তিন তালাক রোধে লোকসভায় বিল পেশ হচ্ছে আজ

প্রকাশিত: ১:৪৯ অপরাহ্ণ, জুলাই ২৫, ২০১৯

ভারতের লোকসভায় আজ বৃহস্পতিবার পfশ হতে যাচ্ছে তিন তালাক বিল। তিন তালাককে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে গণ্য করে এটা রোধে এই বিলটি আনা হচ্ছে। তবে এই বিলটি নিয়ে লোকসভায় বিতর্ক ও আলোচনা হতে পারে। কেননা, প্রথম থেকেই কিছু বিরোধী দ ল এই তিন তালাক বিল নিয়ে বিরোধিতা করে আসছেন। তাদের মতে, গোটা মুসলিম সমাজকে এই বিলের ভুক্তভোগী হতে হবে।

এই নতুন আইনের ফলে যে সমস্ত মুসলিম ব্যক্তিরা তাদের স্ত্রীকে তিনবার ‘তালাক’ উচ্চারণ করে তাৎক্ষণিক তালাক বা বিবাহ বিচ্ছেদে বাধ্য করবেন তাদের তিন বছরের জেল হবে। লোকসভায় এই বিলটি পেশ করা গেলেও, আশঙ্কা করা হচ্ছে যে সংসদের উচ্চকক্ষে এ নিয়ে বিরাট বিরোধিতার সম্মুখীন হতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারকে।

এমনকি আশঙ্কা করা হচ্ছে যে, নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেডও এই বিলের বিরোধিতায় সরব হতে পারে। কংগ্রেসসহ বেশিরভাগ বিরোধী দলই মুসলিম পুরুষদের কারাদণ্ডের বিধানের বিরোধিতায় সরব হয়েছে। বিরোধীরা দাবি করে যে, একটি গার্হস্থ্য ইস্যুতে এমন শাস্তিমূলক বিধান চালু করা যায় না যা মূলত মানুষের প্রবৃত্তিগত এবং তিন তালাক বিলের বর্তমান ধরণে শিকার হতে হবে মুসলিম সমাজকে।

এর আগে ২১ জুন তাৎক্ষণিক তিন তালাক বাতিল করে ফের নতুন করে উদ্যোগ নিতে শুরু করে মোদী সরকার। লোকসভায় তিন তালাক নিষিদ্ধ করতে বিল পাশ হবে। এর আগের সরকারের সময়ে এই বিল পেশ হলেও রাজ্যসভায় পেন্ডিং থাকায় সেই বিল কার্যকর করা সম্ভব হয়নি। ওই বিলে তাৎক্ষণিক তিন তালাক অপরাধ বলে গণ্য করা প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।

অল ইন্ডিয়া মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন দলের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েসি বলেন, তিন তালাক বিল অসংবিধানিক। যদি ওই বিল পাশ হয়, তাহলে মুসলিম মহিলাদের প্রতি অবিচার করা হবে।

তখন বিল পেশ করার পক্ষে ১৮৬টি ভোট পড়ে, বিপক্ষে পড়ে ৭৪টি ভোট। এ দিন আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর সরকার। আসাদউদ্দিন ওয়েসির পাশাপাশি কংগ্রেসের তরফে শশী থারুর বলেন, এই বিল নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের উপর কড়া পদক্ষেপ করা হবে। বিশেষ করে মুসলিম পুরুষদের ওপর। অন্য ধর্মের স্ত্রীদের পরিত্যাগ করেন পুরুষরা।

সার্বিক নিয়ম তৈরি করার দাবি জানান থারুর। পাশাপাশি ওই বিলকে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে পাঠানোর দাবিও তোলেন।হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়েসি এ দিন বলেন, “যদি তিন তালাকের কারণে পুরুষকে গ্রেফতার করা হয়, তাহলে তাঁর স্ত্রী ভরনপোষণ কে করবে?” সরকার করবে কি প্রশ্ন তোলেন তিনি। আসাদউদ্দিনের আরও প্রশ্ন, অন্য সম্প্রদায়ের ক্ষেত্রে এক বছরের জেল, শুধুমাত্র মুসলিম পুরুষদের জন্য ৩ বছরের জেল।

এতে সংবিধানের ১৪ ও ১৫ অনুচ্ছেদ লঙ্ঘন হবে বলে অভিযোগ তোলেন আসাদউদ্দিন। আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ এ দিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দেন,  ‘এখানে আইন তৈরির জন্য জনগণ সাংসদদের নির্বাচিত করেছেন। আইনের ভুলভ্রান্তি আদালতে আলোচনা সাপেক্ষ’ তার যুক্তি, ‘মুসলিম মহিলাদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করাই সরকারের লক্ষ্য। ধর্ম, সম্প্রদায়ের থেকে গুরুত্বপূর্ণ মহিলাদের নিরাপত্তা।’

আইএ/পাবলিক ভয়েস

মন্তব্য করুন