ইয়েমেনে এবার প্রকাশ পেল সৌদি-আমিরাতের ‘গোপন দ্বন্দ্ব’

প্রকাশিত: ১:৪৪ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৬, ২০২০

ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা কয়েকটি এলাকায় তাদের স্বশাসন ঘোষণা করেছে। ওই এলাকাগুলো দেশটির আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় সমর্থিত সরকারের নিয়ন্ত্রণে। তবে দেশটির সৌদি আরব সমর্থিত এ সরকার বলছে, তাদের কঠিন পরিণতি মোকাবেলা করতে হবে।

এর ফলে দেশটিতে দুই ঘনিষ্ঠ মিত্র সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ‘গোপন দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে আসলো। কারণ দ্য সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এসটিসি) নামের ওই গ্রপটিকে সমর্থন দিচ্ছে আবুধাবি। অথচ তারা দীর্ঘদিন থেকে ইয়েমেনে হুথিবিরোধী যুদ্ধ করেছে।

আজ রোববার সকালে এসটিসি এক বিবৃতিতে জরুরি অবস্থা জারির ঘোষণা দিয়ে জানিয়েছে, দক্ষিণের প্রধান বন্দর এডেন ও দক্ষিণাঞ্চলীয় প্রদেশগুলোয় তাদের শাসন চলবে।

বিবৃতিতে সংযুক্ত আরব আমিরাত সমর্থিত এ গ্রুপটির অভিযোগ, ইয়েমেনের সৌদি সমর্থিত সরকারের নানা দুর্নীতি ও অব্যবস্থাপনা রয়েছে। তাই শনিবার মধ্যরাত (২৫ এপ্রিল) থেকে স্বশাসন ঘোষণা করা হয়েছে।

আল জাজিরা বলছে, ইয়েমেনে দুই মিত্রের মধ্যেকার এই বিভক্তি দেশটির গৃহযুদ্ধকে আরো জটিল করবে। অথচ এসটিসি ও দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্ট আব্দু রাবু মানসুর হাদি সমর্থিত বাহিনী এত দিন সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের অধীনে দেশটির হুথি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে লড়াই করেছে।

সৌদি নেতৃত্বাধীন এই জোট ২০১৫ সালে ইয়েমেনে হস্তক্ষেপ করে হাদিকে পুনরায় ক্ষমতাসীন করতে। তার আগের বছর হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানার নিয়ন্ত্রণ নেয় এবং মানসুর হাদি পালিয়ে এডেন শহরে যান। পরবর্তীতে সেখান থেকে সৌদি আরবে গিয়ে আশ্রয় নেন।

কিন্তু গত বছরের আগস্ট মাসে স্বশাসন ঘোষণা করা এসটিসি সরকারের বিরুদ্ধে চলে যায় এবং এডেনের অন্তর্বর্তী রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ নেয়। পরে নভেম্বরে এক চুক্তির ভিত্তিতে অস্ত্রবিরতি ঘোষণা করা হয়। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী এসটিসি নিয়ণন্ত্রিত এলাকাসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলে আলাদা মন্ত্রিসভা হবে এবং সকল বাহিনী দেশটির আন্তর্জাতিক সরকারের অধীনে চলে যাবে।

তবে ইয়েমেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মাদ আল-হাদরামি বলছেন, সর্বশেষ পদক্ষেপের মাধ্যমে রিয়াদ চুক্তি বেরিয়ে গেছে এসটিসি। সেইসঙ্গে স্বশাসন প্রতিষ্ঠার মানে হলো তারা সশস্ত্র যুদ্ধ শুরু করছে।

এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, তথাকথিত এই অন্তর্বর্তী কাউন্সিল এই ঘোষণার ফলে ভয়ংকর পরিণতির মুখোমুখি হবে।

এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক এসটিসির মুখপাত্র আলখাদের সুলাইমান আল জাজিরাকে বলেছেন, মৌলিক প্রয়োজন পূরণে ইয়েমেন সরকারের ব্যর্থতাই তাদের এই পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে।

দীর্ঘ বছরের গৃহযুদ্ধে ইয়েমেনে এক লাখের বেশি লোকের মৃত্যু হয়েছে। সেইসঙ্গে আরব অঞ্চলের এই দরিদ্র দেশটিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে উপনীত করেছে।

আরএম/পাবলিকভয়েস

মন্তব্য করুন