কাশ্মীরিদের অধিকার কেড়ে নিয়ে তাদের অভিনন্দন জানালেন নরেন্দ্র মোদি

প্রকাশিত: ১১:৫৩ অপরাহ্ণ, আগস্ট ৬, ২০১৯

ভারতের সংবিধান থেকে অন্যায়ভাবে ৩৭০ ধারা ও ৩৫-এ আর্টিকেল বাদ দিয়ে কাশ্মীরের জনগণের দীর্ঘদিনের অধিকার হরণ করে সেই কাশ্মীরিদের অভিনন্দন জানালেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি নেতা নরেন্দ্র মোদি।

গতকাল সোমবার রাজ্যসভায় কাশ্মীর নিয়ে ভারতের সংবিধানের ৩৫০ আর্টিকেল বাদ দেওয়ার প্রস্তাব গৃহিত করার পর আজ মঙ্গলবার লোকসভায় সেই বিল পাশ হওয়ার পরই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরিদের অভিনন্দন জানান।

মোদি বলেছেন, ‘আমরা ১৩০ কোটি ভারতবাসী একসঙ্গে স্বপ্ন পূরণ করব। সেইসঙ্গে জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দাদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, ‘এতদিন ধরে যারা শাসন করেছে, তারা শুধুই ব্ল্যাকমেইল করেছে, উন্নতির দিকে নজর দেয়নি কখনও। তাদের হাত থেকে আজ মুক্ত কাশ্মীর। একটা নতুন ভোর, উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ অপেক্ষা করছে।’

মোদি আশ্বাস দিয়ে বলেন, জম্মু-কাশ্মীর এবং লাদাখে এবার আরও উন্নয়ন হবে। সেখানকার যুব সম্প্রদায়ের কাছে অনেক সুযোগ খুলে যাবে। কাশ্মীরে পরিকাঠামোগত উন্নতিও হবে। লাদাখের মানুষকে বিশেষ অভিনন্দন জানিয়েছেন তিনি। কারণ, সেখানকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের দাবি জানিয়ে আসছিলেন।
একাধিক রাজনৈতিক দলের বিরোধিতা উপেক্ষা করে এই বিলকে পাশ করিয়েছেন, সেই প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন মোদী। এর জন্য কাশ্মীরের মানুষ মানুষ গর্বিত হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সব শেষে অভিনন্দন জানিয়েছেন অমিত শাহকেও

প্রসঙ্গত : ভারতের অধিকৃত জম্মু কাশ্মীর রাজ্যকে আলাদা মর্যাদা দিয়ে ভারতের সাংবিধানে যে ৩৭০ ধারা এবং ৩৫-এ আর্টিকেল রয়েছে অন্যায় ভাবে ভারতের বিজেপিশাসিত সরকার তা রদ করে দিয়েছে। যার মাধ্যমে জম্মু কাশ্মীর তার আলাদা রাজ্যের মর্যাদা হারিয়েছে সাথে সাথে জম্মু কাশ্মীরকে ভাগ করে লাদাখ অঞ্চলকে আলাদা রাজ্য এবং শ্রীনগর কাশ্মীরকে আলাদা রাজ্য করে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। অথচ এই ধারার উপর ভিত্তি করেই কাশ্মীর ভারতের অংশ হয়েছিলো।

হিন্দুত্ববাদী সংগঠন বিজেপির প্রধান এবং ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এর নেতৃত্বে গতকাল সোমবার (৫ আগষ্ট) রাজ্যসভায় এই ধারা বাতিলের প্রস্তাব করা হয়। বিরোধি দদলগুলোর চরম বিরোধিতা উপেক্ষা করেও রাজ্যসভায় এ বিলটি পাশ করিয়ে নেওয়া হয়। রাজ্যসভায় এ বিল পাশ হওয়ার পর সমগ্র ভারতে কঠোর প্রতিবাদ ব্যক্ত করেছে কংগ্রেস, সিপিএমসহ অনেক সংগঠন। কিন্তু সেসব প্রতিবাদ উপেক্ষা করে আজ মঙ্গলবার রাজ্যসভার পর লোকসভাতেও পাশ হয়ে গেল ‘কাশ্মীরিদের অধিকার খর্ব করার বিল’ বা ‘আর্টিকল ৩৭০’ বিল। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ৩৬৬ ভোটে লোকসভায় বিলটি পাশ হয়ে গিয়েছে। এবার শুধু রাষ্ট্রপতির স্বাক্ষরের অপেক্ষা।

এর আগে রাজ্যসভায় তথাকথিত এই ‘কাশ্মীর রি-অর্গানাইজেশন বিল’ পাশ হয় দুই তৃতীয়াংশ ভোটে। তবে এ বিলের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে পাকিস্তান, মালয়েশিয়া, তুরস্ক। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন তারা কাশ্মীরিদের সকল ধরণের সহায়তা দেবে। ইমরান খানকে সকল ধরণের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান এবং মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মাহাথির মোহাম্মদ।

মন্তব্য করুন