রোহিঙ্গা আগমনের ২ বছর পূর্ণ হলো আজ

প্রকাশিত: ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ, আগস্ট ২৫, ২০১৯

আজ রোহিঙ্গা আগমনের দুই বছর পূর্ণ হলো। মিয়ানমারের আরাকানে রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সেদেশের সেনারা হত্যা, ধর্ষণ, নির্যাতন ও বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে জীবন বাঁচাতে লাখ লাখ রোহিঙ্গা সীমান্ত পেরিয়ে এদেশে আশ্রয় নেয়। ২০১৭ সালের ২৫শে আগস্ট। এই দিনটিকে গণহত্যা দিবস হিসেবে পালন করে রোহিঙ্গারা। এবারও দিবসটি পালনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে রোহিঙ্গারা।

রাখাইনে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ অগাস্ট রাখাইন ছেড়ে বাংলাদেশে আসতে থাকে রোহিঙ্গারা। এই সংখ্যা কিছু দিনের মধ্যে সাত লাখ ছাড়ায়। আগে থেকে বাংলাদেশে অবস্থান করছিল আরও চার লাখ রোহিঙ্গা। তাদের কক্সবাজারের কয়েকটি কেন্দ্রে আশ্রয় দিয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সহায়তায় জরুরি মানবিক সহায়তা দিয়ে আসছে বাংলাদেশ সরকার।

আন্তর্জাতিক চাপের মধ্যে মিয়ানমার সরকার রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে ২০১৭ সালের শেষ দিকে বাংলাদেশের সঙ্গে চুক্তি করলেও নানা কারণে প্রত্যাবাসন বিলম্বিত হতে থাকে। শেষ পর্যন্ত গতবছর ১৫ নভেম্বর প্রত্যাবাসন শুরুর তারিখ ঠিক হলেও নতুন করে নিপীড়নের মধ্যে পড়ার আশঙ্কা থেকে রোহিঙ্গারা ফিরে যেতে অস্বীকৃতি জানায়।

প্রত্যাবাসনে মিয়ানমারের উদ্যোগকে ’প্রতারণা’ বলছেন কক্সবাজারে শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি সংগঠনের একজন নেতা। আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি ফর পিস অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস নামের সংগঠনের চেয়ারম্যান মুহিব উল্লাহ বলছেন, মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের জায়গা এখনও নিরাপদ নয়।

তাদের নিয়ে যদি ক্যাম্পে রাখা হয় তাহলে বাংলাদেশের ক্যাম্পই তাদের জন্য ভালো। মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরুর দ্বিতীয় চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার দুদিন পর আপত্তির কারণ বললেন তিনি।

গত দুই বছরে মিয়ানমারের উপর আন্তর্জাতিক চাপ এবং কূটনৈতিক তৎপরতা অব্যাহত থাকা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনো ইতিবাচক সাড়া মেলেনি। বিভিন্ন দাবি-দাওয়া পূরণের অজুহাতে রোহিঙ্গাদের অনাগ্রহের কারণে বার বার প্রত্যাবাসন আটকে রোহিঙ্গা সমস্যা দীর্ঘস্থায়িত্বের ইঙ্গিত দিচ্ছে। যে কারণে স্থানীয়দের মধ্যে উদ্বেগ বাড়ছে। অন্যদিকে রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নিতে মিয়ানমার বাস্তবে আগ্রহী না হলেও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে তারা প্রত্যাবাসন নিয়ে নানা ছলচাতুরি করছে।

সে দেশটির উপর আস্থার সংকট কাটছেনা রোহিঙ্গাদের। যে কারণে আলোর মুখ দেখছেনা রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন। এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি আশ্রয়শিবিরে বর্তমানে বসবাস করছে ১১ লাখ ১৮ হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা।

রোহিঙ্গা মনে করেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে তাদের জন্য এখনো নিরাপদ পরিবেশ তৈরি হয়নি। আবার সেখানে ফিরে গেলে মিয়ানমার তাদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে না এবং আভ্যন্তরীণ বাস্তুচ্যুতদের জন্য তৈরি করা ক্যাম্পে প্রায় জিম্মি অবস্থায় তাদের রাখা হবে। এ ধরনের নানা রকম অবিশ্বাস কাজ করছে রোহিঙ্গাদের মধ্যে।

ইসমাঈল আযহার/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন