সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে দুর্নীতি ও অদক্ষতা: রিজভী

প্রকাশিত: ২:২০ অপরাহ্ণ, জুলাই ১০, ২০১৯

সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘কোনো অজুহাত দেখাবেন না, গ্যাসের দাম কমান। অন্যথায় মানুষ রাজপথে নেমে তাদের দাবি আদায় করে নেবে। ‘সরকারের প্রতিটি পদক্ষেপে দুর্নীতি ও অদক্ষতা, দেশ পরিচালনায় অক্ষম তার প্রমাণ এ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি।

রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ বুধবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা প্রধানমন্ত্রীকে বলব, কোনো অজুহাত দেখাবেন না। গ্যাসের দাম কমান। গ্যাসের দাম বাড়ানোর কারণে জনজীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। জনগণ ক্ষোভে ফুঁসছে। অবিলম্বে গ্যাসের দাম বাড়ানোর ঘোষণা স্থগিত করুন। অন্যথায় রাজপথে নেমে জনগণ দাবি আদায় করে নেবে।’

তিনি আরও বলেন, তারা চুরি করবে আর ক্ষতির টাকা জনগণের পকেট থেকে উসুল করে নেবে। গ্যাসের দাম বাড়িয়ে সাধারণ মানুষের পকেট থেকে আট হাজার কোটি টাকা নেয়া হচ্ছে।’

খালেদা জিয়ার জামিনে বাধার অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘বিএনপি চেয়ারপারসনের জামিনে এখন সরাসরি বাধা দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আদালতে হস্তক্ষেপ করার পাশাপাশি দেশনেত্রীর আইনজীবীদেরও আইনি পদক্ষেপ গ্রহণে বাধা দেয়া হচ্ছে। দেশনেত্রীর ওকালতনামায় স্বাক্ষর করতে দেয়া হচ্ছে না।’

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ নিয়ে বেসরকারি সংস্থা সুজন সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল গঠনের যে দাবি জানিয়েছে তার প্রতি সমর্থন জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ফলাফল বিশ্লেষণ করে বলেছে-৩০০টি আসনে ৪০১৫৫টি ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১০৩টি আসনের ২১৩টি ভোটকেন্দ্রে শতভাগ ভোট পড়েছে, ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে ৩৫৮টি কেন্দ্রে, ৯৬ শতাংশ ভোট পড়েছে ৫১৬টি কেন্দ্রে। অর্থাৎ ১৪১৮টি ভোটকেন্দ্রে ৯৬ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশ ভোট পড়েছে। সুজন সিইসিসহ সংশ্লিষ্টদের দায়ী করে সুপ্রিম জুডিসিয়াল কাউন্সিল গঠনের দাবি জানিয়েছে। আমরা মনে করি এ দাবি যথার্থ।’

নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘আপনাদের প্রকাশিত ফলাফল ও বক্তব্যে প্রমাণ হয়েছে যে, দেশে কোনো নির্বাচনই হয়নি। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ও দেশের স্বনামধন্য নাগরিক সংগঠনগুলো ৩০ ডিসেম্বরের নির্বাচন নিয়ে অনুসন্ধানী রিপোর্ট প্রকাশ করেছে। বিবিসি বলেছে, ১৯৭ কেন্দ্রে শতভাগ এবং হাজার কেন্দ্রে ৯৫ থেকে ৯৯ শতাংশ ভোট পড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘মূলত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ৩০০টি আসনেই ভোট জালিয়াতি ছিল নজিরবিহীন ও বিস্ময়কর। মধ্যরাতে ভোট ডাকাতির এ অভিনব পন্থা অবলম্বনের মাধ্যমে জালিয়াতি করতে সহায়তা করায় অবশ্যই সিইসিসহ নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্টদের বিচার হওয়া উচিত।’

রিজভী বলেন, ‘রাষ্ট্রপতির কাছে আমাদের আবেদন পৃথিবীর ইতিহাসে অকল্পনীয় এ ভয়াবহ ভোট চুরি ও ভোট ডাকাতির একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাতিল করুন। উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিশন করে যারা এ অনিয়মের সঙ্গে জড়িত তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত আপনার। রাষ্ট্রের অভিভাবক হিসেবে ভোট বঞ্চিত ভোটাররা দ্রুত আপনার সুবিবেচনাপ্রসূত পদক্ষেপের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী, অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

জিআরএস/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন