

‘বাংলাদেশে সংখ্যালঘুরা নির্যাতিত হচ্ছে এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। এমনকি ৩৭ মিলিয়ন সংখ্যালঘু বিলীন হয়ে গেছে’। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের কাছে এমন অভিযোগ করে সাহায্য প্রার্থনা করছে বাংলাদেশী এক নারী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন একটি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তুমুল সমালোচনা শুরু হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যায় প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওভাল অফিসে বসে বিভিন্নজনের সাথে আলাপ করছিলেন। এসময় এক নারীকে বলতে শোনা যায় মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ওই নারী বলছে, ‘আমি বাংলাদেশ থেকে এসেছি। এখানে প্রায় ৩৭ মিলিয়ন (৩ কোটি ৭০ লাখ) হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান বিলীন হয়ে গেছে। দয়া করে আমাদের সাহায্য করুন। আমরা বাংলাদেশেই থাকতে চাই। এখনো এখানে ১৮ মিলিয়ন (১ কোটি ৮০ লাখ) মানুষ রয়েছে। আমার অনুরোধ দয়া করে আমদের সাহায্য করুন। আমরা আমাদের দেশ ছাড়তে চাই না। শুধু থাকার জন্য সহযোগিতা করুন। আমি আমার ঘর-বাড়ি হারিয়েছি। তারা আমার ঘর-বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছে। তারা আমার জমি-জমা দখল করে নিয়েছে। কিন্তু সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি’।
এসময় ডোনাল্ড ট্রাম্প জানতে চায়, কারা জমিজমা দখল করেছে এবং কারা ঘরবাড়ি দখল করেছে। জবাবে ওই নারী ‘বলে, তারা মুসলিম মৌলবাদী সংগঠন এবং তারা সব সময় সরকারের শেল্টার পায়। সব সময় পায়’।
জানা যায়, গত ১৭ জুলাই বুধবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতনে বেঁচে ফেরা লোকেদের সাথে কথা বলেন। নিউ ইয়র্কের সল্ট লেক সিটির অনলাইন টেলিভিশন ‘এবিসি৪’ এর অফিসিয়াল ফেসবুকে পেজে এটি সরাসরি সম্প্রচার করে। বার্মা, নিউজিল্যান্ড, ইয়েমেন, চীন, কিউবা, ইরিত্রিয়া, নাইজেরিয়া, তুরস্ক, ভিয়েতনাম, সুদান, ইরাক, আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, শ্রীলঙ্কা, পাকিস্তান, ইরান এবং জার্মানিসহ বিভিন্ন দেশের ২৭ জনের সাথে কথা বলেন ট্রাম্প।
ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর থেকেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনা শুরু হয়। দেশের বিরুদ্ধে ভিনদেশী নেতার কাছে মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে বলে অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। নেটিজেনরা ট্রাম্পের কাছে করা ওই নারীর বক্তব্যের প্রতিবাদ করছেন। অনেকে ওই মহিলার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ আনারও দাবি তুলেছেন।
এবিসি৪ এর ওই ভিডিও পোস্টের কমেন্ট বক্সেই জয় সাহা হৃদয় নামে একজন লিখেন, ‘আমি বাংলাদেশি এবং আমার ধর্ম হিন্দু। আমি এখানে শান্তিতে বাস করছি এবং এখানে মুসলিমদের জন্য কোন শঙ্কা নেই। তিনি (অভিযোগকারী) অবশ্যই ভুল কথা বলছেন’।
সাব্বির আহমেদ মিলন নামে একজন লিখেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। এখানে দীর্ঘদিন ধরে সকল ধর্মের মানুষ তাদের নিজ নিজ ধর্ম পালন করছে। সকল ধর্মের লোকেরা উদযাপন ও উৎসবগুলিতে কাঁধে কাঁধে মিলিয়ে অংশগ্রহণ করে। বাংলাদেশ বিশ্বের সাম্প্রদায়িক সাদৃশ্য একটি উজ্জ্বল উদাহরণ’।
নাসির উদ্দিন নামে একজন লিখেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে মিথ্যা বিবৃতি দেয়া এই মহিলাকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে বের করে দেয়া হোক। তিনি শুধুমাত্র সবুজ কার্ড পেতে মিথ্যা বিবৃতি দিয়েছেন’।
খোঁজ নিয়ে জানা যায় অভিযোগকারী ওই বাংলাদেশী নারী হলো ‘বাংলাদেশ হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ঐক্যপরিষদ’ এর কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক প্রিয়া সাহা।
ভিডিওতে দেখুন প্রিয়া সাহার ন্যাক্কারজন মিথ্যাচার!
/এসএস