‘পীর সাহেব চরমোনাই রহ. ছিলেন আদর্শিক লড়াইয়ে উত্তীর্ণ মানব’

মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করীম রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক আলোচনা সভায় বক্তারা

প্রকাশিত: ৭:৩৮ অপরাহ্ণ, সেপ্টেম্বর ১৬, ২০১৯

‘মাওলানা সৈয়দ ফজলুল করীম রহ. আল্লাহদ্রোহী শক্তির কাছে কখনো মাথা নত করেননি। প্রচলিত রাজনীতির পরিবর্তে আদর্শিক পরিবর্তনের লক্ষ্য নিয়ে তিনি কাজ করেছেন। গতানুগতিক পীর ছিলেন না, তিনি একজন আদর্শবাদী নেতাও ছিলেন। খোদাদ্রোহী শক্তির কাছে তিনি কখনো মাথানত করেননি। তিনি ছিলেন আদর্শিক লড়াইয়ে একজন উত্তীর্ণ মানব’।

আজ সোমবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের কনফারেন্স লাউঞ্জে ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের উদ্যোগে ‘মাওলানা সৈয়দ মুহাম্মাদ ফজলুল করীম পীর সাহেব চরমোনাই রহ. এর জীবন ও কর্ম শীর্ষক’ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

আলোচনা সভায় নেতৃবৃন্দ বলেন, মরহুম পীর সাহেব তাঁর বাবা মাওলানা এসহাক রহ. থেকে যে আধ্যাত্মিক দীক্ষা পেয়েছিলেন সাথে সাথে তাঁর আপোসহীন নেতৃত্ব জাতীয় পর্যায়ে তাঁকে অপরিহার্য করে তুলেছিল। দেশ ও জাতির যেকোনো সংকটে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতেন। একজন মনিষীর জন্য যেসকল গুনাবলী প্রয়োজন, তাঁর মাঝে তা পূর্ণ মাত্রায় ছিল।

এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর আমীর মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম পীর সাহেব চরমোনাই।

ইসলামী যুব আন্দোলন ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি মুফতি মানসুর আহমদ সাকীর সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলামের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী, মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ, ঢাবি’র প্রফেসর ড. মাইমুল আহসান খান, ইসলামী ঐক্য আন্দোলনের আমীর ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, মুফতী ওমর ফারুক সন্ধিপী। অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মাওলানা গাজী আতাউর রহমান, মাওলানা ইমতিয়াজ আলম, কে এম আতিকুর রহমান, মাওলানা নেছার উদ্দিন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে মুফতি সৈয়দ রেজাউল করীম বলেন, মানুষের আত্মিক পরিশুদ্ধির পাশাপাশি জাতীয় স্বার্থে তিনি রীতিমত রাজনীতিক ছিলেন। এদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে শক্তভাবে ধারণ করে তিনি রাজনীতির একটি নির্মোহ ধারা সৃষ্টি করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সত্য উচ্চারণে কখনও ক্ষমতা, কারাদন্ডের ভয় কিংবা পদ ও অর্থের প্রলোভনে প্রভাবিত হননি।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে মাওলানা আব্দুল লতিফ নেজামী বলেন, পীর সাহেব একজন নির্মোহ রাজনীতিক ছিলেন এবং পীর হয়েও তিনি রাজনীতিতে এসে একটি ব্যতিক্রমী ধারা সৃষ্টি করে গেছেন।

ড. মাইমুল আহসান খান বলেন, তাঁর জীবনের উপর যথেষ্ট গবেষণা হওয়া দরকার এবং বিভিন্ন ভাষায় তাঁর জীবনী রচিত হওয়া উচিত।

মুফতী ওমর ফারুক সন্ধিপী বলেন, তিনি উলামায়ে দেওবন্দের প্রকৃত অনুসারী ছিলেন। শিক্ষা, জিহাদ, আধ্যাত্মিকতা ও দাওয়াতের ময়দানে যুগপৎ খেদমত আঞ্জাম দেয়া ব্যক্তি বিরল।

মুফতী মিজানুর রহমান সাঈদ বলেন, মুসলিম উম্মাহর সংগ্রামী সাধকদের আদর্শ তাঁর মাঝে প্রতিফলিত হয়েছিল।

ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী বলেন, মরহুম পীর চরমোনাই ঐক্যকেন্দ্রিক একটি শক্তিশালী প্লাটফরম তৈরি লক্ষ্যে তৎকালীণ ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছেন। মুসলিম উম্মাহর জন্য তা অনুসরণীয় হয়ে থাকবে।

বক্তারা আরো বলেন, দেশ আজ চতুর্মূখী সংকটের মুখোমুখী। দুর্নীতি, ধর্ষণ, ব্যাংক লুটসহ দেশ এখন সর্বহারা হবার পথে। ভারত ও মিয়ানমারকে সীমান্তের শত্রু বলে আখ্যায়িত করে তিনি বলেন, এই সংকটাপন্ন অবস্থায় মরহুম পীর সাহেব চরমোনাইর আপোসহীন ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে দেশ ও জাতিকে রক্ষা করতে হবে।

/এসএস

মন্তব্য করুন