হংকংয়ের বিক্ষোভে চীনের বর্ষপূর্তি পণ্ড হওয়ার ঝুঁকিতে

প্রকাশিত: ১১:০৮ পূর্বাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ৩০, ২০১৯

পিপলস রিপাবলিকান অব চীনের ৭০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপন পণ্ড করতে বিক্ষোভে-স্লোগানে আরও ফুঁসে উঠছে চীনের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল হংকং। দাবি একটাই- স্বাধীনতা। আর এজন্য চীনের বর্ষপূতিকেই টার্গেট করেছে তারা। আগামীকাল (১ অক্টোবর) চীনের বর্ষপূর্তির আয়োজনকে মাটি করতে শনিবার থেকে বিক্ষোভ শুরু করেছে তারা। রোববার থেকে বিশ্বব্যাপী ‘চীনের একনায়কবিরোধী’ বিক্ষোভের ডাক দিয়েছে হংকংবাসী।

মঙ্গলবার সবচেয়ে বড় সমাবেশের ডাক দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা। হংকংয়ের এ বিক্ষোভের ফলে চীনের বর্ষপূর্তি পণ্ড হওয়ার ঝুঁকিতে বলে জানিয়েছে এএফপি। এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে চীনের হিরো ও পুরনো বন্ধুদের পুরস্কৃত করলেন প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে তিয়ানআনমেন স্কয়ারে ট্যাংক, ক্ষেপণাস্ত্র, সামরিক বিমান ও সাঁজোয়া যানের মহড়াসহ সামরিক বাহিনীর কসরতের আয়োজন করতে যাচ্ছে চীন।

আগেই সামরিক শক্তি প্রদর্শনের উচ্চাভিলাষী পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছেন প্রেসিডেন্ট শি। মহড়ায় থাকবে ১৫ হাজার সেনা, ১৬০ ফাইটার জেট, ৫৮০টি ট্যাংকার এবং অন্যান্য এমন কিছু অস্ত্র, যা আগে কখনও জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি। এদিকে চীনের জাতীয় দিবসকে ‘দুর্দশার দিন’ ঘোষণা করে মঙ্গলবার বিশাল বিক্ষোভের ডাক দিয়েছেন গণতন্ত্রপন্থী আন্দোলনকারীরা।

অস্ট্রেলিয়ার বিক্ষোভে অংশ নেয়া বিলি ল্যাম (২৫) বলেন, ‘প্রতিদিন রাতে আমি খুবই ব্যথিত হই। কারণ ফেসবুকে হংকংয়ের বিক্ষোভের লাইভ দেখি। এবার আমরাও এ বিক্ষোভে শামিল হয়েছি।’ এদিকে ফ্রান্সের সাবেক প্রধানমন্ত্রী জ্যা পিয়ারে রাফারিন ও কানাডিয়ান নৃবিজ্ঞানী ইসাবেলা ক্রুকসহ ৪২ ব্যক্তিকে মেডেল দিয়েছেন শি জিনপিং। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ২৯ জন। তাদের চীনের পুরনো বন্ধু ও হিরো অ্যাখ্যা দিয়ে পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘দেশের মানুষ ও দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ এসব হিরো ও বন্ধু।’ মেডেল পেয়েছেন চীনের প্রথম নাগরিক হিসেবে নোবেল শান্তি পুরস্কারপ্রাপ্ত তু ইউইউ, চীনের হাইড্রোজেন বোমার জনক পরমাণু বিজ্ঞানী ইউ মিন, কিউবার সাবেক প্রেসিডেন্ট রাউল কাস্ত্রো ও থাইল্যান্ডের প্রিন্সেস মাহা চাকরি সিরিনধর্ন।

লেখক ও গণতন্ত্র আন্দোলনের কর্মী কং সাং-গান বলেন, ‘এটা বলাই যায় যে, কমিউনিস্ট পার্টির জমকালো আয়োজন শুরু হওয়ার আগেই ইতিমধ্যে তা পণ্ড করে দেয়া হয়েছে।’ চাইনিজ ইউনিভার্সিটি অব হংকংয়ের অধ্যাপক উইলি ল্যাম বলেন, ‘বিক্ষোভকারীরা ১ অক্টোরব একনায়কের দেশ চীন ও মুক্ত হংকংয়ের মধ্যে পার্থক্য তৈরি করতে চেষ্টা করবেন।’ রোববার অস্ট্রেলিয়া ও তাইওয়ানে বিক্ষোভ হয়েছে। পরে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকার দেশগুলোতে অন্তত ৪০ স্থানে বিক্ষোভের পরিকল্পনা করছেন গণতন্ত্রকামীরা। নেতৃত্ববিহীন এ ধরনের বিক্ষোভের আয়োজন করা হচ্ছে অনলাইন ফোরামের মাধ্যমে।

এরই অংশ হিসেবে হংকংয়ের ব্যস্ততম কসিওয়ে বের শপিংমলে রোববার জড়ো হয়েছিলেন কয়েক লাখ বিক্ষোভকারী। অননুমোদিত এ বিক্ষোভ রুখতে টিয়ারশেল, কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ। বেইজিং থেকে বিক্ষোভে আসা এক নারী (২৬) বলেন, ‘আমরা আশা হারিয়ে ফেলেছি। চীনের বর্ষপূর্তিতে আমরা হংকংয়ের স্বাধীনতা চাই।’

আই.এ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন