মান্দায় গ্রাহকের ১০ লক্ষাধিক টাকা নিয়ে ‘যমুনা ফাউন্ডেশন’ নামের এনজিও উধাও

প্রকাশিত: ৬:১৪ অপরাহ্ণ, ডিসেম্বর ১০, ২০১৯

নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁর মান্দায় গ্রাহকের অন্তত ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে রাতের আঁধারে উধাও হয়েছে যমুনা ফাউন্ডেশন নামের একটি বেসরকারি সংস্থা। মঙ্গলবার সকালে গ্রাহকরা ঋণ নিতে এসে সংস্থার কাউকে না পেয়ে হৈচৈ শুরু করলে ঘটনাটি প্রকাশ হয়ে পড়ে।

উপজেলার ভালাইন ইউনিয়নের বৈদ্যপুর বাজারের এ ঘটনায় এলাকাজুড়ে তোলপাড়া শুরু হয়েছে।

ভুক্তভোগী গ্রাহকরা জানান, যমুনা ফাউন্ডেশন নামের ওই সংস্থার তিনজন মাঠকর্মি ও একজন ব্যবস্থাপক পরিচয়ে গত কয়েকদিন ধরে সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করে। এসময় মাসিক কিস্তিতে ঋণ দেওয়ার কথা বলে গ্রাহকের নিকট থেকে আমানতের টাকা সংগ্রহ করে সংস্থার কর্মিরা।

গ্রাহকরা জানান, ১০ হাজার টাকা ঋণের বিপরীতে তাদের নিকট থেকে জামানত নেয়া হয়েছে ১ হাজার করে টাকা। গত রোববার বৈদ্যপুর বাজারের এনামুল হকের বাড়ি ভাড়া নিয়ে সংস্থার কার্যক্রম শুরু করেন উধাও হওয়া চারব্যক্তি। এসময় তারা ওই বাসায় ‘যমুনা ফাউন্ডেশন’ নামে একটি ব্যানার টাঙিয়ে দেন। এতে ওই সংস্থার রেজি: নম্বর উল্লেখ ছিল ঢ-০০৮২০/৯৮।

উপজেলার জামদই গ্রামের মমতাজ হোসেন জানান, আড়াই লাখ টাকা ঋণ দেওয়ার শর্তে আমার নিকট থেকে তারা ২৫ হাজার টাকা হাতিয়ে নেন। মঙ্গলবার সকালে আমাকে ঋণের আড়াই লাখ টাকা দেওয়ার কথা ছিলো। সকালে এসে দেখি অফিস খোলা রয়েছে। কিন্তু অফিসে কেউ নেই। তাদের ব্যবহৃত মুঠোফোনও বন্ধ পাওয়া যায়।

ভুক্তভোগী সেতাবুল ইসলাম, লালবানু বিবি, সোহেল রানা, হাজেরা বিবিসহ আরও অনেকে জানান, ভালাইন ইউনিয়নের তুড়–কগ্রাম, গাংতা, চুকাইনগর, জামদই, চকজামদই, ভালাইন, বনতোসরসহ ৮-১০টি গ্রামের শতাধিক গ্রাহকের নিকট থেকে যমুনা ফাউন্ডেশনের ব্যবস্থাপক ও মাঠকর্মি পরিচয়দানকারী ব্যক্তিরা ১০ লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নিয়ে উধাও হয়েছেন।

বাড়ির মালিক এনামুল হক জানান, মাসিক ৬ হাজার টাকা চুক্তিতে যমুনা ফাউন্ডেশনের লোকজন আমার বাসার নিচতলার দুটি কক্ষ ভাড়া নেন। আজ মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে সংস্থাটির উদ্বোধন হওয়ার কথা ছিলো। উদ্বোধন শেষে তাদের সঙ্গে চুক্তিনামা সম্পাদনসহ যাবতীয় তথ্য দিতে চেয়েছিলেন তারা। এ কারণে তাদের নিকট থেকে জাতীয় পরিচয়পত্রের কপি কিংবা সংস্থার কোনো কাগজপত্র নেয়া হয়নি। তবে, ভাড়া নেয়ার সময় গোপালগঞ্জ জেলার বাসিন্দা পরিচয় দিয়েছিলো তারা।

ভালাইন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ইব্রাহীম আলী বাবু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, বৈদ্যপুর বাজারে নতুন একটি এনজিওর কার্যক্রম চালু করা হয়েছে এ বিষয়ে আমাকে কেউ অবহিত করেনি। মঙ্গলবার সকালে সংস্থার লোকজন উধাও হওয়ার পর বিষয়টি আমি জানতে পেরেছি। প্রাথমিকভাবে ধারণা করছি, ভুয়া ওই সংস্থার কর্মিরা এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে।

মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোজাফফর হোসেন জানান, সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থলে একজন অফিসার পাঠিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতে পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

/এসএস

মন্তব্য করুন