

আশরাফ আলী ফারুকী
গফরগাঁও উপজেলার রসুলপুর ইউনিয়নের ছয়ানী রসুলপুর মোল্লাবাড়ির সন্তান মোঃ মোস্তফা কামাল দেশের গুরুত্বপূর্ণ পুলিশ ইউনিট পিবিআই-এর প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে অতিরিক্ত আইজিপি (গ্রেড-২) পদে পদোন্নতি পেয়েছেন। গত ১৯ মে ২০২৫ তিনি এই মর্যাদাপূর্ণ পদে পদোন্নতি লাভ করেন এবং ২০ মে পুলিশ হেডকোয়ার্টার্সে ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ (আইজিপি) বাহারুল আলম, বিপিএম তাকে র্যাংক ব্যাজ পরিয়ে দেন।
তার এই সাফল্যে গফরগাঁওয়ের ছয়ানী রসুলপুরে বইছে আনন্দের জোয়ার। এলাকা জুড়ে গর্ব ও ভালোবাসায় উচ্চারিত হচ্ছে তার নাম। আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী ও সহপাঠীরা তাকে অভিনন্দনে ভাসাচ্ছেন।
মোস্তফা কামাল ১৯৭০ সালের ১০ অক্টোবর জন্মগ্রহণ করেন এক সাধারণ মুসলিম পরিবারে। শিক্ষাজীবনের শুরু থেকেই মেধাবী ও আদর্শবান হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি। তিনি ময়মনসিংহের নাসিরাবাদ কলেজে পড়াশোনা করেন। কলেজ জীবনের সহপাঠী ও বিশিষ্ট সমাজসেবক আনিসুর রহমান বলেন,“আমরা একসাথে নাসিরাবাদ কলেজে পড়েছি। মোস্তফা সবসময়ই নীতিনিষ্ঠ ও দায়িত্ববান ছিল। আজ তাকে দেশের উচ্চপর্যায়ে দেখে আমরা গর্বিত। তার অগ্রগতি ও দেশসেবা আমাদের গর্বিত করে।
১৯৯৫ সালে তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বিসিএস) পুলিশ ক্যাডারে যোগ দেন। মৌলিক প্রশিক্ষণ শেষে ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে সহকারী পুলিশ কমিশনার হিসেবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশে তার কর্মজীবনের সূচনা হয়। এরপর দীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি দিনাজপুর, হবিগঞ্জ, চাঁদপুর, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দায়িত্ব পালন করেন।
তিনি এপিবিএনের ৩, ৫ ও ৯ নম্বর ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার, পিবিআইয়ের বিশেষ পুলিশ সুপার ও ডিআইজি হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন।
আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও রয়েছে তার গৌরবোজ্জ্বল অবদান। জাতিসংঘের শান্তিরক্ষা মিশনে পূর্ব তিমুর (UNTAET, UNMISET), কসোভো (UNMIK), কঙ্গো (MONUC, MONUSCO) ও দারফুর-সুদানে (UNAMID) কন্টিনজেন্ট কমান্ডার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেবামূলক কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি পাঁচবার পেয়েছেন IGP’s Exemplary Good Services Badge।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনকারী মোস্তফা কামাল যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, ইতালি, জার্মানি, থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়াসহ বিভিন্ন দেশে উচ্চতর প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে তিনি বিবাহিত এবং দুই কন্যা ও এক পুত্র সন্তানের জনক।
জনাব মোস্তফা কামালের এই অর্জন শুধু তার পরিবারের নয়, ছয়ানী রসুলপুর ও পুরো গফরগাঁওবাসীর গর্বের প্রতীক হয়ে উঠেছে। তার জীবনকাহিনি নতুন প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে—গ্রাম থেকেও দৃঢ়তা, শিক্ষা ও সততার মাধ্যমে যে কেউ দেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে, তার জীবনীই তার প্রমাণ।