‘মুসলমান একবার রক্ত দিতে শুরু করলে তা বন্ধ করতে জানে না’

প্রকাশিত: ৭:০৩ অপরাহ্ণ, নভেম্বর ১৩, ২০২০

গণসমাবেশ ধোলাইপাড়ে হওয়ার কথা থাকলেও প্রশাসনের বাধার কারণে ধুপখোলা মাঠে অনুষ্ঠিত হয়। গণসমাবেশ একপর্যায়ে জনসমূদ্রে রূপ নেয়। বাদ জুমা সমাবেশের কথা থাকলেও সকাল থেকেই জনস্রোত ধুপখোলা মাঠের দিকে চলতে থাকে। জায়গায় জায়গায় প্রশাসনের বাধার মুখে পড়ে সমাবেশে আগত তৌহিদী জনতার মিছিল। বিভিন্ন জায়গায় সরকার দলীয় লোকজনের বাধার মুখে পড়ে তৌহিদী জনতা। এত বাধার মধ্যেও তৌহিদী জনতা শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ সফল করে ধৈর্যের পরিচয় দেয়।

মুফতী ফয়জুল করীম বলেন, মুসলমান একবার রক্ত দিতে শুরু করলে তা বন্ধ করতে জানে না। আমরা সরকারের কাছে শান্তিপূর্ণভাবে দাবি জানাচ্ছি। মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত বাতিল না হওয়া পর্যন্ত তৌহিদী জনতার আন্দোলন চলবে। সরকার যদি ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন থেকে সরে না আসে, তাহলে কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।

আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর সাথে ওলামায়ে কেরাম বার বার সাক্ষাতে ইসলামবিরোধী কোনো কার্যকলাপ না হয়, সে ব্যাপারে মতামত দিয়েছেন। মূর্তি স্থাপনের মাধ্যমে শীর্ষ ওলামাদের মতামতকে উপেক্ষা করলে তার খেসারত সরকারকে দিতে হবে।

মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ মাদানী বলেন, ৯২ ভাগ মুসলমানের এদেশে ইসলামবিরোধী সংস্কৃতি মূর্তি স্থাপন কোনোভাবেই মেনে নেয়া হবে না। মূর্তি মুসলমানি কোন সংস্কৃতি নয়, এটা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। মূর্তির বিরুদ্ধে মুসলমানরা একমত। মূর্তি স্থাপনের বিরুদ্ধে সর্বস্তরের জনতা রাজপথে নেমে আসবে। মুসলমানরা কারো রক্ত চক্ষুকে ভয় করে না।

মাওলানা শাহ আবদুল আউয়াল বলেন, শেখ মুজিবুর রহমান ইসলামের জন্য অনেক অবদান রেখেছেন। তার স্মরণে মূর্তি নির্মাণ করে তার আত্মাকে কষ্ট দেবেন না। শেখ মুজিবকে যারা ভালবাসেন তারা এ মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারেন না। তার স্মৃতির জন্য এমন কিছু করুন, যাতে পরকালে তিনি শান্তি পান।

মাওলানা ইউনুছ আহমাদ বলেন, সরকার দলীয় ক্যাডাররা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকে বানচালের অপচেষ্টা করেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা জানাই। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। কিন্তু এ সরলতাকে দুর্বলতা মনে করলে ভুল করবেন। সোজা আঙ্গুলে ঘি না উঠলে আঙ্গুল বাঁকা করতে বাধ্য হবো।

সমাবেশে বক্তারা আরো বলেন, মূর্তি বা ভাস্কর্য মুসলমানের কোন সংস্কৃতি নয়, এটা বিজাতীয় বা হিন্দুয়ানী সংস্কৃতি। যুগে যুগে সকল নবী ও রাসূলগণ মূর্তি ধ্বংস করে একত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করতে দুনিয়ায় এসেছিলেন। কাজেই মুসলমানরা এধরণের কোন সংস্কৃতি লালন করতে পারে না।

ভাস্কর্য স্থাপন না করে কোরআন খচিত স্তম্ভ, মিনার খচিত স্তম্ভ, আল্লাহর নিরানব্বই নাম সম্বলিত মিনার ইত্যাদি স্থাপনের দাবি জানান।

সমাবেশে বক্তব্য রাখেন আল্লামা আব্দুল হামিদ পীর সাহেব মধুপুর, চরমোনাই কামিল মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল-মাদানী, নারায়ণগঞ্জ ডিআইটি জামে মসজিদের খতীব মাওলানা শাহ আব্দুল আউয়াল, আল্লামা নূরুল হুদা ফয়েজী, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী, অধ্যাপক মাহবুবুর রহমান, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, বাইতুন নূর মাদরাসার প্রিন্সিপাল মুফতী মনিরুজ্জামান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, প্রকৌশলী আশরাফুল আলম, মূফতী নূর হোসাইন নূরানী, মুফতী হাবিবুর রহমান মিসবাহ, কেএম আতিকুর রহমান, মাওলানা সিরাজুল ইসলাম সিরাজী, মাওলানা হাসান বিন বাশার, ছাত্রনেতা এম হাছিবুল ইসলাম, মাওলানা আব্দুল আজিজ, মাওলানা আব্দুল আলিম সাইফী, মুফতী আফজাল হোসাইন রাব্বানী,বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম, মাওলানা গোলাম সারওয়ার ফরিদী, মাওলানা লোকমান হোসাইন জাফরী, মুফতী ওমর ফারুক, মুফতী মাসুম বিল্লাহ, হাজী শাহাদাত হোসাইন,মাওলানা আশরাফ আলী নূরী। গণসমাবেশ পরিচালনা করেন মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম, মুফতী দেলাওয়ার হোসাইন সাকী, মুফতী মোস্তফা কামাল, মাওলানা এইচ এম সাইফুল ইসলাম।

আই.এ/

মন্তব্য করুন