প্রধানমন্ত্রীকে আনতে যাওয়া বিমানের আটক পাইলটের পাসপোর্ট পাঠানো হলো কাতারে

প্রকাশিত: ৯:৩২ অপরাহ্ণ, জুন ৬, ২০১৯

ত্রিদেশীয় সফর শেষে প্রধানমন্ত্রীকে আনতে কাতার গিয়েছিলো বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইট। কিন্তু পাইলট ফজল মাহমুদের পাসপোর্ট না থাকায় তাকে আটক করে কাতার ইমিগ্রেশন।

পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর রিজেন্ট এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তার পাসপোর্ট পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতেই কাতারে তার পাসপোর্ট পৌঁছাবে।

আজ বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৭টায় রিজেন্ট এয়ারলাইন্সের দোহাগামী শিডিউল ফ্লাইটে পাসপোর্টটি পাঠানো হয়েছে।

কাতার হয়ে এদিকে শনিবার প্রধানমন্ত্রীর দেশে ফেরার কথা। নিয়মানুযায়ী প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইটের পাইলটকে বিশ্রামের জন্য একদিন আগেই গন্তব্যে উপস্থিত থাকতে হবে।

সে অনুসারে কালকে যদি কোনো পাইলটকে পাঠানো হয়, তবে তার কোনো বিশ্রাম থাকবে না। কাজেই কাতার ইমিগ্রেশনে আটক ফজল মাহমুদই প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইট চালাতে পারেন।

একটি সূত্র জানিয়েছে, কাতার ইমিগ্রেশনে আটক পাইলট ফজল মাহমুদ প্রধানমন্ত্রীকে বহন করা ফ্লাইট চালাবেন কিনা, এ বিষয়ে শুক্রবার সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। কেননা ফজল মাহমুদকে নিয়ে লেখালেখির কারণে তিনি আতঙ্কিত অবস্থায় আছেন, কাজেই তাকে প্রত্যাহার করাও হতে পারে।

তবে পাসপোর্ট ছাড়া তিনি কেন যাচ্ছিলেন, তা নিয়ে বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তদন্ত করছে। তদন্তের পর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।

ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ এখন দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের ইমিগ্রেশনে অবস্থান করছেন।

জানা গেছে, বিদেশ সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে বুধবার রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের একটি ড্রিমলাইনার দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যায়।

বিশেষ এই বিমানের পাইলট ছিলেন ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। তিনি পাসপোর্ট ছাড়াই কাতার যান, যেটি ধরা পড়ে সেদেশের ইমিগ্রেশনে। পরে তাকে ইমিগ্রেশনে আটকে রাখা হয়।

আইন অনুযায়ী, পাসপোর্ট ছাড়া কারো দেশত্যাগ কিংবা অন্য দেশে প্রবেশের সুযোগ নেই। ফজল মাহমুদ কাতার ইমিগ্রেশনকে জানান, তার পাসপোর্ট বিমানের ফ্লাইট অপারেশন রুমের লকারে।

পরে বিমানের নিরাপত্তা মহাব্যবস্থাপকের কাছ থেকে চাবি নিয়ে ফজল মাহমুদের পাসপোর্ট উদ্ধার করেন বিমানের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ মহাব্যবস্থাপক (জিএম সেন্ট্রাল কন্ট্রোল ) আশরাফ হোসেন।

তিনি জানান, বিমানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ক্যাপ্টেন জামিল আহমেদের নির্দেশনা মোতাবেক তিনি পাসপোর্ট উদ্ধার করেন এবং এই পাসপোর্ট কাতারে পাঠানোর উদ্যোগ নেন তিনি।

বৃহস্পতিবার কাতার এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে ফজল মাহমুদের পাসপোর্ট দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পাঠানোর চেষ্টা করে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স। কিন্তু কাতার এয়ারলাইন্স পাসপোর্ট বহনে অস্বীকৃতি জানায়।

কাতার এয়ারলাইন্স জানায়, স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া একজনের পাসপোর্ট্‌ বহনের নিয়ম নেই। পরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের পর পাসপোর্ট পাঠানো হয়।

এদিকে পাসপোর্ট ছাড়া একজন পাইলট কীভাবে নিজ দেশের ইমিগ্রেশন পার হয়ে বিদেশ গেলেন এটি নিয়ে তোলপাড় চলছে। আইন অনুযায়ী পাসপোর্ট ছাড়া দেশত্যাগ ও অন্য দেশে প্রবেশের সুযোগ নেই।

এ বিষয়ে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সচিব মুহিবুল বলেন, বিষয়টি ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদের ব্যক্তিগত গাফিলতি। তিনি দেশে ফিরে আসার পর আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দেশে সরকারি সফরের অংশ হিসেবে বর্তমানে ফিনল্যান্ডে অবস্থান করছেন। ৮ জুন দোহা বিমানবন্দর হয়ে তার দেশে ফেরার কথা রয়েছে। তাকে বহন করতে বোয়িং ৭৮৭ মডেলের ড্রিমলাইনার বর্তমানে কাতার অবস্থান করছে।

/এসএস

মন্তব্য করুন