

অর্থপাচার মামলায় গ্রেপ্তার প্রভাবশালী ঠিকাদার গোলাম কিবরিয়া শামীমের (জিকে শামীম) ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
পুলিশের অপরাধ ও তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মহানগরের জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েস এই আদেশ দেন। ওই আদালতের সরকারি কৌঁসুলি তাপস কুমার পাল বলেন, মামলার তদন্তের স্বার্থে জিকে শামীমের ১৯৪টি ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ রাখার আবেদন করে সিআইডি। আদালত শুনানি নিয়ে জি কে শামীমের ব্যাংক হিসাবগুলো অবরুদ্ধ রাখার আদেশ দেন। তবে অবরুদ্ধ রাখা ১৯৪টি হিসাবে টাকার পরিমাণ কত সেই সত্য জানা সম্ভব হয়নি।
সিআইডির আবেদনে বলা হয়, তদন্তকালে জানা গেছে যে জিকে শামীম ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা বাংলাদেশ থেকে অবৈধ উপায়ে অর্থ উপার্জন করে তা পাচারের জন্য মজুত রেখেছেন। যেকোনো সময় আসামি মজুত করা অর্থ হস্তান্তর বা স্থানান্তর বা বেহাত করতে পারেন। ফলে পরবর্তীতে ওই সম্পদ রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা সম্ভব হবে না।
গত ২০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর নিকেতনের নিজ কার্যালয় থেকে বিদেশি মদসহ শামীমকে গ্রেপ্তার করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পাশাপাশি তাঁর অফিস থেকে জব্দ করা হয় বিপুল পরিমাণ টাকা ও বিদেশি মুদ্রা। এই ঘটনায় র্যাব বাদী হয়ে গুলশান থানায় অস্ত্র, অর্থ পাচার ও মাদক মামলা করে। ইতিমধ্যে অস্ত্র মামলায় শামীমের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে র্যাব।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে বলা হয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে প্রকাশ পায় আসামি জি কে শামীম একজন চিহ্নিত চাঁদাবাজ, টেন্ডারবাজ, অবৈধ মাদক ও জুয়ার ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত। আর এই আসামির সহযোগীরা (দেহরক্ষীরা) উচ্চ বেতনভোগী, দুষ্কর্মের সহযোগী। ব্যক্তিগত নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে লাইসেন্সপ্রাপ্ত হলেও মূলত তাঁরা অস্ত্রের লাইসেন্সের শর্ত ভঙ্গ করে প্রকাশ্যে এসব অস্ত্রশস্ত্র বহন এবং প্রদর্শন করেছেন। এর মাধ্যমে জনমনে ভীতি সৃষ্টির মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের টেন্ডারবাজি মাদক ব্যবসাসহ স্থানীয় বাস টার্মিনাল, গরুর হাটে চাঁদাবাজি করে আসছিল বলে জানা যায়।
রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে প্রতিবেদন দিয়ে আরও বলা হয়, আসামি শামীম অস্ত্রের শর্ত ভঙ্গ করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে মাদক ব্যবসা ও মানি লন্ডারিং করে আসছেন। আসামি বিদেশি মদ রাখার বিষয়ে কোনো বৈধ কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। কিংবা এই বিষয়ে কোনো সদুত্তর দেননি। আসামি স্বজ্ঞানে মদ অবৈধ উপায়ে সংগ্রহ করে নিজের দখলে রেখেছেন বলে স্বীকার করেছেন।