
ফয়সাল আরেফিন, জবি: জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণের কথা ভেবে গঠন করা হযেছিল ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কল্যান তহবিল’। চলতি বছর বছর গত মার্চ মাসের ২৮ তারিখ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তৎকালীন সভাপতি তরিকুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক জয়নুল আবেদিন রাসেলের প্রস্তাবনায় এ কল্যাণ তহবিল গঠন করা হয়েছিল। কল্যাণ তহবিলের হিসাব নং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা অগ্রণী ব্যাংক- ০২০০০১১৭৭৮৫২৬।
তখন বিভিন্ন গনমাধ্যমে এই সংবাদ ঢালাওভাবে প্রকাশ করা হয়। প্রস্তাবনায় বলা হয়েছিল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের যেসব নেতাকর্মী সাধারণভাবে গুরুতর দুরারোগ্য আক্রান্ত হলে কিংবা রাজনৈতিকভাবে আহত হলে তাদের চিকিৎসার ব্যয় বহন করার জন্য এ তহবিল গঠন করা হয়েছে। সেই সাথে রাজনৈতিক কারণে যদি কোনো নেতাকর্মী নিহত হয় তাহলে তাদের পরিবারকে আর্থিক সহায়তা প্রদান করা হবে এই তহবিলের অর্থের মাধ্যমে।
প্রস্তাবনায় আরও উল্লেখ করা হয়েছিল, নেতাকর্মী সাধারণভাবে গুরুতর দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত হলে কিংবা রাজনৈতিক কারণে আহত হলে সেক্ষেত্রে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় দায়িত্বরত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে অর্থ উত্তোলন করা যাবে। তবে নিহতের ব্যাপারে, অবশ্যই রাজনৈতিক কারণে নিহত হতে হবে। সে ক্ষেত্রে নিহতের সার্টিফিকেট দেখাতে হবে।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ কল্যাণ তহবিলে অর্থ যোগানের জন্য শুধু আওয়ামী রাজনৈতিক মতাদর্শীদের অর্থই গ্রহণ করা হবে। অন্য কারো অর্থ গ্রহণ করা হবে না বলে জানানো হয়েছিল। তবে সেই তহবিল কল্যানের অর্থ আদৌ কোন নেতা-কর্মীর পেছনে ব্যয় হয়েছে কি না কেউ জানে না। ছাত্রলীগের সম্মেলনে এসে এক কর্মী মারা যাওয়ার পর ছাত্রলীগ কল্যান তহবিল আলোচনায় এসেছে।
তবে তহবিল গঠনের কথা ছাত্রলীগের বাকী নেতারা জানলেও তারা বলতে পারেনা সেই তহবিলের টাকা কোথায় ব্যবহার করা হয় বা কার অধীনে আছে। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের তুরকুল-রাসেল কমিটির সাবেক কয়েকজন নেতার সাথে কথা বললে তারা জানান, আমরা জেনেছিলাম ছাত্রলীগ কল্যান তহবিল গঠন করা হয়েছিল। তখন সে তহবিলের জন্য অর্থও জমা করা হয়েছিল তবে তারা সেই অর্থের কথা জানে না বলে জানান।
এ বিষয়ে সাবেক ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি জামাল উদ্দিন বলেন, আ.লীগের কার্যনির্বাহী সদস্য এ্যাড. কাজী নজিবুল্লাহ হীরু ভাই তার পরিবারকে সর্বনিম্ন দশ লক্ষ টাকা যোগাড় করতে বলেছেন। তিনিও সাহায্য করতে চেয়েছেন। তবে এই সময় ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় কেউ এর দায়িত্ব নেওয়ার নেতা নেই।
এবিষয়ে সাবেক সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদীন রাসেল বলেন, ছাত্রলীগ কল্যান তহবিলের আমাদের কাছে সুরক্ষিত আছে। এখন ছাত্রলীগের কমিটি না থাকায় কেউ এই টাকা উত্তোলন করতে পারবে না।
তিনি আরও বলেন, আমরা ১০ হাজার টাকা দিয়ে তহবিল গঠন করি। এরপরে শোভন ভাই, রাব্বানী ভাই ও নজরুল ইসলাম বাবু ভাই কিছু অর্থ দিয়েছিল। সবমিলে ৪০-৪৫হাজার টাকা আছে।
ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হলে ছাত্রলীগ কল্যান তহবিলের দায়িত্ব হস্তান্তর করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে ছাত্রলীগ কর্মীর মৃ্ত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী যেকোনো প্রয়োজনে ছাত্রলীগ পরিবারের পক্ষ থেকে ওয়াসির মা ও তার ভাইয়ের পাশে থাকবে আশ্বাস্ত করেছেন।
উল্লেখ্য, গত শনিবার (২০ জুলাই) ছাত্রলীগের সম্মেলন চলাকালে অসুস্থ হয়ে সুলতান মো. ওয়াসি নামে এক শিক্ষার্থীর মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইংরেজি বিভাগে ১১তম ব্যাচের ২০১৫-২০১৬ সেশনের শিক্ষার্থী। এই কর্মীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরিবারের পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে ছাত্রলীগের নেতারা।

