

ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক ও আরবী ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের ১২-১৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র জুবায়ের আল মাহমুদ।এর কথোপকথনের ৪মিনিট ৯ সেকেন্ডের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে।
এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতারা কে কত টাকা কামিয়েছেন। বর্তমান বিদ্রোহী কর্মীদের কিভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। অবৈধ টাকার উৎস কোথায় এবং আরো বিভিন্ন বিষয় এই অডিও ফাঁসে উঠে এসেছে। জুবায়ের বিদ্রোহী নেতাদের কথা না শুনলে খুন হয়ে যেতে পারেন বলে এতে বলেছেন তিনি। অডিও তে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিবের সাথে জুবায়ের আল মাহমুদ এর কথোপকথন হয়েছে। অডিও তে রাকিবকে তার পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দিতেও বলা হয়েছে।
পাঠকদের জন্য অডিও কথোপকথন তুলে ধরা হলো :
>জুবায়ের-আরাফাতের কোনো ছেলে পেলের গাঁয়ে হাত দেবো না। আরাফাতের যে কটা কাজের ছেলে পেলে আছে, যারা গাঁজা খায় তাদের গাঁজা খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা একটু মাল খায়, তাদের মাল খাওয়ার টাকা দিতে হবে। যারা হলের সুবিধা চায় তাদের হলে সুবিধা দিতে হবে। কিন্তু সেই কাজটা….
<রাকিব-তাইলে আমি এখন কী করব? আমি এখন রাজু ভাইয়ের কাছে যাব?
>জুবায়ের-রাজু ভাই তোরে মেনে নিবে না।
<রাকিব-কেন?
>জুবায়ের-এই হলো মূল কথা। তোর একটাই কাজ পদত্যাগ করা।
<রাকিব-রাজু ভাই কী চায়?
>জুবায়ের-আমি ঐডা জানি না। কমিটি ভাইঙা দিতে কইছে। হালিম, শাহীনের কাছ থেকে টাকা খেয়েছে না রাজু। এই ক্যাম্পাস থেকে আট, দশ কোটি কামিয়েছে হালিম। ঐখান থেকে দুই কোটি খাইছে না রাজু। তুমি বুঝো না রাজনীতি? তুমি যদি আমারে দুই কোটি টাকা দাও, তুমি আমারে মাইরা মাডার কল্লেও আমি তোমার কথা শোনব। আমি শিবির মারতাম। মেলা আগেত্তে। মনে কর তোরে চাকরি দিলাম। বিশ লাখ পেলাম, চলে গেল পাঁচ লাখ। মনে করো গিভ এন্ড টেক কোনো প্রমাণ নাই। দিছিস বিশ লাখ তুই আমারে? কোন প্রমাণ নাই রেকর্ডিংও নাই বাল ছিড়তে পারবি তুই আমার? করার কিছু আছে? তুই পদত্যাগপত্র জমা দিয়ে চইলা যা। তোরে ভালো কিছু পদ দেবনে। আমার ভালো লাগে না ওগুলো। তোরে নিয়ে ভাবতে আর ওগো নিয়ে ভাবতে আর ভালো লাগে না। আমি যে তোর রাজনীতি প্রতিষ্ঠিত করে দিলাম, তুই আমার কথা কখনো শোনিসনি, গুরুত্ব দেসনি। তোর রুমেত্তে সরাই দিছিস আমার খারাপ লাগছে।
তুই তুহিনের কথা শোনলি।……… আমারে তো কোনদিন আরাফাতেরা ভালোবাসেনি। আজগে ভালোবাসে আমি রাজনীতি করি তাই। আমারে ইউজ করে। এখনো ইউজ করতেছে অস্বীকার করার কিছু নেই।
<রাকিব- আমি কী তোর সাথে কোনো খারাপ ব্যবহার করছি?
>জুবায়ের- খারাপ ব্যবহার করিসনি। তোরে খারাপ বানানো হয়েছে মেইনলি। আব্দুস সোবহান গোলাপ ফোন দেয় হানিফ ভাইরে। কার জন্য ফোন দেয়? আমি মাডার হয়ে যাই… কালুর ছেলে পেলের হাতে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আমার জন্য ফোন দেয় এসপি তানভীররে……. এই কাহিনী জানিস? তোরে কোনোদিন কইছি আমি বোকা***? তুই কী মনি করিস আরাফাত, খসরোর ভরসায় আমি ঢাকায় চো** বেড়াই? তোর মনে হয় তাই? খসরো, আরাফাত আমার টাকা চো**? টাকা দেয় আমার কাকা আবু বকর হোসেন জামাল। কালকেও পাঁচ হাজার টাকা লাগিছে। আমি জানি আমি থাকলে তুই ক্যাম্পাসে ঢুকতে পারবি। এই বিশ্বাস আমার আছে বন্ধু কিন্তু আমি মাডার হয়ে যাব বন্ধু। আমি ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে যাব বউ, বাচ্চা আছে বুঝছিস। নাইলে মনে কর হানিফ আবার মামলা টামলা দিয়ে…..বুঝছিস?। তুই কী চাস আমি মাডার অইয়া যাই? আমি তোরে কথা কইলে, বাস্তব কথা কইলে তুই বিশ্বাস করবি? মনেত্তে কতা কইলে, আমি কতা কইলে তোর চোখে পানি চইলা আইব। আবার বুকের ভেতর অনেক যন্ত্রণা আছে। আমার যন্ত্রণার চেয়ে আমার বুকে অনেক অভিমান। আমার দুঃখ কষ্ট দেখার, আল্লাহ ছাড়া কেউ দেখে না সত্যি কথা বললাম। লক্ষ্য লক্ষ্য টাকা আরাফাতের কাছ থেকে নিয়ে একটা টাকাও দেয় নাই। আমি জানি যে কোন জায়গা থেকে টাকা নেচ্ছে, আইসতেছে।
এবিষয়ে ইবি ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, আমাদের দুজনের মধ্যে কথা হয়েছে। কিভাবে বাইরে আসলো আমার জানা নেই। অডিও এর কথোপকথনের ব্যাপারে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, বারবার আমাকে পদত্যাগ করতে বলেছে। পদত্যাগ না করলে ক্যাম্পাসে নতুন নতুন সমস্যা তৈরী করবে।
এ ব্যাপারে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বন ও পরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক জুবায়ের আল মাহমুদ এর সাথে মুঠোফোন বারবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
/এসএস