
মরণঘাতী করোনাভবাইরাসের আঘাতে গোটা বিশ্ব আজ জর্জরিত। আক্রান্ত ও মৃত্যু অব্যাহত আছে। কিন্তু তার পরও ভাইরাসটির সংক্রমণ থেকে বাঁচতে আরোপিত লকডাউন বা কারফিউ জাতীয় বিধি-নিষেধ তুলতে মরিয়া হয়েছে অনেক দেশ। সংশ্লিষ্ট দেশের প্রধানরা বলছেন, এ অবস্থা চলতে থাকলে অর্থনৈতিক অবকাঠামো ভেঙে পড়বে। এমনই প্রেক্ষাপটে কিছু পরামর্শ দিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।
অর্থাৎ এই পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রগুলো কী ব্যবস্থা নিতে পারে, জনগণ কীভাবে চলবে সে সম্পর্কে বিভিন্ন নির্দেশনা দিয়েছে ডব্লিউএইচও। সংস্থাটির পক্ষ থেকে মানুষের স্বাস্থ্য সচেতনতা নিয়েও বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে।
ভাইরাসের সংক্রমণ কমে গেলে দেশগুলো থেকে লকডাউন উঠানো যেতে পারে। ইতোমধ্যে করোনার হটস্পট ইতালি ও স্পেনে তা শিথিল করা হয়েছে। তবে লকডাউন উঠাতে হলে ডব্লিউএইচও ছয়টি শর্ত মেনে উঠানোর পরামর্শ দিয়েছেন। সংস্থাটির প্রধান টেড্রস আধানম গেব্রিয়াসিস এক টুইটে এসব শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেন, গত কয়েক মাসের পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমরা বুঝতে পেরেছি, যত দ্রুত শনাক্তকরণ টেস্ট করে আক্রান্তদের আলাদা করা সম্ভব হবে, ভাইরাসটির সংক্রমণ তত দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। এই নিয়ম মানা হলে অসংখ্য প্রাণ বেঁচে যাবে। সেইসঙ্গে অর্থনীতির ওপরও চাপ কম পড়বে।

লকডাউন উঠিয়ে নেয়া প্রসঙ্গে টেড্রস আধানম বলেন, ভাইরাসটির কারণে সবাইকে অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে অনেক সময়ের প্রয়োজন। এই মুহূর্তে কোনো তাড়াহুরো করা যাবে না। কারণ এতে করে ভাইরাসটি নতুন করে ছড়িয়ে পড়তে পারে। কোনো সরকার যদি মনে করে, লকডাউন উঠিয়ে নেয়া উচিত তাহলে আমাদের দেয়া ছয়টি শর্ত মেনে তা কার্যকর করতে হবে।
শর্ত ৬টি হলো-
১. ভাইরাসের সংক্রমণ সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আনা
২. যারাই ভাইরাসের সংক্রমণে আসবেন, তাদের চিহ্নিত করে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেয়ার সামর্থ্য থাকতে হবে সংশ্লিষ্ট দেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের।
৩. হট স্পটের ঝুঁকি কমিয়ে পর্যাপ্ত নার্সিং সেবা চালু করতে হবে।
৪. স্কুল, কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে ভাইরাস প্রতিরোধ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ।
৫. অন্যদেশ থেকে আসা নাগরিকদের বিষয়ে সর্বোচ্চ সতর্কতা পালন।
৬. নতুন নিয়মকেই স্বাভাবিক মেনে জনগণকে চলাফেরা করতে বাধ্য করা এবং এ বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।
মার্কিন জরিপ সংস্থা ওয়ার্ল্ডোমিটারের তথ্য মতে, এ পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে ২২ লাখ ৭৬ হাজারের বেশি মানুষ ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়েছেন। মৃত্যু হয়েছে এক লাখ ৫৬ হাজারের বেশি মানুষের। পাশাপাশি সুস্থ হয়েছেন ৫ লাখ ৮২ হাজারের বেশি।
এমএম/পাবলিকভয়েস

