
ইরাকে প্রায় মাসখানেক ধরে চলা সরকারবিরোধী বিক্ষোভে নিহতের সংখ্যা ২০০ ছাড়িয়েছে। ইতোমধ্যেই নিহত হয়েছে ২২০ জন। আহত হয়েছে কমপক্ষে ৮ হাজার মানুষ। শনিবার (২৬ অক্টোবর) দেশটির আধাসরকারি মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, শুধু গত কয়েক দিনেই দেশের বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকালে নিহত হয়েছেন ৬৩ জন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে দুই হাজার ৫৯২ জন। বার্তা সংস্থা এএফপি, আনাদোলু এজেন্সি ও পার্সটুডে এখবর দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে বিক্ষোভকারীদের ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনীর হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইরাক সরকারের পক্ষে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশী দেশ ইরান। বাগদাদের সুরক্ষিত গ্রিন জোন এলাকাসহ দেশজুড়ে বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলিবর্ষণ করে পুলিশ। রাজধানীর বাইরে দেশের দক্ষিণাঞ্চলীয় শহরগুলোতে ব্যাপক বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে হত্যাযজ্ঞের মধ্যেই ইরাক সরকারের পক্ষে অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করেছে প্রতিবেশী দেশ ইরান। ইরাকজুড়ে দুর্নীতি ও বেকারত্বের বিরুদ্ধে গণবিক্ষোভকে অস্থিতিশীলতা তৈরির চক্রান্ত হিসেবে আখ্যায়িত করেছে তেহরান। ইরানের স্পিকারের উপদেষ্টা হোসেইন আমির আব্দুল্লাহিয়ান বলেছেন,এই চক্রান্তের পেছনে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশগুলো। তারা ইরাকি জনগণের কিছু যৌক্তিক দাবিদাওয়ার প্রেক্ষিতে উদ্ভূত পরিস্থিতির অপব্যবহার করছে। এসবের মধ্য দিয়ে তারা ইরাক সরকারের পতন ঘটাতে চায়।
গত ১ সেপ্টেম্বর থেকে কর্মসংস্থানের সংকট, নিম্নমানের সরকারি পরিষেবা এবং দুর্নীতির অভিযোগ তুলে বাগদাদের রাজপথে নামেন কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী। নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলের অনুসারী না হয়েও রাষ্ট্রীয় কার্যক্রমে অনিয়মের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধের আওয়াজ নিয়ে রাজপথে নামেন আন্দোলনকারীরা।
নিরাপত্তা বাহিনী টিয়ার গ্যাস ও গুলি চালিয়ে তাদের ওপর চড়াও হলে এই বিক্ষোভ আরও জোরালো হয়ে ওঠে, ছড়িয়ে পড়ে বিভিন্ন শহরে। বিশেষ করে শিয়া অধ্যুষিত দক্ষিণাঞ্চলীয় বেশ কয়েকটি শহরে বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে।
এর আগে গত ২২ অক্টোবর সরকারি তদন্ত প্রতিবেদনে উঠে আসে, বিক্ষোভকারীদের ওপর সরকারি বাহিনীর মাত্রাতিরিক্ত বল প্রয়োগ ও গুলিবর্ষণের ফলে ১৪৯ বিক্ষোভকারী নিহত হয়েছে। একই রকম মত দিয়েছে জাতিসংঘ। এরমধ্যেই শুক্র ও শনিবার নতুন করে প্রাণহানির ঘটনা ঘটলো।
আই.এ/

