নাগরিকত্ব আইন মুসলিমবিদ্বেষী নয়: মোদি

প্রকাশিত: ১০:৩১ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ২২, ২০১৯

ভারতের সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন মুসলিমবিদ্বেষী নয় বলে দাবি করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। গত ১২ ডিসেম্বর পাস হওয়া আইনটির বিরুদ্ধে বিশেষ করে দেশটির উত্তরপূর্বাঞ্চলে ব্যাপক বিক্ষোভের মুখে রবিবার এমন দাবি করেন মোদি। এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে যুক্তরাজ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম রয়টার্স।

মোদি সরকারের নতুন নাগরিকত্ব আইনবিরোধী বিক্ষোভকে কেন্দ্র করে ইতোমধ্যেই অন্তত ২২ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে। আহত হয়েছেন আরও বিপুলসংখ্যক বিক্ষোভকারী। ধরপাকড়ের শিকার হয়েছে শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে সেনা কর্মকর্তা, রাজনীতিক ও বিপুল সংখ্যক সাধারণ মানুষ। এরপরও বিক্ষোভ অব্যাহত রয়েছে।

এমন পরিস্থিতিতে রবিবার রাজধানী দিল্লিতে এক সমাবেশের আয়োজন করে ভারতের উগ্র হিন্দুত্ববাদী ক্ষমতাসীন দল বিজেপি। এতে অংশ নেয় কয়েক হাজার বিজেপি সমর্থক। এই সমাবেশেই নতুন নাগরিকত্ব আইন মুসলিমবিদ্বেষী নয় বলে দাবি করেন মোদি।

রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, আগামী বছরই দিল্লির রাজ্য সরকারের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। গত ১১ ডিসেম্বর বিতর্কিত নাগরিকত্ব আইন পাসের পর এ নির্বাচনকে বিজেপি-র জন্য প্রথম বড় ধরনের নির্বাচনি পরীক্ষা হিসেবে দেখা হচ্ছে। দিল্লির সমাবেশে মোদি বলেন, নাগরিকত্ব আইন দেশের কোনও মানুষের জন্য নয়। তা সে হিন্দুই হোক বা মুসলমান। এ আইন ভারতের ১৩০ কোটি মানুষকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।

মুসলিমদের নিশ্চয়তা দিচ্ছি এই আইনে তাদের কোনও পরিবর্তন হবে না। মুসলিমদের বন্দিশিবিরে পাঠানোর খবরকে কংগ্রেস ও নকশালদের প্রচারণা বলেও দাবি করেন তিনি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, শোষিত, নিপীড়িত মানুষদের জন্য এই বিল পাস করেছে পার্লামেন্ট। গণতন্ত্রের এই মন্দিরকে দাঁড়িয়ে সম্মান করুন।

যারা এই বিল পাস করিয়েছেন তাদের সম্মান করুন। নরেন্দ্র মোদি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে ভারতের শান্তি শৃঙ্খলা বজায় রাখতে গিয়ে ৩৩ হাজার পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছে। তারা কি ধর্ম দেখে শহীদ হয়েছে? মানুষকে ভুল বুঝিয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষেপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। একে সমর্থন করবেন!

ভেবে দেখুন। ধর্মীয় পক্ষপাতিত্ব ছাড়াই সরকার সংস্কারের সূচনা করেছে বলেও দাবি করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এদিকে বুকারজয়ী ভারতীয় লেখক ও অ্যাকটিভিস্ট অরুন্ধতী রায় বলেছেন, ‘অসাংবিধানিক সিএবি ও এনআরসি-র বিরুদ্ধে বিক্ষোভে সবাই অংশ নিয়েছে।

দলিত, মুসলিম, হিন্দু, খ্রিস্টান, শিক, আদিবাসী, মার্কসবাদী, অম্বেদকারবাদী, কৃষক, শ্রমিক, গবেষক, লেখক, কবি, শিল্পী ও শিক্ষার্থী-সবাই অংশ এ বিক্ষোভে নিয়েছে। এখন আপনারা (সরকার) আমাদের থামাতে পারবেন না। ভারত জেগে উঠেছে। সরকারের অবস্থান স্পষ্ট হয়েছে। আজ এমন দিন, যখন ভালোবাসা আর সংহতি ধর্মান্ধতা ও ফ্যাসিবাদের মুখোমুখি।’

আই.এ/

মন্তব্য করুন