাটো’ সুস্থ এবং পর্যবেক্ষণে আছেন
/এসএস