রোহিঙ্গা মুসলিমদের ওপর নির্যাতনের নতুন ভিডিও প্রকাশ (ভিডিও)

প্রকাশিত: ১১:০৩ পূর্বাহ্ণ, নভেম্বর ২৫, ২০১৯

মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের সেনাবাহিনীর হত্যা নির্যাতনের নতুন ভিডিও প্রকাশ করেছে কাতারভিত্তিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আল-জাজিরা। আন্তর্জাতিক আদালতে মিয়ানমারের বিচার শুরুর ঠিক দুই সপ্তাহ আগে প্রকাশিত তথ্যচিত্রটি রোহিঙ্গা নির্যাতনের অন্যতম প্রমাণ হিসেবে ভূমিকা রাখবে বলে মনে করা হচ্ছে।

এতে বলা হয়, ‘জার্মানির নাৎসি বাহিনীর মতো বিশেষ বাহিনী দিয়ে পরিকল্পিতভাবে রোহিঙ্গা নৃশংসতায় মেতে ওঠে মিয়ানমার সরকার।  নদীতে পড়ে থাকা সন্তানদের মরদেহ তুলে আনছে তাদের পরিবার। বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগে দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয় আরও অনেকের।’ আল-জাজিরার প্রকাশিত নতুন ভিডিওতে, মিয়ানমার সেনাবাহিনীকে রোহিঙ্গাদের ওপর এভাবেই নৃশংস অত্যাচার নির্যাতনে মেতে উঠতে দেখা যায়। ভয়াবহ সেই নির্যাতনের বর্ণনা দেয় রোহিঙ্গারা।

তারা বলেন, মিয়ানমার সেনারা আমাদের সন্তানদের আগুনে ছুঁড়ে দিয়েছে। আমাদের বাড়ি আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। আমাদের মুখ এমন দিকে ঘুরিয়ে রাখতে বলা হয় যাতে আমরা আমাদের বাড়ি পুড়ে যাওয়ার দৃশ্য না দেখতে পারি। তারা আমাদের গণধর্ষণ করেছে ‘ একজন নারী জানান, তিনি পাঁচ মাস পর জানতে পারেছেন যে, তিনি আমি অন্তঃসত্ত্বা।

মিয়ানমারের শিক্ষাবিদ ড. মং জার্নি বলেন, মূলত ১৯৬৬ সালের দিক থেকে রোহিঙ্গাদের সমস্যা হিসেবে দেখতে শুরু করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। আর এই রোহিঙ্গাদের দমনে জার্মানির নাৎসি বাহিনীর মতো নাসাকা থেকে শুরু করে এসএস বাহিনী গঠন করে মিয়ানমার।

এক রোহিঙ্গা বলেন, আমরা বাংলাদেশ থেকে আসা অভিবাসী নই। বরং মিয়ানমারের এ বাড়িটিতে আমার জন্ম ১৮৯০ সালে যেটি আমার পিতামহ নির্মাণ করেছিলেন।

জাতিসংঘের সর্বোচ্চ আদালতে মিয়ানমারের বিচার শুরুর ঠিক দুই সপ্তাহ আগে তথ্যচিত্রটি প্রকাশ করল আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা। এটিকে রোহিঙ্গা নির্যাতনের প্রামাণ্য দলিল মনে করা হচ্ছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া কয়েক লাখ রোহিঙ্গা ন্যায় বিচার পাবে বলেও আশা সংশ্লিষ্টদের।

উল্লেখ্য, ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে নিরাপত্তা বাহিনীর তল্লাশি চৌকিতে হামলার পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোবদ্ধ সহিংসতা জোরালো করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। খুন, ধর্ষণ ও অগ্নিসংযোগের মুখে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের ৭ লাখেরও বেশি মানুষ। আগে থেকে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছিল আও ৪ লাখ রোহিঙ্গা। এখন বাংলাদেশে প্রায় এগারো লাখ রোহিঙ্গা বাস করছে।

আই.এ/

মন্তব্য করুন