
গত বুধবার বিকেলে ইবনে সীনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় না ফেরা দেশে চলে যান কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতিব ও দেশের প্রখ্যাত আলেম মাওলানা আযহার আলী আনোয়ার শাহ। তার ইন্তেকালের পর শোকের দুনিয়ায় ভাসতে থাকে বাংলাদেশে। স্যোশাল মিডিয়ায়ও সেই শোক প্রকাশ করেছেন আযহার আলী আনোয়ার শাহ’র ভক্ত, ছাত্র ও লক্ষ লক্ষ আমজনতা।
হুজুরের ইন্তেকালে গভীর শোক প্রকাশ করেন যাত্রাবাড়ী মাদরসার প্রিন্সিপাল আল্লামা মাহমুদুল হাসান, চরমোনাই পীর সাহেব মুফতী রেজাউল করীমসহ দেশের বড় বড় আলেমরা।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ.কে জামিয়াতুল ইমদাদিয়া মাদরাসা কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানে শেষ বারের মতো হুজুরকে এক পলক দেখতে হাজির হয় হাজারও মানুষ। সকাল ভোরে তীব্র শীত উপেক্ষা করে লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে মানুষেরা তাকে শেষ দেখা দেখেছেন। এসময় অনেককেই কাঁদতে দেখা যায়। অনেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন হতভম্ব হয়ে। বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকসহ উপস্থিত হয়েছিলেন হাজার হাজার আমজনতা।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ ময়দানে হুজুরের জানাজার অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অংশগ্রহণ করেন লক্ষ লক্ষ মানুষ। জানা গেছে প্রায় আট লাখ মানুষ অংশগ্রহণ করেছেন আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ‘র জানাজায়। জানাজায় ইমামতি করেন হুজুরের ছোট ছেলে আনজার শাহ তানিম।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ রহ.-এর জানাজায় লক্ষ লক্ষ মানুষের উপস্থিতি দেখে সবাই একরকম চমকে গিয়েছেন। জানাজায় এই বিশাল উপস্থিতিতে জাতি বুঝতে পেরেছে তারা খুব মূল্যবান একজন মানুষকে হারিয়ে ফেলেছে। এমন একজন মানুষ আর ফিরে আসবে না। আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহকে হারিয়ে ফেলায় জাতির হৃদয়ে যে ক্ষত হয়েছে সেই ক্ষত অনেকদিন তাজা থাকবে। এই জাতিকে অনেক কষ্ট দিবে।
জানাজা শেষে শোলাকিয়া বাগে জান্নাত কবরস্থানের মরহুমের পারিবারিক কবরস্থানে তার মাতার কবরের পাশে তাকে দাফন করা হয়।
আল্লামা আযহার আলী আনোয়ার শাহ কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শহীদী মসজিদের খতিব। দীর্ঘদিন সিলেটের হজরত শাহজালাল দর্গা মসজিদের খতিব হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। দেশ-বিদেশে রয়েছে তার হাজার হাজার ছাত্র ও ভক্ত।
কওমি মাদরাসার সর্বোচ্চ অথরিটি আল হাইয়াতুল উলইয়া লিল জামিয়াতিল কওমিয়া বাংলাদেশের সদস্য, বাংলাদেশ কওমি মাদরাসা শিক্ষাবোর্ড ‘বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া’র (বেফাক) সহ-সভাপতি, আল-জামিয়াতুল ইমদাদিয়া কিশোরগঞ্জ-এর মহাপরিচালক ছিলেন তিনি।
প্রাজ্ঞ আলেম, সুবক্তা, চমৎকার কোরআন তেলাওয়াত ও মুফাসসিরে কোরআন হিসেবে মাওলানা আনোয়ার শাহ দেশব্যাপী পরিচিত ছিলেন। উপমহাদেশের বিখ্যাত হাদিসবিশারদ ও আধ্যাত্মিক আলেম ও বিশিষ্ট রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মাওলানা আতহার আলীর (রহ.) সন্তান ছিলেন তিনি।
আই.এ/

