
ভারী বৃষ্টিপাত ও উজানের ঢলে বিভিন্ন নদনদীর পানি বেড়ে দেশে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা ও সুরমা-কুশিয়ারা নদী তীরবর্তী নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এতে পানিবন্দি মানুষের দুর্ভোগ আরো বেড়েছে। দেশের ১৭ নদীর ২৮ পয়েন্টে পানি এখন বিপৎসীমার ওপরে। ২০ জেলা এখন বন্যা আক্রান্ত। এসব জেলার প্রায় সোয়া ৬ লাখ মানুষ এখন পানিবন্দি। আজ পর্যন্ত পানিতে ডুবে মারা গেছে ২২ জন। প্রথম পর্যায়ের বন্যায় প্রায় ৩৪৯ কোটি টাকার ফসলের ক্ষতি হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি মন্ত্রণালয়।
এদিকে, উত্তরাঞ্চলসহ অন্যান্য স্থানের পানি কমতে শুরু করলেও কমেনি দুর্ভোগ। বিপৎসীমার উপর দিয়ে বইছে পদ্মা। পাশাপাশি কয়েকদিনের বৃষ্টিতে রাজবাড়ীতে বন্যার চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি অসহায় দিন কাটাচ্ছে জেলার প্রায় ৪৫ হাজার মানুষ। শহররক্ষা বাঁধে ফাটল দেখা দিয়েছে।
শরীয়তপুরে বন্যা কবলিত এলাকায় বেড়েছে পানিবন্দী মানুষের দুর্ভোগ। শরীয়তপুর-ঢাকা মহাসড়কে পানি উঠায় যোগাযোগ ব্যাহত হচ্ছে। এদিকে, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল, নাটোরে বন্যার অবনতি হয়েছে। অনেকে ঘরবাড়ি ছেড়ে উঁচুস্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। কেউবা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর দিন কাটাচ্ছে। রয়েছে ত্রাণ সংকট।
আবহাওয়ার পূর্বাভাস: বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতর ও ভারতের আবহাওয়া অধিদফতরের তথ্য অনুযায়ী, আগামী ২৪ থেকে ৭২ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং এর আশপাশের ভারতের হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গ, আসাম ও মেঘালয় প্রদেশে ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস আছে। ফলে এই সময়ে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও উত্তরাঞ্চলের ধরলা ও তিস্তা এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আপার মেঘনা অববাহিকার প্রধান নদ-নদীগুলো এবং দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি অববাহিকার নদ-নদীগুলোর পানি দ্রুত বাড়তে পারে।
এদিকে জেলাগুলোর মধ্যে আগামী ২৪ ঘণ্টায় সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলার বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে। কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, বগুড়া, জামালপুর, সিরাজগঞ্জ, টাঙ্গাইল ,নাটোর, মুন্সীগঞ্জ, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর ও ঢাকা জেলার নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি স্থিতিশীল থাকতে পারে।
এছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় ঢাকার জেলার আশপাশের নদীগুলোর পানি বাড়তে পারে। এদিকে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের স্টেশনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে ছাতকে ১৮০ মিলিমিটার। এ
ছাড়া দেওয়ানগঞ্জে ১৫০, মহেশখোলায় ১৪১, কক্সবাজারে ১০১, লরেরগড়ে ১৪০, জাফলংয়ে ১৩৬, সুনামগঞ্জে ১২০, নোয়াখালীতে ৭৪, লালাখালে ১১৬, পঞ্চগড়ে ১১৪, দুর্গাপুরে ১১২ এবং পরশুরামে ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এদিকে ভারতের চেরাপুঞ্জিতে ৩৯০ মিলিমিটার, শিলংয়ে ১৪৩ এবং পাসিঘাটে ৭৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়।
ওয়াইপি/পাবলিক ভয়েস

