আল্লামা শফী রহ. এর মৃত্যু স্বাভাবিক নয়, মুফতি ফয়জুল্লাহর তদন্ত দাবি

প্রকাশিত: ৯:৩৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১৬, ২০২০

হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব ও ইসলামী ঐক্য জোটের মহাসচিব আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ আল্লামা আহম্মদ শফীর রহ. এর মৃত্যু স্বাভাবিক নয় দাবি করে তদন্তের দাবি করেছেন। বুধবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রামে আল্লামা শাহ আহমদ শফীর জীবনকর্ম, অবদান শীর্ষক আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় তিনি এ কথা বলেন।

নগরীর প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। মতবিনিময় সভায় আল্লামা শফীর ছেলে আনাস মাদানী, হেফাজতে ইসলামের আগের কমিটির যুগ্ন সচিব মাইনুদ্দিন রুহী, মাওলানা সলিমুল্লাহসহ উপস্থিত ছিলেন।

আলোচনা ও মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আল্লামা মুফতি ফয়জুল্লাহ বলেন, এখন থেকে আমরা সামনে যাবো, পেছনের দিকে যাবো না। যারা ষড়যন্ত্র করেছে, মিথ্যাচার করেছে, অর্থের যোগান দিয়েছে, তারাই হেফাজতে ইসলামের মূল শত্রু। আমাদের আন্দোলনকে যেমন সামনের দিকে এগিয়ে নিতে হবে, তেমনি যেকোনো ধরনের ত্যাগ স্বীকার করার জন্য আলেম-ওলামাদের প্রস্তুত থাকতে হবে।

তিনি বলেন, ঢাকায়, ফটিকছড়ি কিংবা হাটহাজারীতে কারা ষড়যন্ত্র করেছে সময় হলেই জাতির কাছে সব প্রকাশ করব। আল্লামা শফীর মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধান নিয়ে সরকার উদ্যোগী না হলে মানুষ আইন নিজের হাতে তুলে নিতে বাধ্য হবেন।

এর বাইরে ২০১৩ সালে শাপলা চত্বরের বিষয়টিকে এককভাবে আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরীকে দায়ী বলেও উল্লেখ করেন মুফতী ফয়জুল্লাহ।

এ সময় হেফাজতে ইসলামের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব মাইনুদ্দিন রুহী অভিযোগ করে বলেন, পরিকল্পিতভাবে আল্লামা আহমদ শফীকে হত্যা করা হয়েছে। এ ঘটনার সাথে যারা জড়িত, তাদের বিচার বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে।

মাইনুদ্দিন রুহী বলেন, বর্তমান হেফাজতের ১৫১ কমিটির মধ্যে জুনায়েদ জুনায়েদ বাবুনগরীর ২২ জন আত্মীয় স্বজন রয়েছে। জমিয়াতুল ওলামায়ে ইসলাম নামে একটা দলের ৩৭ জন স্থান পেয়েছে বাবুনগরীর কমিটিতে। হেফাজতের বর্তমান তথাকথিত কমিটি স্বজনপ্রীতির ফসল বলেও উল্লেখ করেন তিনি। ক্ষমতাকে পাকাপুক্ত করতে বাবুনগরী নিজের পরিবার থেকৈ ২২ জনকে হেফাজতের কমিটিতে রেখেছেন বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

তাদের অভিযোগ, আল্লামা শফির ওপর তিলে তিলে নির্যাতন করা হয়েছে। গৃহবন্দি করে তিলে তিলে নির্যাতনের মাধ্যমে শাহাদাত বরণ করতে বাধ্য করা হয়েছে। খাবার, ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। অ্যাম্বুলেন্স বন্ধ ছিল। এটাই হত্যার মূল কারণ।

এ অনুষ্ঠানে মাওলানা সলিমুল্লাহ বলেন, শাপলা চত্বরের ঘটনার দায়ভার জুনায়েদ বাবু নগরীকে নিতে হবে। সেই কর্মসূচির মিটিংয়ে অনেকে সন্ধ্যা ছয়টার মধ্যে অনুষ্ঠান শেষ করতে বললেও বাবুনগরী সারারাত সেখানে অবস্থান নেওয়ার কথা বলেন। তিনি আল্লামা শফিকে জানান, সারা দেশ থেকে ছেলেরা আসবে। সবাই সারারাত থাকলে সেনাবাহিনী আসবে। তার আগে আল্লামা শফিও সিদ্ধান্ত নেন ছয়টা পর্যন্ত অনুষ্ঠান চলবে। কিন্তু তিনি হুজুরকে না জানিয়ে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে দিয়েছেন। পরে রাজধানীর শাপলা চত্বরে নিহতদের পরিবারের জন্য ফান্ড কালেকশনের কথা বললেও তিনি করেন নি।

তিনি বলেন, ৫ মের শাপলা চত্বরের ঘটনার জন্য পুরোপুরি দায়ী জুনায়েদ বাবুনগরী। সেদিন আল্লামা শফি মুখ ফুটে কোনো শব্দ বলেনি। শাপলা চত্বরে অনুষ্ঠান ৬টায় শেষ করে দেয়ার কথা ছিল। কিন্তু বর্তমান হেফাজত আমিরের নিজের ইচ্ছায় শাপলা চত্বরের অবস্থান দীর্ঘায়িত করেন। শাপলা চত্বরে যারা আহত হয়েছিল তাদের জন্য ফান্ড গঠন করার কথা ছিল। কিন্তু বাবুনগরীর খামখেয়ালির কারণে সেটিও করা হয়নি বলে অভিযোগ সলিমুল্লাহর।

ইসমাঈল আযহার/পিভি

মন্তব্য করুন