ক্যাসিনোর টাকা গ্রামীণ উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহ্বান ব্যারিস্টার সুমনের

প্রকাশিত: ২:৩৪ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ২২, ২০১৯

রাজধানীতে চলমান ক্যাসিনো অভিযানে উদ্ধারকৃত অবৈধভাবে উপার্জিত টাকা গ্রামীণ উন্নয়নে কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের প্রসিকিউটর ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন।

আজ রোববার তার নিজের এলাকা হবিগঞ্জের ৫ নম্বর শানখোলা ইউনিয়নের বাজেশতং গ্রামে নিজের করা ২৬তম কাঠের ব্রিজ উদ্বোধনকালে ফেসবুক লাইভে এসে তিনি এ আহ্বান জানান।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ক্যাসিনোর টাকা, যেগুলো অবৈধভাবে উপার্জনের টাকা, এ টাকাগুলো কী সরকারের মাধ্যমে গ্রামে-গঞ্জে নিয়ে আসা যায় কি-না। প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আবেদন থাকবে যে, যারাই অবৈধভাবে টাকা আয় করে সেগুলো ধরে গ্রামে নিয়ে আসা যায় কি-না।

তিনি বলেন, আমার নিজের এলাকা হবিগঞ্জের ৫ নম্বর শানখোলা ইউনিয়নের বাজেশতং গ্রাম। গ্রামের মানুষের আবেদন অনুযায়ী এখানে একটি ব্রিজ নির্মাণ করেছি। এটি আমার নির্মাণ করা ২৬তম ব্রিজ। আমি বলতে চাই, সিলেটের মতো অঞ্চলে একটি উপজেলায় যদি আমি আজকে ২৬টি কাঠের ব্রিজ করার মতো জায়গা খুঁজে পাই তাহলে সারাদেশে গ্রামে-গঞ্জে এরকম বহু জায়গা পাওয়া যাবে যেখানে মানুষের কষ্টের শেষ নেই। আমি আমার ব্যক্তিগত জীবনে যদি ২৬টি কাঠের ব্রিজ করতে পারি, আমি চাই যে এভাবে যারা সফল আছেন, তারা নিজেদের জন্মস্থানে গিয়ে খোঁজার চেষ্টা করেন। হয়তো ১ লাখ টাকা দিয়ে একটা ব্রিজ বানিয়ে দিয়ে এ রকম বহু মানুষের কষ্ট কমানো যাবে।

তিনি বলেন, আপনারা জানেন যে একটা ক্যাসিনোর জুয়ার ঘরে ১২ কোটি টাকা পাওয়া গেছে। আরো কত কোটি টাকা যে পাওয়া গেছে? কেউ বলে দেড়শ কোটি? কেউ বলে ২০০ কোটি টাকার এফডিআর পাওয়া গেছে। জুয়ার ঘরে এত টাকা পাওয়া যায়! কিন্তু যে জায়গাগুলোতে মানুষ কষ্ট পাচ্ছে সে জায়গাগুলোর কেউ খবর রাখে না। এটা ভিতরের একটা গ্রাম। এমন জায়গা সাধারণত নেতাদের চোখ পড়ে না। নেতারা এসব জায়গায় আসেন না।

এ সময় তিনি বাজেশতং গ্রামের এক মুরব্বিকে জিজ্ঞেস করেন যে, এখানে ব্রিজের জন্য কত দিনের দাবি ছিল আপনাদের? এমন প্রশ্নে ওই মুরব্বি বলেন, এটা তাদের বহুদিনের দাবি। এটা একটা অবহেলিত গ্রাম। আমরা বার বার আওয়ামী লীগকে ভোট দিয়ে আসছি। কিন্তু নেতাকর্মীরা আমাদের দিকে দৃষ্টিপাত করে না।

এ প্রেক্ষিতে সুমন বলেন, সব নেতা এক রকম হয় না। আস্তে আস্তে যে গণজাগরণ হচ্ছে, ফেসবুক লাইভের মাধ্যমে ভালো-মন্দ, জনগণের কষ্টের কথাগুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি। এক পর্যায়ে ঘটনাস্থলে দাঁড়িয়ে থাকা কিছু নারীকে দেখিয়ে সুমন বলেন, এনারা আজকে ব্রিজের উপর দিয়ে পার হবেন। বর্ষাকালে কত বাচ্চা আর কত মায়ের যে, কষ্ট হয়।

অথচ মাত্র ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকায় একটি ব্রিজ বানানো যায়। অথচ আমি শুনলাম ঢাকা শহরে নাকি এক রাতে ১২৫ কোটি টাকা শুধু জুয়ায় লেনদেন হয়। যে দেশে এক রাতে এত টাকার জুয়া হয়, সেদেশে একটা ৫০ হাজার বা ১ লাখ টাকার একটা ব্রিজের জন্য কত মানুষ যে কষ্ট করছে আল্লাহই ভালো জানেন।

আমি একটা উপজেলায় ২৬টি ব্রিজ বানানোর জায়গা পেয়েছি, সিলেটের মতো একটা জায়গায়। যেটাকে মানুষ মনে করে এরা মনে হয় উন্নয়নের উপরে উঠে গেছে! তাহলে দেখেন যারা ঢাকায় বসে বসে বড় বড় বক্তব্য দেন, তাদের বক্তব্যের সাথে বাস্তবতার কোনো মিল আছে কি-না?

আমি শুধু বলতে চাই যারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ লালন করতে চাই তাদের মানুষের কষ্টে কাজে লাগতে হবে। মানুষের কষ্টে যদি কাজে না লাগেন আপনি যতই বলেন না কেন বঙ্গুবন্ধর আদর্শ আপনি লালন করেন না।

/এসএস

মন্তব্য করুন