
পাবলিক ভয়েস: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘যতবার পশ্চিম পাকিস্তানের রাজধানী পরিবর্তন হয়েছে তার অর্থ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে। টাকা দিতে হতো আমাদের আর ভোগ করতো তারা।’
আজ বুধবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানের শোষণনীতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘পাকিস্তান মরুভূমির দেশ। আমাদের অর্থ দিয়ে মরুভূমিতে ফুল ফুটিয়েছিল পাকিস্তান। আর আমাদের দেশকে মরুভূমিতে পরিণত করতে চেয়েছিল তারা।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পাট-চা-তামাক বিদেশে রফতানি করে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতাম। সব নিয়ে যেত পাকিস্তানিরা। পাকিস্তান রাজধানী পরিবর্তন করেছে বারবার। একটা ছিল করাচি, এরপর ইসলামাবাদ এরপর পিন্ডি। যতবার রাজধানী পরিবর্তন হয়েছে তার অর্থ আমাদের কাছ থেকে নিয়েছে। টাকা দিতে হতো আমাদের আর ভোগ করত তারা।’
তিনি বলেন, ‘জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান পাকিস্তানের এই বৈষম্যনীতির অবসান ঘটাতে চেয়েছিলেন। অসহযোগ আন্দোলনকে সশস্ত্র বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশের বিজয় ছিনিয়ে এনেছেন বঙ্গবন্ধু। পাকিস্তানের শেষ সৈন্য বিতাড়ন না হওয়া পর্যন্ত যুদ্ধ চালিয়ে যেতে হবে ওয়ারলেসের মাধ্যমে এই ঘোষণা কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমান দিয়েছিলেন। ওয়ারলেসের এই বার্তার কথা পাকিস্তান জানার পর তাকে ধরে নিয়ে গেল। তার বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হলো, তাকে ফাঁসি দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা মিত্র বাহিনীর সহযোগিতা পেলাম। তাদের কাছে ৯৬ হাজার সৈন্য আত্মসমর্পণ করে। আন্তর্জাতিক চাপে ইয়াহিয়ার পতন হলো, ভুট্টো রাষ্ট্রপতি হলেন। বঙ্গবন্ধু মুক্তি পেলেন। ১০ জানুয়ারি তিনি দেশে ফিরে এলেন।
মাত্র ৯ মাসের মধ্যে তিনি আমাদের সংবিধান দিলেন। সবচেয়ে বড় কথা হলো, মিত্রবাহিনী বাংলাদেশ ছেড়ে গেল। পৃথিবীর কোনো দেশে মিত্রবাহিনী ফেরত যাওয়ার নজির নেই। বাংলাদেশ একমাত্র ব্যতিক্রম। এটা সম্ভব হয়েছিল শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাধীনচেতা নেতৃত্বের কারণে’।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধুর অবদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশের পুনর্গঠনে কাজ করেছেন শেখ মুজিবুর রহমান। ১২৬টি দেশ থেকে স্বীকৃতি এনেছেন। প্রত্যেকটি আন্তর্জাতিক সংস্থার সদস্যপদ পেয়েছে বাংলাদেশ। এক কোটি শরণার্থী দেশে ফেরত এসেছিল। তাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরও বাংলাদেশে ষড়যন্ত্র থেমে ছিল না। আ.লীগের নেতাকর্মীদের হত্যা করা হয়। ব্যাংক লুট করা হয়, পাটের গুদামে আগুন দেওয়া হয়। ষড়যন্ত্রকারীরা এ জন্য হাত করে আমাদের কিছু লোককেও।’

