
বালাদেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আজ আক্রান্ত হয়েছেন ২০৯ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ১০১২ জনে। এবং মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৪৬ জনে।
একই সাথে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৪২ জন। এরমধ্যে গত ২৪ ঘন্টায় সুস্থ হয়ে আইসোলেশন থেকে ফিরেছেন ৫ জন।
আজ সোমবার (১৩ এপ্রিল) করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘আইইডিসিআর’-এর নিয়মিত ‘হেলথ বুলেটিনের’ অনলাইন ববুলেটিন ব্রিফিং কার্যক্রমে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
আজকে ব্রিফিং করেন আইইডিসিআর এর অতিরিক্ত মহাপরিচালন অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা
এছাড়াও ব্রিফিংয়ে জানানো হয়, বর্তমানে আইসোলেশনে আছে ৩৮২ আর এখন পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ শেষে আইসোলেশন থেকে ছাড়া পেয়েছেন ৪০৪২ জন। এছাড়াও বর্তমানে প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে আছেন ২১৩৫ জন এবং সর্ব হোম এবং প্র্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন থেকে মুক্ত হয়েছেন ৬৫৩১৫ জন।
বাংলাদেশে করোনাভাইরাসের প্রাদূর্ভাব শুরু হয় গত ৮-ই মার্চ। এদিন প্রথম তিনজন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হওয়ার তথ্য দেয় আইইডিসিআর। এরপর গত ৮ এপ্রিল থেকে এ সংখ্যা ধিরে ধিরে বড় আকারে বাড়ছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনারোগী শনাক্ত হচ্ছে।
বাংলাদেশ সরকার করোনা সংক্রামন ঠেকাতে সারাদেশে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রথমে কোন এলাকায় কেউ মারা গেলে সেই এলাকা ‘লকডাউন’ করা হতো।
এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন, কোথাও কেউ আক্রান্ত হলেই সে এলাকা লকডাউন করে ফেলা হবে। করোনাভাইরাস প্রাদুর্ভাবের কারণে গণজমায়েত বন্ধ করতে আজ পহেলা বৈশাখের সকল অনুষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে। ছয়ানটসহ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চারুকলা কোনো অনুষ্ঠান করতে পারেনি। সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
এছাড়াও সারাদেশে সকল ধরণের ‘গণজমায়েত’ বন্ধ করা হয়েছে এবং জরুরী সেবা ছাড়া সকল পরিবহণ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শপিংমলসহ বড় বড় সকল কোম্পানীর কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। প্রধান দুই শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং পর্যটন শহর কক্সবাজারসহ বেশির এলাকাতেই প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনেকটাই ‘লকডাউন’ অবস্থায় আছে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল।
এছাড়াও দুই দফা বাড়িয়ে সরকারী বেসরকারী অফিসসমূহের ‘সাধারণ ছুটি’ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং সন্ধ্যা ৬ টার পর যে কারো বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। প্রসঙ্গত : গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে।
প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা। করোনাভারাসের নিয়মিত আপডেট প্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১৯ লক্ষ ২৯ হাজার ১২১ জনে দাড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৭৫৪ জনে। যা প্রতিমূহুর্তে বেড়েই চলছে।
একই সাথে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৪ লক্ষ ৫২ হাজার ৮৮৩ জন। বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুসংখ্যায় সর্বাধিক তালিকায় প্রথম রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৮৭ হাজার ১৭৩ জন। মোট মারা গেছে ২৩ হাজার ৬৪৪ জন।
এ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩৬ হাজার ৯৪৮ জন। মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ২০ হাজার ৪৬৫ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৯ হাজার ৫১৬ জন। মৃত্যুর হিসেবে ইতালির পরের অবস্থানেই রয়েছে স্পেনের।
দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৭ হাজার ৭৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৭০ হাজার ৯৯ জন। মৃত্যুর তালিকার চার নম্বরে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজার ৯৬৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৯০০ জনের বেশি। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৩৬ হাজার ৭৭৯ জনে।
মৃত্যু তালিকায় ফ্রান্সের পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ ব্রিটেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১১ হাজার ৩২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৮৮ হাজার ৬২১ জন।
এছাড়াও আক্রান্তের দিক থেকে জার্মানিও রয়েছে বিপদের মূহুর্তে। দেশটিতে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৩০ হাজার ২৯ জন। তবে আক্রান্ত হিসেবে দেশটিতে মৃত্যুসংখ্যা কম। সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেশটিতে মৃত্যুসংখ্যা ৩ হাজার ১৯৪।
/এসএস

