
টাঙ্গাইলে পায়ে ব্যথা হওয়ায় প্রতিবন্ধী দাবি করে সরকারি ভাতা তুলছেন এক আওয়ামী লীগ নেতা। ওই নেতার নাম গোপাল গোস্বামী (৬৫)। তিনি মির্জাপুর পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। এছাড়াও ওই এলাকার জীতেন সূত্রধর (৬২) নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করে ভাতা নিচ্ছেন।
প্রতিবন্ধী না হয়েও তারা দু’জন পৌরসভা ও সমাজসেবা কার্যালয়ের প্রতিবন্ধী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়ে সরকারি ভাতা নেয়ায় বঞ্চিত হচ্ছেন প্রকৃত প্রতিবন্ধীরা।
আওয়ামী লীগ নেতা গোপাল গোস্বামী পৌর এলাকার আন্ধরা মাঝিপাড়া গ্রামের মৃত খিতিশ গোস্বামীর ছেলে। আর জীতেন সূত্রধর একই ওয়ার্ডের সূত্রধর পাড়ার মৃত নবদ্বীত সূত্রধরের ছেলে। জীতেন সূত্রধর একজন ফার্নিচার ব্যবসায়ী। গোপাল গোস্বামী মির্জাপুর সদর ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্যও।
এ বিষয়ে মির্জাপুর পৌরসভার ভারপ্রাপ্ত মেয়র চন্দনা দে জানান, প্রতিবন্ধীদের যাচাই-বাছাই করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক। তবে মেয়রের প্রতিবেশী জীতেন ও গোপাল প্রকৃত প্রতিবন্ধী কিনা জানতে চাইলে মেয়র কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।
তবে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক জানান, প্রতিবন্ধীদের নামের তালিকা পৌরসভার মেয়র প্রস্তুত করে সমাজসেবা কার্যালয়ে জমা দিয়েছেন বলে জেনেছেন। তারা প্রকৃত প্রতিবন্ধী কিনা তা সঠিক যাচাই-বাছাই করে পরবর্তীতে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জীতেন সূত্রধর জানান, পুত্রবধূ কিভাবে তার নাম প্রতিবন্ধী তালিকাভুক্ত করেছেন তা তার জানা নেই। আর গোপাল গোস্বামী নিজেকে প্রতিবন্ধী দাবি করে বলেন, সড়ক দুর্ঘটনায় তিনি আহত হয়েছিলেন। পায়ে ব্যথা আছে। তার চিকিৎসাপত্র আছে। প্রতিবন্ধী কার্ড নেই।
এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলম মিয়া বলেন, গোপাল গোস্বামী কেন প্রতিবন্ধী হবেন? তিনি যে প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন সেটাই আমার জানা নেই। এটি এক ধরনের প্রতারণা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মীর শরীফ মাহমুদ জানান, গোপাল গোস্বামীকে আমি চিনি। প্রতিবন্ধী না হয়েও প্রতিবন্ধী ভাতা নেয়ার বিষয়টি মারাত্মক অপরাধ ও দুঃখজনক।
এ বিষয়ে উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মোহাম্মদ খাইরুল ইসলাম বলেন, জরিপ ব্যতীত কাউকে ভাতার জন্য তালিকাভুক্ত করা হয় না। এরপরও কেউ প্রতারণা করে ভাতার আওতাভুক্ত হয়ে থাকলে যাচাই-বাছাই করে বাতিল করা হবে। তবে তাদের নামে কোনো জরিপ রিপোর্ট জমা নেই বলেও জানান তিনি।
এমএম/পাবলিকভয়েস

