রবিবার : বাংলাদেশে নতুন আক্রান্ত ১৩৯ জন, মৃত্যু ৪ জনের

প্রকাশিত: ২:৪২ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ১২, ২০২০
বাংলাদেশে করোনাভাইরাস আপডেট। ছবি : পাবলিক ভয়েস।

আজ রোববার (১২ এপ্রিল) বাংলাদেশে করোনাভাইরাসে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন ১৩৯  জন। মৃত্যু হয়েছে ৪ জনের। সব মিলিয়ে বাংলাদেশে আক্রান্তের সংখ্যা দাড়িয়েছে ৬২১ জনে। এবং মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ৩৪ জনে।

আজ রোববার সুস্থ্য হয়েছেন ৩ জন। এ নিয়ে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস থেকে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৩৯ জন। আজকের সুস্থ হওয়া তিনজের দু’জন পুরুষ ও একজন মহিলা। এরমধ্যে একজন ডাক্তার ছিলেন, যিনি রোগীর সেবা দিতে গিয়ে করোনায়া আক্রান্ত হয়েছিলেন।

এদিকে আজকের আক্রান্তদের মধ্যে ঢাকায় শতকরা ৫০ ভাগ,  জেলায় নারায়ণগঞ্জ ৩৫ ভাগ, চট্টগ্রামে ৬ ভাগ। বাকীরা অন্যান্য জেলার।

আজ রোববার (১২ এপ্রিল) করোনাভাইরাস নিয়ে বাংলাদেশের রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউট ‘আইইডিসিআর’-এর নিয়মিত ‘হেলথ বুলেটিনের’ অনলাইন বুলেটিন ব্রিফিং-এ  এসব তথ্য জানিয়েছেন ডা. মীরজাদী সাব্রিনা ফ্লোরা।

আইইডিসিআর-এর তথ্য অনুসারে গত ৮ই মার্চ বাংলাদেশে প্রথম তিনজন করোনাভাইরাস রোগী শনাক্ত হয়। যাদের মধ্যে দুজন পুরুষ এবং একজন নারী ছিলেন। এরপর থেকে থমকে থমকে বাংলাদেশে করোনাভাইরাস রোগীর সংখ্যা বাড়ছিলো প্রতিদিন। গত ৮ এপ্রিল থেকে এ সংখ্যা ধিরে ধিরে বড় আকারে বাড়ছে। প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন স্থানে করোনারোগী শনাক্ত হচ্ছে।

বাংলাদেশ সরকার করোনা সংক্রামন ঠেকাতে সারাদেশে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে। প্রথমে কোন এলাকায় কেউ মারা গেলে সেই এলাকা ‘লকডাউন’ করা হতো। এরপর প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ দিয়েছেন, কোথাও কেউ আক্রান্ত হলেই সে এলাকা লকডাউন করে ফেলা হবে।

সারাদেশে সকল ধরণের ‘গণজমায়েত’ বন্ধ করা হয়েছে এবং জরুরী সেবা ছাড়া সকল পরিবহণ চলাচলও বন্ধ রয়েছে। দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শপিংমলসহ বড় বড় সকল কোম্পানীর কার্যক্রমও বন্ধ রয়েছে। প্রধান দুই শহর ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং পর্যটন শহর কক্সবাজারসহ বেশির এলাকাতেই প্রবেশ ও বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে। অনেকটাই ‘লকডাউন’ অবস্থায় আছে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চল।

এছাড়াও চার দফা বাড়িয়ে সরকারী বেসরকারী অফিসসমূহের ‘সাধারণ ছুটি’ ২৫ এপ্রিল পর্যন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এবং সন্ধ্যা ৬ টার পর যে কারো বাইরে বের হওয়া নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

সারাদেশে সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পুলিশ, সেনাবাহিনীসহ উপকূলীয় অঞ্চলে নৌবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়মিত দেখাশোনা করছেন এবং ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি অঞ্চলের খোঁজখবর রাখছেন। আজকেও তিনি বরিশাল ও খুলনা বিভাগের পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজ খবর নিয়েছেন।

প্রসঙ্গত: গত বছরের ডিসেম্বর মাসে চীনের উহান শহরে করোনাভাইরাস প্রথমে ধরা পরে। এরপর ধিরে ধিরে তা ইউরোপ আমেরিকাসহ বিশ্বের প্রায় ২০০ টি দেশে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রতিনিয়তই জ্যামিতিক হারে বাড়ছে আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা।

করোনাভারাসের নিয়মিত আপডেট প্রকাশ করা যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিন্স বিশ্ববিদ্যালয়ের সংকলিত সর্বশেষ তথ্য অনুসারে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্তের সংখ্যা ১৭ লক্ষ ৮৩ হাজার ৪২৪ জনে দাড়িয়েছে। বিশ্বব্যাপী মৃত্যুর সংখ্যা দাড়িয়েছে ১ লক্ষ ৮ হাজার ৯০৭ জনে। যা প্রতিমূহুর্তে বেড়েই চলছে। একই সাথে বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস আক্রান্ত হয়ে সুস্থ হয়ে ফিরেছেন ৪ লক্ষ ৪ হাজার ৭৯৬ জন।

বিশ্বে করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুসংখ্যায় সর্বাধিক তালিকায় প্রথম রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে এখন পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ৫ লাখ ২৯ হাজার ৫৭৭ জন। মোট মারা গেছে ২০ হাজার ৪৬৬ জন। এ থেকে সুস্থ হয়েছেন ৩০ হাজার ৪৫৫ জন।

মৃতের সংখ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের দেশ ইতালি। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৯ হাজার ৪৬৪ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬১৯ জনের প্রাণ গেছে। দেশটিতে এখন পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছে ১ লাখ ৫৩ হাজার ২৭১ জন।

মৃত্যুর হিসেবে ইতালির পরের অবস্থানেই রয়েছে স্পেনের। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৬ হাজার ৬০৬ জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় ৫২৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ৬৩ হাজার ২৭ জন।

মৃত্যুর তালিকার চার নম্বরে রয়েছে ফ্রান্স। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ১৩ হাজার ৮৩২ জনের মৃত্যু হয়েছে। যার মধ্যে গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যু ৬৩৫ জনের। সবমিলিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা ১ লাখ ২৯ হাজার ৬৫৪ জনে।

মৃত্যু তালিকায় ফ্রান্সের পরের অবস্থানে রয়েছে ইউরোপের আরেক দেশ ব্রিটেন। দেশটিতে এখন পর্যন্ত ৯ হাজার ৮৭৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। দেশটিতে আক্রান্তের সংখ্যা ৭৮ হাজার ৯৯১ জন।

এদিকে জার্মানিতে ১ লাখ ২৪ হাজারের বেশি মানুষ আক্রান্ত হলেও দেশটিতে মাত্র ২ হাজার ৭৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে।

এইচআরআর/এসএস/পাবলিকভয়েস

মন্তব্য করুন