শুক্রবার: দেশে আক্রান্ত ৫৭১, মৃত্যু ২

প্রকাশিত: ২:৫২ অপরাহ্ণ, মে ১, ২০২০

আজ শুক্রবার পহেলা মে মহামারী করোনাভাইরাসে দেশে নতুন করে ২ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজকের মৃতদের ১ জন পুরুষ এবং ১ জন মহিলা। বয়স হিসেবে ষাটোর্ধ্ব একজন এবং ষাটের নিচে পঞ্চাশের মধ্যে একজন। এছাড়া একজন ঢাকার এবং একজন ঢাকার বাইরের।

শুক্রবার (১ মে) দুপুরে সংবাদ বুলেটিনের নিয়মিত ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানিয়েছেন আইইডিসিআর এর অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা। আজকের বুলেটিনে নতুন যুক্ত হওয়াসহ মোট ৩১টি ল্যাবের তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এছাড়া এদিন নতুন আক্রান্ত হয়েছেন ৫৭১ জন। এ নিয়ে দেশে মোট মৃত্যু হলো ১৭০ জনের এবং মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৮২৩৮ জন।

নাসিমা সুলতানা জানান, ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়েছে ১৪ জন এবং এখন পর্যন্ত ১৭৪ জন। আইসোলেশনে গেছে ১৭৫ জন, মোট আইসোলেশন ১৫২২ জন। আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৭৩ জন, মোটা ছাড়া পেয়েছেন ৯৬৪ জন।

তিনি জানান, গত ২৪ ঘন্টায় নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে ৫৯৫৮টি। এরমধ্যে ৫৫৭৩ টি নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এতে ৫৭১ জন শনাক্ত হয়েছেন। এ নিয়ে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে ৬৫৯০৭টি।

করোনাভাইরাসে বিশ্বব্যাপী মৃতের সংখ্যা দুই লাখ ছাড়িয়ে সোয়া দুই লাখ পেরিয়েছে। প্রতিমূহুর্ত বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। ২ লক্ষ ৩৪ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছে আজ শুক্রবার দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত। এরমধ্যে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ৬৩ হাজার ছাড়িয়েছে মৃতের সংখ্যা।

বাংলাদেশেও প্রতিদিন বাড়ছে মৃতের সংখ্যা। সেই সাথে পরীক্ষা যতো বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যাও বাড়ছে হু হু করে। বাড়ছে ঝুঁকি।

এদিকে  মহামারী করোনাভাইরাসে যখন বিপর্যস্ত গোটা বিশ্ব। ভ্যাকসিন কিংবা রোগ প্রতিরোধমূলক প্রতিশেষধক ঔষধ আবিষ্কারের আগ পর্যন্ত বিশ্বের ভবিষ্যত অন্ধকার দেখছেন সবাই। সেই মূহুর্তে একটি সুখবর দিয়েছে মার্কিন ঔষধ বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠান ‘ইলিয়ড সায়েন্স’।

  • ‘ইলিয়ড সায়েন্স’ এর পরীক্ষাগারে ‘রেমডেসিভির’ নামের একটি অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ আশার আলো দেখাচ্ছে সংশ্লিষ্টদের।

মার্কিন বায়োফার্মাসিউটিক্যাল কোম্পানি গিলিয়ড সায়েন্সেসের তৈরি এ ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষাতেও সফল হয়েছে বলে দাবি করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। বুধবার এ খবর দিয়েছে মার্কিন ঔষধ গবেষণা প্রতিষ্ঠান গিলিয়ড সায়েন্স এর মুখপাত্র গিলিয়ড ডটকম।

সংশ্লিষ্ট খবর: আরো একটি সুসংবাদ: মার্কিন বিজ্ঞানীদের করোনা প্রতিষেধকের সফলতা

বুধবার (২৯ এপ্রিল) গিলিয়ড ডটকম এর এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রে রেমডেসিভির (remdesivir) ওষুধটি প্রয়োগ করে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগীদের উন্নতি পরলক্ষিত হয়েছে।

গিলিয়ড জানায়, আগামী সপ্তাহে পিয়ার-পর্যালোচিত জার্নালে প্রকাশের জন্য ঔষধটির সম্পূর্ণ ডেটা জমা দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।

অক্সফোর্ড: করোনার ভ্যাকসিন পরীক্ষা অংশ নেওয়া ‘গ্রানাটো’ সুস্থ এবং পর্যবেক্ষণে আছেন

গিলিয়ড সায়েন্সেস দাবি করছে, তাদের তৈরি ওষুধটি কোভিড-১৯ আক্রান্তদের যতো দ্রুত ঔষধটি প্রয়োগ করা গেছে, ততো তাড়াতাড়ি রোগীর অবস্থার উন্নতি হয়েছে। যাদের শরীরে ওষুধটি দেরিতে প্রয়োগ করা হয়েছে- তাদের চেয়ে দ্রুত উন্নতি হয়েছে যাদেরকে ওষুধটি শুরুতেই প্রয়োগ করা হয়েছিলো।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আক্রান্ত রোগীদের শরীরে ঔষধটি প্রয়োগে যেই সময়ে উন্নতি হয়েছে ঠিক সেরমক উন্নতি হয়েছে ৫ দিন ধরে আক্রান্ত রোগীরাও। অর্থাৎ ঔষধটি কোনো কারণে রোগীর শরীরে সমানভাবে অ্যান্ডিবডি তৈরি আগেই নিজের কার্যকরিতা প্রমাণ করতে পেরেছে।

গিলিয়ড জানিয়েছে, রেমডেসিভির ওষুধটি যাদেরকে প্রথমে প্রয়োগ করা হয়েছে তাদের প্রায় ৬২ শতাংশ রোগী হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়ে গেছে। সেখানে যাদের একটু দেরিতে ওষুধটি দেয়া হয়েছে, সে ৪৯ শতাংশ রোগীর অবস্থারও উন্নতি হয়েছে এবং তা চলমান রয়েছে।

প্রসঙ্গত: গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০৫ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

করোনাভারাসের নিয়মিত আপডেট প্রকাশ কছেরা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয় ও চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন। সম্মিলিত সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে করোনাভাইরাসে সর্বশেষ আজ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত বিশ্বব্যাপী ৩৩ লাখ ১৮ হাজার ৪৪২ জন মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছেন ২ লাখ ৩৪ হাজার ২৫০ জনের। সুস্থ হয়েছে ফিরেছেন ১০ লাখ ৪৫ হাজার ২৬ জন।

শুধুমাত্র আমেরিকাতেই ১০ লাখ ৯৫ হাজার ৩০৪ জন আক্রান্ত হয়েছেন। মারা গেছেন ৬৩ হাজার ৯৭১ জন এবং সুস্থ হয়েছেন ১ লাখ ৫৫ হাজার ৭৩৭ জন।

আমেরিকা: ভিয়েতনাম যুদ্ধে মার্কিন সেনার চেয়েও করোনায় বেশি মারা গেছে যুক্তরাষ্ট্রে

এটিও পড়ুন: লকডাউনে জীবন পরিবর্তন: ইসলামের ছায়ায় বিশ্ববিখ্যাত বক্সার (ভিডিও)

এছাড়া এখন পর্যন্ত দ্বিতীয় সর্বোচ্চ মৃত্যুবরণ করেছেন ইতালিতে ২৭ হাজার ৯৬৭ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৭৫ হাজার ৯৪৫ জন। আক্রান্ত হয়েছেন ২ লাখ ৫ হাজার ৪৬৩ জন।

অন্যদিকে আক্রান্তের দিক থেকে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যা স্পেনে ২ লাখ ৩৯ হাজার ৬৩৯ জন। দেশটিতে মৃত্যুবরণ করেছেন ২৪ হাজার ৫৪৩ জন এবং সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ১ লাখ ৩৭ হাজার ৯৮৪ জন।

এদিকে মৃত্যু সংখ্যায় স্পেনকে ছাড়িয়ে গেছে যুক্তরাজ্য। মৃতের সংখ্যায় এখন তৃতীয় অবস্থানে আছে ইউরোপের এ শীর্ষ কর্তা দেশটি। বুধবার একটি সংশোধিত তালিকা প্রকাশের পর দেশটির করোনা চিত্রের এ পরিবর্তন ঘটেছে।

দেশটিতে এখন মৃতের সংখ্যা ২৬ হাজার ৭৭১ জন। আক্রান্ত সংখ্যা ১ লাখ ৭১ হাজার ২৫৩। দেশটিতে আক্রান্তের পর সুস্থ হয়েছেন মাত্র ৩৪৪। বুধবার সংশোধিত হিসাব প্রকাশের আগেও দেশটিতে মৃতের সংখ্যা ছিলো  ২১ হাজার ৬৭৮ জন। যা ছিলো বিশ্বে পঞ্চম সর্বোচ্চ মৃত্যু সংখ্যা।

যুক্তরাজ্যে হাসপাতালে মৃত্যুবরণকারী করোনা রোগীর সংখ্যা প্রতিদিনই প্রকাশ করা হয়। হাসপাতালের বাইরে বিভিন্ন কেয়ার হোম বা অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া ব্যক্তিদের তালিকা প্রকাশ করা হয় সাপ্তাহিকভাবে। সর্বশেষ গত বুধবার কেয়ার হোমসহ অন্যান্য জায়গায় মারা যাওয়া করোনা রোগীদের সংখ্যা যোগ করার পর যুক্তরাজ্যের করোনা চিত্রের রাতারাতি এ  পরিবর্তন হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট খবর: বৃহস্পতিবার দেশে আক্রান্ত ৫৬৪, মৃত ৫

/এসএস

মন্তব্য করুন