
বর্তমান বিশ্ব ব্যবস্থা ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি পাল্টে গেছে এবং পাশ্চাত্যের নেতৃবৃন্দ স্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন যে বিশ্বের ওপর পাশ্চাত্যের আধিপত্যের যুগ শেষ হয়ে আসছে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাকরন গত মঙ্গলবার এলিজা প্রাসাদে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সমাবেশে স্বীকার করেছেন বিশ্বের ওপর পাশ্চাত্যের মোড়লিপনা বা আধিপত্যের যুগ শেষ হয়ে আসছে।
তিনি বলেছেন, অতীতে বহু ক্ষেত্রে পাশ্চাত্যের ভুলক্রুটির কারণেই এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া, সম্প্রতি ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত “বিশ্বের বর্তমান চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা এবং ফ্রান্স ও ইউরোপের দায়িত্ব” শীর্ষক সম্মেলনে ফরাসি প্রেসিডেন্ট বলেছেন, সবাই দেখছে বিশ্বে নতুন শক্তির আবির্ভাব ঘটছে যাদের সম্পর্কে বহু বছর আমরা উদাসীন থেকেছিলাম এবং বর্তমান পরিবর্তিত বিশ্ব পরিস্থিতি নিঃসন্দেহে বিশ্বের রাজনৈতিক কাঠামোর ওপরও প্রভাব ফেলছে।
আমেরিকা তার নেতৃত্বে এক মেরুকেন্দ্রীক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার চেষ্টা করলেও বাস্তবতা হচ্ছে, বিশ্বে নতুন নতুন অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সামরিক শক্তির আবির্ভাব ঘটেছে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন পাশ্চাত্য বিশ্বের সামনে এখন প্রধান চ্যালেঞ্জ হচ্ছে চীন ও রাশিয়া। আমেরিকার পর চীন বর্তমানে দ্বিতীয় অর্থনৈতিক শক্তিশালী দেশ। ধারণা করা হচ্ছে, আগামী ২০৩০ সাল নাগাদ চীন অর্থনীতিতে আমেরিকাকে ছাড়িয়ে প্রথম স্থান দখল করবে। চীনের এই অবস্থান আমেরিকার জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
অন্যদিকে, রাশিয়াও আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক অঙ্গনে নিজেকে শক্তিশালী অবস্থানে দাঁড় করিয়েছে। বর্তমানে আমেরিকার রাজনৈতিক ও সামরিক প্রতিদ্বন্দ্বী কেবল ইউরোপই নয় একইসঙ্গে পশ্চিম এশিয়া ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোও আমেরিকার জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমেরিকা বিশ্বে নিজের একক আধিপত্য প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্টা চালালেও ব্রিক্স ও সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার মতো আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংস্থাগুলো জি-সেভেনের মতো পাশ্চাত্যের সংস্থাগুলোর জন্য চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আমেরিকা একমেরু কেন্দ্রীক ব্যবস্থা চালুর মাধ্যমে বিশ্বে পুলিশি ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে এবং জাতিগুলোর ওপর নিজের স্বেচ্ছাচারী নীতি চাপিয়ে দিচ্ছে। তবে আমেরিকা প্রতি পদে পদে বাধার সম্মুখীন হচ্ছে এবং আগের সেই দিন নেই। এ অবস্থায় ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের বক্তব্য যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
আই.এ/পাবলিক ভয়েস

