

অনেক দ্বিপক্ষীয় ইস্যুতে তুরস্কের গঠনমূলক পদক্ষেপের প্রশংসা করেছে ইউরোপীয় কমিশন। সোমবার প্রকাশিত ‘হাই রিপ্রেজেন্টেটিভ অব দ্য ইউনিয়ন ফর ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যান্ড সিকিউরিটি পলিসি’-এর প্রস্তুত করা এক প্রতিবেদনে এ প্রশংসা করা হয়।
প্রতিবেদনে অবশ্য পূর্ব-ভূমধ্যসাগর, সাইপ্রাস এবং অন্য কয়েকটি ইস্যুকে তুরস্কের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে হুমকি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘গত ডিসেম্বর পর্যন্ত তুরস্ককে তুলনামূলক শান্ত দেখা গেছে। কয়েকটি ইইউ সদস্য রাষ্ট্রের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কসহ বিভিন্ন ইস্যুতে তাদের গঠনমূলক মনোভাব দেখা গেছে।
এর মাধ্যমে যৌথ যোগাযোগের ক্ষেত্রে ইতিবাচক অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। এতে বলা হয়, কোভিড মহামারি তুরস্ক এবং ইইউ’র মধ্যে সহযোগিতা আরও বাড়িয়েছে।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বর্তমান সহযোগিতার সুযোগ বাড়াতে তুরস্ক যাতে আরও উদার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে আসে, সেজন্য সম্ভাবনাময় জায়গাগুলো নিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে কাজ করতে হবে।
তবে তুরস্কের এ ইতিবাচক মনোভাব ‘টেকসই ও বিশ্বাসযোগ্য’ কিনা তা খতিয়ে দেখতে ইইউ’র আরও সময় নেওয়া প্রয়োজন।
প্রতিবেদনে বেশ কিছু পরামর্শ দেওয়া হয়। এর মধ্যে আছে, ২০১৬ সালে করা তুরস্ক-ইইউ শরণার্থী চুক্তিকে আরও কার্যকরভাবে এবং পারস্পরিক উপকারী করে বাস্তবায়ন, এরইমধ্যে বড় আকার ধারণ করা অর্থনৈতিক সম্পর্ককে আরও সুদৃঢ় করা এবং বর্তমান তুরস্ক-ইইউ শুল্ক ইউনিয়নের সম্প্রসারণ ও আধুনিকীকরণ।
প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালে প্রায় ২৬ লাখ শরণার্থীর দেখভাল করার কাজে তুরস্ককে সহায়তা করতে ২০১৮ সালের মধ্যে ৬ বিলিয়ন ইউরো দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল ইইউ। প্রায় দুই বছর বিলম্বের পর ২০২০ সালের ডিসেম্বরে ৬ বিলিয়ন ইউরোর প্যাকেজটির অধীনে চূড়ান্ত চুক্তি সম্পন্ন করে ইইউ। অথচ, ইইউর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, মার্চ পর্যন্ত সিরীয় শরণার্থীদের জন্য এর চেয়ে ৪ দশমিক ৫ বিলিয়ন ইউরো বেশি খরচ হয়েছে।
সম্প্রতি শরণার্থী সমস্যা মোকাবেলায় তুরস্ককে ইউরোপীয় ইউনিয়নের ‘অত্যন্ত নির্ভরযোগ্য অংশীদার’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মের্কেলের সরকার।
সরকারের মুখপাত্র উলরিক ডেমের বলেন, ২০১৬ সালে গৃহীত ইইউ-তুরস্ক শরণার্থী চুক্তির প্রতি তুরস্ক দৃঢ়প্রতিজ্ঞ থাকায় ইউরোপে সিরীয় শরণার্থীর স্রোত কার্যকরভাবে বন্ধ হয়েছে।
প্রতিবেশী সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধের পর সেখান থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীদের দায়িত্ব নেওয়ার জন্য তুরস্কের প্রশংসা করেন তিনি। তাদের প্রয়োজনীয় সেবা, ঘর, স্বাস্থ্য ও শিক্ষাসহায়তা দেওয়ার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, তুরস্ক যা করছে, তা সর্বোচ্চ স্বীকৃতির দাবি রাখে। তুরস্কের এ সাফল্যের পরও ইইউ থেকে চুক্তি অনুযায়ী যথাসময়ে অর্থ না পাওয়ায় তুর্কি কর্মকর্তাদের সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে।