ইসকনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করলেন হাবিবুর রহমান মিছবাহ

প্রকাশিত: ৩:১৬ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৪, ২০১৯

চট্টগ্রামের ২০টির অধিক স্কুলে মুসলিম শিশুদের দেবতার নামে উৎসর্গকৃত প্রসাদ খাইয়ে হরে হরে, হরে রাম, হরে কৃঞ্চ ইত্যাদি শ্লোগান দিয়ে ধর্ম অবমাননা করা ও সাম্প্রদায়িক উস্কানির অভিযোগে আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ ‘ইসকন বিরুদ্ধে মামলা করেছেন মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ।

আজ বুধবার ঢাকার সিএমএম কোর্টের বিচারক আবু সাঈদের আদালতে এ মামলা করেন তিনি। মামলাটি শুনানির জন্য রেখে দিয়েছেন বিচারক। এডভোকেট শওকত আলী এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

আজ বিকেলেই শুনানি হবে জানিয়ে অ্যাডভোকেট শওকত আলী বলেন, মামলায় সর্বমোট ৯ জনকে বিবাদী করা হয়েছে। বিবাদীরা হলেন, ১. আন্তর্জাতিক কৃষ্ণ ভাবনামৃত সংঘ (ইসকন), ২. শ্রীমৎ ভক্তিচারু স্বামী, চেয়ারম্যান, ইসকন, বাংলাদেশ। ৩. চারুচন্দ্র দাস ব্রক্ষ্মচারী, সম্পাদক, ইসকন, ঢাকা । ৪. জগৎ গুরু গৌরাঙ্গ দাস ব্রক্ষ্মচারী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, ইসকন, ঢাকা । ৫. শ্রী পাদ লিলারাজ গৌরদাস ব্রক্ষ্মচারী, অধ্যক্ষ, শ্রী কৃষ্ণ মন্দির, ইসকন, চট্টগ্রাম ৬. শ্রী পাদ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রক্ষচারী, বিভাগীয় রিজিওনাল সেক্রেটারী, ইসকন, চট্টগ্রাম।৭. শ্রী পাদ দারুব্রক্ষ জগন্নাথ দাস ব্রক্ষ্মচারী, সাধারণ সম্পাদক, শ্রী কৃষ্ণ মন্দির, ইসকন, চট্টগ্রাম। ৮. পান্ডপ গোবিন্দ দাস ব্রক্ষ্মচারী, পরিচালক, ফুড ফর লাইফ, ইসকন, চট্টগ্রাম, ৯. রমেশ্বর পরমাত্মা দাস, পিতা- অজ্ঞাত। ১০. দারু ব্রক্ষ্ম জগন্নাথ দাস, পিতা- অজ্ঞাত।

জানা যায়, সম্প্রতি চট্টগ্রামের বিভিন্ন স্কুলে মুসলিম শিশুদেরকে হিন্দু ধর্মীয় রীতিতে তৈরিকৃত প্রসাদ খাওয়ানো এবং তাদেরকে বিভিন্ন মন্ত্র পাঠ করানো নিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা সৃ্ষ্টি হয়। বিষয়টি আদালতের নজরে আনা হলে হাইকোর্ট এটাকে অন্যায় বলে মন্তব্য করেন। কিন্তু এ নিয়ে ইসকনের পক্ষ থেকে নিজেদের ভুল স্বীকার বা অনুশোচনার কোনো খবর পওয়া যায়নি। এ নিয়ে বিরুপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। ইসকনের এমন ভুমিকায় আদলতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান বিশিষ্ট আলোচক, লেখক ও আলেম, মুফতী হাবিবুর রহমান মিছবাহ।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ ধর্মীয় সম্প্রীতির দেশ। এখানে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ বিভিন্ন ধর্মের লোক মিলে মিশে বসবাস করি। পারস্পরিক সৌহার্দপূর্ণ পরিবেশে কোমলমতি মুসলিম বাচ্চাদের ওপর নিজেদের ধর্মীয় বিষয় চাপিয়ে দেয়া ইসকনের উস্কানি বলে মনে করি। ঘটনার পর উচ্চ আদলত থেকে মাননীয় বিচারক একে অন্যায় বললেও ‘ইসকন’ কর্তৃপক্ষ কোনো প্রকার দুঃখ প্রকাশ কিংবা নিজেদের ভুল স্বীকার করেনি। উল্টো তারা তাদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচারের অভিযোগ এনে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। দায়সারাভাবে যেটুকু দুঃখ প্রকাশ করেছে তা মাননীয় উচ্চ আদলতকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর মতোই। তাদের এ কর্মকাণ্ডে মুসলিম ধর্মাবলম্বী মানুষের ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত হেনেছে। তাই আদালতে মামলা দায়ের করেছি।

তিনি আরো বলেন, ইসকন এর আগেও সিলেটেরে একটি মসজিদে হামলা করেছিলো। এটি একটি আন্তর্জাতিক সংগঠন। এরা বিভিন্ন সময় ধর্মীয় অনুভুতিতে আঘাত করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রতি নষ্ট করার উস্কানি দেয়। এরা বাংলাদেশের দীর্ঘদিনের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্টের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত বলে মনে করি।

তিনি আরো বলেন, ইসকন সম্পূর্ণ পরিকল্পিত ভাবে যে কাজটি করেছে আমি মনে করি এটা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার জন্যে করেছে। তাই বিষয়টির সুষ্ঠু তদন্ত এবং সমাধানের জন্য বিচার বিভাগের শরণাপন্ন হয়েছি। বিজ্ঞ বিচারক মামলাটি বিবেচনার জন্য শুনানির অপেক্ষায় রেখেছেন। শুনানি শেষে মামলা গ্রহণের ব্যাপারে আদেশ দিবেন।

এদিকে ‘ইসকনের’ বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের খবর শুনে ঢাকার সিএমএম আদালত প্রাঙ্গণে সকাল থেকে শত শত তৌহিদী জনতা বাদীর সঙ্গে একাত্মতা পোষণের জন্য জড়ো হন। এসময় আদালত প্রাঙ্গণে ইসলাম প্রিয় জনতার ব্যাপক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

এসময় বাদীর সঙ্গে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শামসুদ্দোহা চৌধুরী, আকন সিরাজুল ইসলাম, মাওলানা মীর আহমেদ মিরু, প্রিন্সিপাল মাওলানা নুরুল করিম, মুফতী সাঈদুর রহমান সাদী, যুবনেতা আলমগীর হোসাইন, মুফতী আব্দুল্লাহ ফুআদ, মাওলানা শওকত হোসাইন, মাওলানা নাসরুল্লাহ প্রমূখ।

/এসএস

মন্তব্য করুন