‘হুজুর হলে সায়েমের বিরুদ্ধে হুমড়ি খেয়ে পড়তো মিডিয়াগুলো’

প্রকাশিত: ৭:২১ অপরাহ্ণ, এপ্রিল ২৭, ২০২১

ইসমাঈল আযহার
পাবলিক ভয়েস

গুলশানে ১ লাখ টাকা ভাড়ায় ফ্ল্যাটে থাকতেন কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী মোসারাত জাহান মুনিয়া। বিয়ে ছাড়াই প্রেমের সম্পর্কের জেড়ে তার ফ্ল্যাটে নিয়মিত যাতায়াত ছিল বসুন্ধরা গ্রুপের এমডির।

সোমবার (২৫ এপ্রিল) সন্ধ্যার পর মোসারাত জাহান মুনিয়ার মরদেহ উদ্ধার হয় তার ফ্ল্যাট থেকে। ঘরে ফ্যানের সাথে তার মরদেহ ঝুলতে দেখা যায়। তাকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছেন মুনিয়ার বড় বোন।

মামলা সূত্রে জানা যায়, মেয়েটির সঙ্গে বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি সায়েম সোবহান আনভীরের সম্পর্ক দুই বছরের। এক বছর মেয়েটিকে বনানীর একটি ফ্ল্যাটে রাখেন। গত মার্চে গুলশানের এই ফ্ল্যাটে ওঠেন মেয়েটি।

এ ঘটনায় মিডিয়াগুলোর রিপোর্টে বলা হচ্ছে, একজন শীর্ষ স্থানীয় ব্যবসায়ী/একটি শীর্ষস্থীয় ব্যবসায়ী গ্রুপের এমডির প্রেমের সম্পর্ক ছিল মুনিয়ার সঙ্গে। আনভীরের নাম সবার সামনে চলে আসার পরও মিডিয়াগুলোর  তার নাম নিচ্ছে না। এতে অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। অপরাধটিকে ধামাচাপা দেওয়ার জন্য এটাকে অপচেষ্টা হিসেবেও দেখছেন অনেকে।

আরও পড়ুন-

তরুণীর লাশ উদ্ধারের ঘটনায় ‘বসুন্ধরা’র এমডির বিরুদ্ধে মামলা

বিয়ে ছাড়াই মুনিয়ার ফ্ল্যাটে নিয়মিত যেতেন বসুন্ধরা গ্রুপের এমডি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ পাবলিক ভয়েসের ফেসবুক পেজেও অনেকেই ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তাদের প্রশ্ন, যদি সায়েম সোবহান আনভীর হুজুর হতো তাহলে মিডিয়াগুলো একযোগে লেগে পড়তো। হুজুর নয় বলে সায়েম ও তার অবৈধ সম্পর্ক নিয়ে মিডিয়াগুলোর মাথা ব্যথা নেই।

এরইমধ্যে সায়েম ও মুনিয়ার  একটি ফোনালাপ সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে সায়েমকে খুব বাজেভাবে গালাগালি দিতে শোনা গেছে মুনিয়াকে। ৫০ লাখ টাকা চুরির কথা বললে মুনিয়া কান্নারত কণ্ঠে বলছেন, আমাকে এমন অপবাদ দিয়েন না।

মুনিয়া অন্তঃস্বত্তা ছিলেন কিনা সে প্রশ্নও ওঠেছে। তার ময়না তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর অনেক প্রশ্নের জবাব মিলতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

২১ বছর বয়সী মুনিয়ার বাড়ি কুমিল্লা শহরে। তার পরিবার সেখানেই থাকে। গুলশান বিভাগের অতিরিক্ত উপকমিশনার নাজমুল হাসান গণমাধ্যমকে বলেন, দেশের একটি শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্ক ছিল।

আরও পড়ুন-

সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে সায়েম-মুনিয়ার ফোনালাপ

মুনিয়াকে হত্যা করা হয়েছে: মিজানুর রহমান

তিনি ফ্ল্যাটে যাতায়াত করতেন বলেও আমরা জানতে পেরেছি। পুলিশ সিসি ক্যামেরার ফুটেজ ও মোসারাতের ব্যবহৃত ডিজিটাল ডিভাইসগুলো জব্দ করেছে।

মুনিয়া আত্মহত্যা করেনি, তাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন তার ভগ্নিপতি মিজানুর রহমান।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গের সামনে উপস্থিত সাংবাদিকদের মঙ্গলবার (২৭ এপ্রিল) দুপুরে তিনি এসব কথা বলেন। এসময় মুনিয়ার বোন নুসরাত জাহান উপস্থিত ছিলেন।

মিজানুর রহমান ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমার শ্যালিকা (মুনিয়া) আত্মহত্যা করেনি। তাকে হত্যা করা হয়েছে। দুদিন আগেও তার সঙ্গে কথা বলেছি। আত্মহত্যা করবে এমন কোনো মোটিভেশন ছিল না। আমাদের মনে হচ্ছে, তাকে হত্যা করা হয়েছে। এখন আমরা ফরেনসিক রিপোর্টের অপেক্ষা করবো।

আইএ/

মন্তব্য করুন