
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ঘুষ যে দেবে আর যে নেবে উভয়ই অপরাধী; সেটাই ধরে নিতে হবে। শুধু ঘুষ নিলে তাকে ধরা হবে, তা নয়; যে ঘুষ দেবে তাকেও ধরা হবে। কারণ ঘুষ দেওয়াটাও অপরাধ।
সেভাবেই বিচার করতে হবে। অপরাধ যারা করছে আর অপরাধে যারা উস্কানিদাতা তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা আমরা নিতে চাই।’
আজ বুধবার জাতীয় সংসদের প্রশ্নোত্তরে সংরক্ষিত মহিলা সংসদ সদস্য রওশন আরা মান্নানের সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী একথা বলেন। স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে এ প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠিত হয়।
অপরাধ করলে কেউ পার পাবে না বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোনো ধরনের অপরাধের সঙ্গে আমার দলের কেউও যদি সম্পৃক্ত থাকে, আমি কিন্তু তাদেরও ছাড় দিচ্ছি না; ছাড় দেবো না।
আর অন্য কেউ যদি অপরাধ করে, তারা তো ছাড় পাবেই না। শাসনটা ঘর থেকেই করতে হবে; সেটাই করে যাচ্ছি। কোনো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীর কেউ যদি এ ধরনের অপরাধ করে, তার বিরুদ্ধে আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি এবং এটা অব্যাহত থাকবে।‘সমাজ থেকে অবিচার-অনিয়ম দূর করতে হবে’।
তিনি বলেন, দুর্নীতি আমরা করবো না; দুর্নীতি করতে দেবো না। সবাই এক হয়ে কাজ করলে সমাজ থেকে অনিয়ম দূর করে অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রা অব্যাহত রাখতে পারবো।’ কোনো দেশ যখন অর্থনৈতিক ও সামাজিকভাবে উন্নতি হয়, তখন কিছু কিছু ক্ষেত্রে টাউট-বাটপার বা বিভিন্ন ধরনের লোক সৃষ্টি হয়। কিন্তু তাদের দমন করা শুধু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে দিয়ে সম্ভব নয়, সামাজিকভাবেও করতে হবে।
এর আগে বেগম রওশন আরা মান্নানের তারকা চিহ্নিত প্রশ্নের জবাবে দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে ও দুর্নীতিকে শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সরকারের বিশেষ পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শক্তিশালী করা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার টানা তৃতীয়বার দায়িত্ব গ্রহণের পর দেশের জনগণের কল্যাণে এবং দুর্নীতিমুক্ত দেশ গড়ার লক্ষ্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতি গ্রহণ করেছে।
তাছাড়া দুর্নীতি প্রতিরোধে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) শক্তিশালী করা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম জোরদার এবং আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দুর্নীতি শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনার বিশেষ পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে।’
শেখ হাসিনা বলেন, প্রাতিষ্ঠানিক টিমের মাধ্যমে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা দফতরের প্রাতিষ্ঠানিক দুর্নীতির স্বরূপ এবং কারণ উদ্ঘাটন করে তা প্রতিরোধে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা দফতরে সুপারিশ প্রেরণ করে।
ফলে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা দফতরসমূহ তাদের প্রতিষ্ঠানে সংগঠিত দুর্নীতি প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারছে। দুদকের এরূপ কার্যক্রমের ফলে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা দফতরে দুর্নীতির মাত্রা ক্রমান্বয়ে হ্রাস পাচ্ছে।’
তিনি বলেন, কমিশন দুর্নীতি প্রতিরোধে কর্মকৌশল প্রণয়ন করেছে। এ কর্মকৌশলের আওতায় দুর্নীতি প্রতিরোধে জনসচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে গণশুনানি আয়োজন করা হচ্ছে।
পাশাপাশি সমাজের সৎ ও স্বচ্ছ ব্যক্তিদের নিয়ে দেশের প্রতিটি জেলা-উপজেলায় ‘দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটি; ‘স্কুল-কলেজের সততা সংঘ’ গঠন এবং ‘সততা স্টোর’ স্থাপন করা হয়েছে।
এসব ইতিবাচক কার্যক্রমের ফলে সাধারণ জনগণ দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে। স্কুল-কলেজের কোমলমতি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দুর্নীতিবিরোধী মনোভাব সৃষ্টি হচ্ছে।
আইএ/পাবলিক ভয়েস

