
নাগরিকত্বের প্রমাণপত্র ছাড়া আটক হওয়া ৩০ রোহিঙ্গাকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছে মিয়ানমারের একটি আদালত। দণ্ডিত এসব রোহিঙ্গার মধ্যে নারী এবং ছয় বছর বয়সী এক ছেলে শিশুও রয়েছে। শুক্রবার আইয়ারওয়াদি অঞ্চলের নাগাপুদাউ টাউনশিপ আদালত ১৯৪৯ সালের মিয়ানমারের বাসিন্দা রেজিস্ট্রেশন আইনের অধীনে এই দণ্ড দিয়েছে।
মিয়ানমার পুলিশ জানিয়েছে, গত ২৬ সেপ্টেম্বর পাথেইন-নাগা ইয়োক কাউন সড়ক থেকে একটি মিতসুবিসি পাজেরো গাড়ি থেকে ৩০ রোহিঙ্গাকে আটক করা হয়। তাদের কাছে নাগরিকত্বের কোনও প্রমাণ ছিলো না। পুলিশ গাড়িটি থামালে চালক পালিয়ে যায়। তাদের আদালতে হাজিরের পর শুক্রবার নাগাপুদাউ টাউনশিপ আদালত ১৫ নারী ও ছয় পুরুষ রোহিঙ্গাকে দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়ে পাথেইন কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেয়।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর এসব রোহিঙ্গাকে আটক করা হয় প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে রোহিঙ্গারা রাখাইনে থাকলেও মিয়ানমার তাদের নাগরিক বলে স্বীকার করে না। উগ্র বৌদ্ধবাদকে ব্যবহার করে সেখানকার সেনাবাহিনী ইতিহাসের বাঁকে বাঁকে স্থাপন করেছে সাম্প্রদায়িক অবিশ্বাসের চিহ্ন। ছড়িয়েছে বিদ্বেষ। ৮২-তে প্রণীত নাগরিকত্ব আইনে পরিচয়হীনতার কাল শুরু হয় রোহিঙ্গাদের।
এতে মিয়ানমারে বসবাসকারীদের Citizen, Associate এবং Naturalized পর্যায়ে ভাগ করা হয়েছে। এমনকি দেশটির সরকার তাদের প্রাচীন নৃগোষ্ঠী হিসেবেও স্বীকৃতি দেয়নি। ১৮২৩ সালের পরে আগতদের Associate আর ১৯৮২ সালে নতুনভাবে দরখাস্তকারীদের Naturalized বলে আখ্যা দেওয়া হয়। ওই আইনের ৪ নম্বর প্রভিশনে আরও শর্ত দেওয়া হয়, কোনও জাতিগোষ্ঠী রাষ্ট্রের নাগরিক কি না, তা আইন-আদালত নয়; নির্ধারণ করবে সরকারের নীতি-নির্ধারণী সংস্থা ‘কাউন্সিল অব স্টেট’। এ আইনের কারণে রোহিঙ্গারা ভাসমান জনগোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত হয়।
এছাড়া ১৮ বছরের কম বয়সী তিন ছেলে ও পাঁচ মেয়েকে নাগহাট আও ইয়োথ ট্রেনিং সেন্টারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়। রাখাইনের দক্ষিণে অবস্থিত উপকূলীয় শহর নাগা ইয়োক কাউন। সেখানকার বাসিন্দারা বলছেন, দালালদের মাধ্যমে বহু রোহিঙ্গা নৌকা ও সড়কপথে এই শহরে আসা অব্যাহত রেখেছে। ওই ৩০ রোহিঙ্গাকে আটক করতে দেখা এক বাসিন্দা বলেছেন, সম্ভবত এসব রোহিঙ্গারা রাখাইন ছাড়তে নৌকায় করে এসেছিল। তাদের নিতে অপেক্ষা করছিল একটি মিনিবাস।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস

