
আব্দুল্লাহ আল মুবিন, প্রতিনিধি: কিশোরগঞ্জ শহর থেকে ১০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্ব দিকে করিমগঞ্জ উপজেলার নরসুন্দা নদীর তীরে ঝোপঝাড়ঘেরা একটি স্থানই ঐতিহাসিক জঙ্গলবাড়ি। এখনই সংরক্ষণ করা না হলে ঐতিহাসিক এ বাড়িটির কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। এখানে রয়েছে ঈশা খার স্মৃতিবিজড়িত ‘প্রাসাদ প্রাচীর’সহ আরও কিছু ভবন।
কিশোরগঞ্জ জেলার করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নে অবস্থিত মহাবীর ঈশা খাঁর স্মৃতিজড়িত এ ‘জঙ্গলবাড়ি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়েছেন স্থানীয় গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা। ৮ ডিসেম্বর শনিবার ঈশা খাঁর বাড়ি পরিদর্শন করে তারা এ উদ্যোগ গ্রহণ করেন।

জরিপকাজে অংশ নেন গণপূর্ত বিভাগের ময়মনসিংহ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. এনামুল হক, কিশোরগঞ্জ গণপূর্ত উপবিভাগ-১ এর উপসহকারী প্রকৌশলী মো. শাহজাহান মিয়া প্রমুখ। জরিপকাজের সহযোগিতায় ছিলেন কিশোরগঞ্জ আরকিওলজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি আমিনুল হক সাদী, সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান জামাল দাদ খান।

ময়মনসিংহ বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মো. এনামুল হক এ ব্যাপারে বলেন, কয়েক বছর ধরে ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি সংরক্ষণের উদ্যোগ নিয়ে আসলেও সময়ের অভাবে তা আর হয়ে উঠছে না। এবার আমরা শক্ত হাতে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছি। যত দ্রুত সম্ভব জঙ্গলবাড়ি সংরক্ষণের প্রকল্প নেওয়া হবে।

কিশোরগঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে জঙ্গলবাড়ির ইতিহাস নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে গবেষক আমিনুল হক সাদী জানান, সংরক্ষণের অভাবে বিপন্ন হয়ে পড়েছে ঈশা খার জঙ্গলবাড়ি। গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীরা যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, আমি তাদের এ উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই। আসা করি এর দ্বারা মহাবীর ঈশা খাঁর জঙ্গলবাড়ি সংরক্ষণে আমার দীর্ঘদিনের গবেষণা সার্থক হবে।
সরেজমিনে পরিদর্শন করে আমিনুল হক সাদী পাবলিকভয়েসের প্রতিবেদককে জানান, দুর্গনগরীর মূল ভবনেও ঈশা খাঁর উত্তর পুরুষের কয়েকটি পরিবার বসবাস করছে। ভবনটিতে ফাটল দেখা দেওয়ায় ঝুঁকির মধ্যে কাটছে তাদের দিন।

ঈশা খার ১৫তম উত্তর পুরুষ দেওয়ান জামাল দাদ খান বলেন, মহাবীর ঈশা খানের দ্বিতীয় রাজধানী জঙ্গলবাড়ির দুর্গনগরী ও হাবেলি সংস্কার না হওয়ায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে। বাড়িটিকে সংস্কার করে জাদুঘরে রূপান্তরিত করে এলাকাটিকে প্রত্নপল্লী হিসেবে গড়ে তোলা হলে এখান থেকে সরকারেরও আয় হতে পারে।
তিনি জানান, ঈশা খার ৬০ একর জমির মধ্যে বর্তমানে তাদের দখলে রয়েছে মাত্র পাঁচ একর। জঙ্গলবাড়ি দুর্গ বহুদিন ধরেই বিপন্ন।
আই.এ/

