
ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ভয়াবহ সহিংসতা নিয়ে বুধবার দেয়া এক রায়ে সরকার ও পুলিশের ভুমিকার সমালোচনা করায় হাইকোর্টের বিচারপতি এস মুরলিধরকে বদলি করা হয়েছে। বুধবার মধ্যরাতে বদলির এ ঘোষণা আসে। খবর এনডিটিভি।
রায়ে তিনি এই ঘটনার জন্য কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার এবং দিল্লি পুলিশের সমালোচনা করেছিলেন। এর একদিন পরই তাকে বদলি করা হলো। এছাড়াও বুধবার রাতে বদলি করা হয়েছে দিল্লির পাঁচ আইপিএস অফিসারকেও।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, বুধবার এস মুরলিধরকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, দিল্লির হিংসায় এখনও পর্যন্ত ২৮ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহতের সংখ্যা দুই শতাধিক।
এর আগে ১২ ফেব্রুয়ারি সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়াম থেকে এটি সুপারিশ করা হয়েছিল। সেই সুপারিশের সূত্র ধরেই আজ বৃহস্পতিবার (বুধবার মধ্যরাত) বিচারপতি মুরলিধরকে বদলি করা হয়।
বদলি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে আলোচনা করে বিচারপতি মুরলিধরকে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত করেছেন।
দিল্লি হাইকোর্টের বার অ্যাসোসিয়েশন এ ঘটনার তিব্র নিন্দা জানিয়েছে। অ্যাসোসিয়েশন বলছে, এর ফলে প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
গত সপ্তাহেও সুপ্রিম কোর্ট কলেজিয়ামের এই সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহার করে নিতে আর্জি জানিয়েছিল দিল্লি হাইকোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশন।
প্রসঙ্গ, বুধবার বিচারপতি মুরলিধর বলেন, ‘আমরা আর একটা ১৯৮৪ এর মতো ঘটনা হতে দিতে পারি না দেশে’। তিনি কেন্দ্রীয় সরকার ও দিল্লি সরকার— উভয়কেই নির্দেশ দিয়েছিলেন দিল্লির হিংসা রদে একসঙ্গে কাজ করতে।
চার বিজেপি নেতা কপিল মিশ্র, অনুরাগ ঠাকুর, অভয় ভার্মা ও পরবেশ ভার্মার উস্কানিমূলক ভাষণের ভিডিওকে কেন্দ্র করে দায়ের হওয়া পিটিশনের শুনানিতে গতকাল বিচারপতি মুরলিধর ওই মন্তব্য করেছিলেন। তিনি প্রশ্ন তুলেছিলেন, কেন ওই চার বিজেপি নেতার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করা হয়নি। তিনি দিল্লির পুলিশ প্রধানকে এফআইআর না দায়ের করার পরিণতি গুরুত্ব সহকারে বিবেচনা করার কথা বলেন।
সেই সময় কেন্দ্রের পক্ষে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানিয়েছিলেন, এফআইআর সঠিক সময়েই দায়ের হবে। একথায় বিচারপতি মুরলিধর প্রশ্ন তোলেন, ‘কোনটা সঠিক সময়, মিস্টার মেহতা? শহর জ্বলছে’।
দিল্লি হাইকোর্ট থেকে বিচারপতি মুরলীধরের বদলির প্রসঙ্গ এর আগে দু’বার উঠেছিল। ২০১৮-র ডিসেম্বর ও ২০১৯-এর জানুয়ারিতে। দু’বারই রাজি হয়নি কলেজিয়াম। দিল্লি হাইকোর্টের বহু আইনজীবীরই মতে, বিচারপতি মুরলীধর অত্যন্ত দক্ষ এবং বহু মামলাতেই সাহসী রায় দিয়েছেন। যার মধ্যে রয়েছে কংগ্রেস নেতা সজ্জন কুমারের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া ৮৪-র শিখ-বিরোধী দাঙ্গা মামলা এবং সমকামিতাকে ফৌজদারি অপরাধের তকমা থেকে মুক্ত করার রায়।
/এসএস

