
ইবি প্রতিনিধি:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আপন ভাই ড. দেলোয়ার হোসেনকে নিয়োগ দিতে গিয়ে বিতর্কিত হয়ে দূর্নীতিবাজ ‘কালো শিক্ষক’ হিসেবে চিহ্নিত হওয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের টুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি বিভাগের সভাপতি প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিনের নারী কেলেঙ্কারীর অডিও ক্লিপ ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া দুই মিনিটের ওই অডিও ক্লিপটি প্রতিবেদকের কাছে সংরক্ষিত রয়েছে। ভুক্তভোগী ড. আরেফিনের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছিলেন বলে জানা গেছে।
ফাঁস হওয়া অপ্রীতিকর ওই অডিও ক্লিপটি পাঠকের উদ্দেশে হুবহু তুলে ধরা হলো:
ড. আরেফিন: হ্যালো ময়না পাখি ঘুমাইছো?
ভুক্তভোগী: হ্যালো..
ড. আরেফিন: ঘুমাইছো। কি করছো ময়না পাখি?
ভুক্তভোগী: এইতো বসে আছি। আর কি করবো?
ড. আরেফিন: বসে আছো। কার জন্য?
ভুক্তভোগী: এই আপনার কলের অপেক্ষা।
ড. আরেফিন: আহারে। কোনো খবর নাই। ফোন বন্ধ থাকে তোমার। আমার জন্য তুমি বসে থাক এটা কোনো কথা?
ভুক্তভোগী: বুঝি না। ওহ মাঝে মাঝে সুইচ অফ থাকে। বাসায়তো থাকি বুঝেন না? আছেন কেমন?
ড. আরেফিন: আছি ভাল। তোমার সাথে কেডা?
ভুক্তভোগী: হু,
ড. আরেফিন: তোমার সাথে কে?
ভুক্তভোগী: কই কেউ না তো। আমি একা।
ড. আরেফিন: একা রুমে?
ভুক্তভোগী: হ্যাঁ।
ড. আরেফিন: বসে আছো?
ভুক্তভোগী: হ্যাঁ
ড. আরেফিন: শুয়ে পড়।
ভুক্তভোগী: হ্যাঁ, একটু পরেই ঘুমাব।
ড. আরেফিন: এখনই শুয়ে পড়ো। আমিও শুয়ে পড়ছি।
ভুক্তভোগী: তাই, না?
আরেফিন: কী সমস্যা?
ভুক্তভোগী: না, সমস্যা কিছু না।
ড. আরেফিন: তো শোয়া হবে না?
ভুক্তভোগী: কেন হবে না? অবশ্যই।
ড. আরেফিন: আসো কাছে আসো।
ভুক্তভোগী: কল্পনায় করলে হবে?
ড. আরেফিন: কখন হবে সোনা?
ভুক্তভোগী: বললাম, কল্পনায় করলে হবে? বাস্তবতায় আসতে হবেনা?
ড. আরেফিন: বাস্তবতায় কবে হবে?
ভুক্তভোগী: দেখি মঙ্গলবার।
ড. আরেফিন: তুমি শুধু ফাঁকি দাও। ফাঁকি দাও সোনা।
ভুক্তভোগী: কোথায় আর ফাঁকি দিলাম।
ড. আরেফিন: আমার যে সহ্য হচ্ছে না সোনা..
ভুক্তভোগী: তাই? এতো?
ড. আরেফিন: আর সহ্য হচ্ছে না।
ভুক্তভোগী: আর এইতো একটা দিন।
ড. আরেফিন: এখনই সোনা।
ভুক্তভোগী: আরতো এই একটা দিনেরইতো ব্যাপার।
ড. আরেফিন: ওহ সোনা।
ভুক্তভোগী: ওহ্! তাই না সোনা, বেবী
ড. আরেফিন: ওহ তো আস।
ভুক্তভোগী: কি রাতে খাওয়া হলো নাকি? কি করো এখন?
ড. আরেফিন: এইতো তোমার সাথে কথা বলছি।
……….
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এই প্রফেসর ত্রিশাল জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ভাইকে নিয়োগ দিতে গিয়ে কালো শিক্ষকের তালিকাভুক্তি হোন। এই বিষয়ে ত্রিশাল নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর এ এইচ এম মোস্তাফিজুর রহমান বলেন,‘আমি জনাব আরেফিনের বিষয়ে কষ্ট, মর্মাহত ও অবাক হয়েছি। একজন শিক্ষক হয়ে নিয়ম বর্হিভূতভাবে নিয়োগ নির্বাচনী বোর্ডের প্রশ্নপত্র প্রনয়ন ও উত্তর মূল্যায়ন করে নিজের ভাইকে মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ করান। এতে তিনি যে প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছেন তা শিক্ষক সমাজের জন্য দারুন লজ্জাস্কর ব্যাপার।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬২ তম সিন্ডিকেট সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তথ্য গোপন অভিযোগে ও নৈতিকতা বিরোধী চিহ্নিত করে বিশেষজ্ঞ সদস্য হতে অপসারণ ও আজীবনের জন্য দূর্নীতিবাজ শিক্ষকের কালো তালিকাভুক্ত করণসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল প্রকার কর্মাকান্ড হতে বিরত রাখার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ প্রফেসর ড. আরেফিনের বিষয়টি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের নিকট দাপ্তরিক নোটিশ প্রদান করা হয়েছিল’।
এবিষয়ে প্রফেসর ড. মাহবুবুল আরফিনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করে সাংবাদিক পরিচয় দিলে ফোনের লাইন কেটে দেন। এরপর বেশ কয়েকবার ফোন দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. রাশিদ আসকারী বলেন, বর্তমান প্রশাসন সব ধরণের অপ্রীতিকর বিষয়ে প্রাথমিক যাচাই বাছাই শেষে পদক্ষেপ নিতে তৎপর রয়েছে।

