
যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসে মিয়ানমারের রাখাইনকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার প্রস্তাব উঠেছে। ১৩ জুন পররাষ্ট্র দপ্তরের দক্ষিণ এশিয়ার জন্য বাজেটবিষয়ক শুনানিতে তিনি এ প্রস্তাব দেন। কংগ্রেসের প্রতিনিধি পরিষদের এশিয়া প্রশান্ত-মহাসাগরীয় উপকমিটির চেয়ারম্যান ব্রাড শেরম্যান মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যকে বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্ত করার বিষয়টি বিবেচনার জন্য পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতি আহ্বান জানান।
ব্রাড শেরম্যান বলেন, সুদান থেকে দক্ষিণ সুদানকে আলাদা করে একটি নতুন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাকে যুক্তরাষ্ট্র যদি সমর্থন করতে পারে, তাহলে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের রোহিঙ্গাদের নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য কেন একই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া যাবে না।তিনি বলেন, মিয়ানমারে একটি গণহত্যাও সংঘটিত হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন যে মিয়ানমার যদি রাখাইনের রোহিঙ্গা নাগরিকদের দায়িত্ব নিতে না পারে, তাহলে যে দেশ তাদের দায়িত্ব নিয়েছে, সেই বাংলাদেশের সঙ্গে রাখাইনকে জুড়ে দেওয়াই তো যৌক্তিক পদক্ষেপ।
জানা গেছে, ট্রাম্প প্রশাসনের প্রতিনিধিত্বকারী কূটনীতিকেরা অবশ্য কংগ্রেসম্যান শেরম্যানের বক্তব্যকে সমর্থন বা নাকচ কোনোটিই করেননি। এর আগে আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে জাতিসংঘের অন্যতম সদস্য রাধিকা বলেছেন, রাষ্ট্রহীন রোহিঙ্গাদের শিকড় রয়েছে মিয়ানমারে। তাদেরকে অবশ্যই নাগরিকত্ব দিতে হবে। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করলেও বৌদ্ধ সংখ্যাগরিষ্ঠ মিয়ানমার মুসলিম রোহিঙ্গাদেরকে নাগরিক হিসেবে স্বীকার করে না।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে রাখাইনে মুসলিমদের ওপর নৃশংসতার শুরু। জীবন বাচাতে লক্ষ লক্ষ রোহিঙ্গা নিজেদের মাতৃভূমি রাইখাইন ত্যাগ করেন, আশ্রয় নেন বাংলাদেশে। মিয়ানমানের সেনাবাহিনীর অমানবিক এই কর্মকাণ্ড নিয়ে গবেষণা করে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। একের পর এক উঠে আসে ভয়াবহ সব চিত্র। সোশ্যাল মিডিয়ায় নিগ্রহের বহু ভিডিও ভাইরাল হয়। এরপরও কিছু দেশ মিয়ানমারের পক্ষ নেয়। রোহিঙ্গাদের দেশে ফেরাতে অনেক তদবির করা হয়েছে কিন্তু কেনো কাজ হয়নি। অনেক দেশ ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর আবেদনের তোয়াক্কা করছে না মিয়ানমান। সর্বশেষ গত বুধবার ( ২৬ জুন) রোহিঙ্গা মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব ফেরত দেওয়ার দাবি জানান জাতিসংঘের ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং মিশনের অন্যতম তদন্তকারী রাধিকা কুমারাস্বামী।
জাতিসংঘের করা রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করছে মিয়ানমার। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় মিয়ানমারের বিরুদ্ধে ভুয়া অভিযোগ উত্থাপন করছে বলে সেই রিপোর্ট উড়িয়ে দিচ্ছে দেশটি। রোহিঙ্গা ইস্যূ নিয়ে প্রথমে অন্তর্জাতিক সংস্থা ও শক্তিশালী দেশগুলো সরব থাকলেও এখন তেমন গুরুত্ব পাচ্ছে না ইস্যূটি। জাতিসংঘের ওই সদস্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরে যেতে চাপ প্রয়োগ যেন বন্ধ না হয় । তিনি বলেছেন, একই সঙ্গে সহিংসতার জন্য যারা দায়ী তাদেরকে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
আইএ/পাবলিক ভয়েস

